পিঁপড়ে কবিতার প্রশ্নের উত্তর
WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পিঁপড়ে কবিতার প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তরগুলি অনুশীলনের মধ্য দিয়ে তাদের পাঠ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবে।
পিঁপড়ে কবিতার প্রশ্নের উত্তর :
১) কবির চোখে পিঁপড়ের চলা কেমন ?
উঃ কবির চোখে পিঁপড়ের চলা ব্যস্ত মধুর।
২) পিঁপড়ে কী দিয়ে ভুবন ভরিয়ে রাখবে ?
উঃ পিঁপড়ে আলোয় গন্ধে এই ভুবন অর্থাৎ পৃথিবী ভরিয়ে রাখবে।
৩) ‘পিঁপড়ে’ কবিতার কবির নাম লেখো।
উঃ ‘পিঁপড়ে কবিতার কবি অমিয় চক্রবর্তী।
৪) কীসের রেণুর কথা কবিতায় বলা হয়েছে ?
উঃ কবিতায় ধুলোর রেণুর উল্লেখ রয়েছে।
৫) কবির কীসে ভয় ?
উঃ পিঁপড়েদের সরিয়ে দিতে কবি ভয় পান।
৬) ভোরবেলা পিঁপড়েরা কোথায় চলে ?
উঃ ভোরবেলা পিঁপড়ের দল গাছের তলা দিয়ে নীচের গর্তে হেঁটে চলে।
৭) কোথা থেকে পিঁপড়ের ডাক কবি শুনতে পান ?
উঃ কবি সুদূর অতল থেকে পিঁপড়েদের ডাক শুনতে পান।
৮) পৃথিবীর বাসকে ক-দিনের ঘরের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে ?
উঃ পৃথিবীতে বসবাসকে কবি দু-দিনের ঘরের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
৯) “আহা পিঁপড়ে ছোটো পিঁপড়ে ঘুরুক দেখুক থাকুক”— কবি ‘আহা’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন কেন?
উঃ পিঁপড়েরা স্বল্পতম আঘাতেই আহত বা নিহত হয়। কবি এই দুর্বল প্রাণের মধ্যেও জীবনের স্পন্দন খুঁজে পেয়েছেন। তাদের ব্যস্ত গতি কবির চোখে মধুর। পিঁপড়ের প্রতি তিনি এক ধরনের মায়া ও মমতাবোধ অনুভব করেছেন। তাই কবিতার বিভিন্ন পঙ্ক্তিতে তিনি ‘আহা’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
১০) “স্তব্ধ শুধু চলায় কথা বলা”— তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উঃ বাইরে থেকে পিঁপড়েদের দেখে নির্বাক মনে হয়। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে যে, তারা ঠিক কীভাবে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে।
কবির মতে, পিঁপড়ের চলার গতির মধ্যে এক ধরনের ছন্দ রয়েছে। প্রত্যেকের হাঁটার ধরন বিভিন্ন | এর মাধ্যমেই তারা নিজেদের মধ্যে ভাবের আদান-প্রদান করে, একে অন্যের অগ্রবর্তী হয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ বুঝে নিতে পারে।
১১) কবির কী দেখে ‘কেমন যেন চেনা লাগে’ মনে হয়েছে ?
উঃ পিঁপড়ের দলের সারিবদ্ধভাবে চলা দেখে কবির ‘কেমন যেন চেনা লাগে’।
১২) “কেমন যেন চেনা লাগে”—কথাটির অর্থ বুঝিয়ে দাও।
উঃ পিঁপড়ের চলার মধ্যে এক ধরনের ছন্দ রয়েছে। তার ব্যস্তসমস্তভাবে হেঁটে যাওয়ার ভঙ্গিটি কবিকে পরিচিত কোনো একজনের হাঁটবার ছন্দের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে, অথচ তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না সেই পরিচিত মানুষটি আসলে কে। তাই কবি উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।
১৩) কবি কাউকে দুঃখ দিতে চাননি কেন ?
উঃ কবি পিঁপড়েদের সংবেদনশীলতার সঙ্গে লক্ষ করেছেন। তাদের মধ্যে তিনি নরম জীবনের স্পর্শ খুঁজে পেয়েছেন। আর এই কারণেই তিনি তাদের কাউকেই দুঃখ দিতে চাননি।
১৪) “সেই অতলে ডাকুক”- কে কাকে এই ডাক দেয় ?
উঃ পিঁপড়ে কবিকে এই ডাক দেয়।
১৫) কবি আজ প্রাণের কোন্ পরিচয় পেয়েছেন ?
উঃ কবি আজ গতিময় প্রাণের পরিচয় পেয়েছেন।
১৬) ‘দু-দিনের ঘর’ বলতে কী বোঝ ?
উঃ ‘দু-দিনের ঘর’ বলতে পৃথিবীতে বসবাস করাকে বোঝানো হয়েছে। এখানে আমরা চিরতরে বেঁচে থাকি না। একদিন না একদিন পৃথিবী ছেড়ে সকলকেই চলে যেতে হয়। খুব অল্প সময়ের জন্যই আমাদের বেঁচে থাকা। এই সত্যটি বোঝাতেই কবি ‘দু-দিনের ঘর’ কথাটি ব্যবহার করেছেন।
১৭) পিঁপড়ের ভাষাহীন চলাচলের মধ্যে বিনিময়ের ভঙ্গিটি কেমন ?
উঃ পিঁপড়েদের হাঁটাচলায় ব্যস্ততার ভাব ফুটে ওঠে। তারা নিজেরা নির্বাকভাবে চলে, কিন্তু তাদের ছন্দোময় হাঁটায় কথা ফুটে ওঠে। আর এভাবেই সারি সারি পিঁপড়ে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা সেরে নেয়। এটাই তাদের ভাববিনিময়ের কৌশল বা পদ্ধতি।
১৮) “মাটির বুকে যারাই আছি এই দু-দিনের ঘরে”- এই ‘দু-দিনের ঘরে’ বলতে কী বোঝ ? কে সবাইকে কীভাবে ‘এই দু-দিনের ঘরে’ আদরে ঘিরে রাখে ?
উঃ ‘দু-দিনের ঘর’ বলতে এই পৃথিবীতে আমাদের বসবাসকে বোঝানো হয়েছে।
পিঁপড়েদের গতিবিধি, তাদের চলার ভঙ্গির মধ্যে কবি খুঁজে পেয়েছেন পেলব প্রাণের স্পন্দন। আলো আর ধুলোর স্পর্শ গায়ে মেখে তারা ‘ভুবন’-কে ভরিয়ে রাখে। তাদের চলা মধুর। তাতে ফুটে ওঠে কথা। আর একসময় মাটির গভীরে, কোন্ এক অতল প্রদেশে তারা চলে যায়।
এই ধরিত্রীর সঙ্গে পিঁপড়েদের অচ্ছেদ্য, নিবিড় যোগ। আর এই সম্পর্কের কারণেই পিঁপড়ে যেন সকলকে আদর দিয়ে ঘিরে রাখে।
১৯) এই কবিতায় কবির কীরূপ মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে তা বুঝিয়ে দাও।
উঃ আলোচ্য ‘পিঁপড়ে’ কবিতায় কবি ‘অমিয় চক্রবর্তী’-র সংবেদনশীল মানসিকতা প্রকাশ পেয়েছে। পিঁপড়েদের প্রাণশক্তি ক্ষীণ। কবি সেটা জেনেই বলেছেন— ‘আহা পিঁপড়ে ছোটো পিঁপড়ে ঘুরুক দেখুক থাকুক…।’
তিনি তাদের দূরে সরিয়ে দিতে চান না, চান না কাউকে দুঃখ দিতে। কবি শুধু চুপচাপ তাদের চলার ভঙ্গিমা দেখে যেতে চান। পিঁপড়েরা এতটাই ছোটো যে তাদের গতিবিধি সহজে আমাদের নজরে আসে না। কবি তাই নিপুণভাবে পিঁপড়ের চলার ভঙ্গি লক্ষ করেছেন। এমনকি তাদের সূক্ষ্ম অনুভূতিটুকুও নিজে উপলব্ধি করতে চেয়েছেন।