তেলেনাপোতা আবিষ্কার – প্রেমেন্দ্র মিত্র । একাদশ শ্রেণি দ্বিতীয় সেমিস্টার
একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষার প্রস্তুতির লক্ষ্যে WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে তেলেনাপোতা আবিষ্কার – প্রেমেন্দ্র মিত্র । একাদশ শ্রেণি দ্বিতীয় সেমিস্টার প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। এই প্রশ্নের উত্তরগুলি সমাধান করলে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষার চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।
তেলেনাপোতা আবিষ্কার – প্রেমেন্দ্র মিত্র । একাদশ শ্রেণি দ্বিতীয় সেমিস্টার :
১) যে ঘরে গল্পের চরিত্রেরা রাতের জন্য আশ্রয় নেয় সেই ঘরটির বর্ণনা দাও।
উৎসঃ
১৯৪৬ খ্রিঃ প্রকাশিত, “প্রেমেন্দ্র মিত্র” রচিত “কুড়িয়ে ছড়িয়ে” গল্পগ্রন্থের অন্তর্গত “তেলেনাপোতা আবিষ্কার” ছোটগল্পটি আমাদের পাঠ্যরূপে গৃহীত হয়েছে।
ঘরের বর্ণনাঃ
কথক ও তার দুই সঙ্গী মহানগর থেকে প্রায় ত্রিশ মাইল দূরে তেলেনাপোতা নামে এক গ্রামে যান। এক সুবিশাল ভগ্নপ্রায় প্রাসাদের একটি জীর্ণ পোড়ো অপেক্ষাকৃত বাসযোগ্য ঘরে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
সেই সুবিশাল প্রাসাদটির ছাদ ছিল ভাঙা, তার দেওয়ালগুলিও প্রায় ধসে পড়েছিল। আর তার “চক্ষুহীন কোটরের মতো পাল্লাহীন জানালা নিয়ে নবোদিত চাঁদের বিরুদ্ধে দুর্গ-প্রাকারের মতো দাঁড়িয়ে আছে।”
গোরুর গাড়ির গাড়োয়ান তাদের সেই জীর্ণ অট্টালিকায় পৌঁছে দিয়ে তাদের জন্য একটি ভাঙা লন্ঠন ও এক কলশি জলের ব্যবস্থা করে দিয়ে চলে যায়। ঘরের শোচনীয় অবস্থা দেখে তারা সহজেই অনুমান করতে পারেন যে, দীর্ঘদিন তা কোন মানুষের বসবাসের জন্য ব্যবহৃত হয় নি- “ঘরে ঢুকে বুঝতে পারবেন বহু যুগ পরে মনুষ্যজাতির প্রতিনিধি হিসাবে আপনারাই সেখানে প্রথম পদার্পণ করছেন।”
ঘরের ভ্যাপসা গন্ধ ও চামচিকাদের ঔদ্ধত্য তাদের বিড়ম্বনার কারণ হয়ে ওঠে। রাত যত গভীর হতে শুরু করে ততোই ম্যালেরিয়ার বাহক অ্যানোফিলিস মশারা তাদের সুতীব্র আক্রমণ শুরু করে দেয়। কথকের পানরসিক ও নিদ্রাবিলাসী দুই বন্ধু সমস্ত প্রতিকূলতার মাঝেও নির্বিঘ্নে ঘুমিয়ে পড়লে ঘুমহীন কথক এককী সেই অট্টালিকার ছাদে ওঠার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
ছাদের সিঁড়ি ভগ্নপ্রায়, যে কোন সময় তার ইট বা টালি খসে পড়তে পারে। ছাদে গিয়ে কথক লক্ষ্য করেন- “অধিকাংশ জায়গাতে অলিসা ভেঙ্গে ধুলিসাৎ হয়েছে।” আর সমস্ত ফাটলে গাছের শিকড় তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে।
এইরূপে গল্প কথকের বর্ণনায় আমরা তাদের তেলেনাপোতায় রাত্রিবাসের জীর্ণ ঘরের পরিচয় প্রাপ্ত হই।
LINK TO VIEW PDF
২) প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পটি আসলে আত্ম-আবিষ্কারের গল্প – বিষয়বস্তুর নিরিখে মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো। ৫
উৎসঃ
১৯৪৬ খ্রিঃ প্রকাশিত, “প্রেমেন্দ্র মিত্র” রচিত “কুড়িয়ে ছড়িয়ে” গল্পগ্রন্থের অন্তর্গত “তেলেনাপোতা আবিষ্কার” ছোটগল্পটি আমাদের পাঠ্যরূপে গৃহীত হয়েছে।
মন্তব্যের ব্যাখ্যাঃ
পাঠ্য গল্পটি বিষয় নির্বাচনে এবং বর্ণনা ভঙ্গির অভিনবত্বে নিঃসন্দেহে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছোটোগল্প। নগর সভ্যতার কাছাকাছি এক বিস্মৃতপ্রায় কাল্পনিক জনপদ আবিষ্কারের মায়াচ্ছন্ন পরিবেশ রচনা করে গল্পকার পাঠককেই নিজের মনের আয়নার সামনে বসিয়ে দিয়েছেন। এ গল্পে নায়ক চরিত্রটি নামহীন। গল্পটি মধ্যম পুরুষে রচিত হওয়ায় পাঠক স্বয়ং এ গল্পে নায়কের আসনে অধিষ্ঠিত। গল্প জুড়ে নায়কের উপস্থিতি ও বিচিত্র ভাবান্তর মধ্যবিত্ত কল্পনাবিলাসী মানুষের অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়তা, করুণা ও সহমর্মিতা এবং সবশেষে দ্বিধাগ্রস্ত, পলায়নী মনোবৃত্তির নিখুঁত প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।
তিনদিনের ছুটিতে শুধুমাত্র মাছ ধরার বাসনায় কলকাতা থেকে ত্রিশ মাইল দূরের এক জনবিরল গ্রামে যাওয়ার অভিজ্ঞতায় পাঠক শিহরিত, অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় সে নিজেই যেন পৌঁছে যায় সেখানে। তারপর মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধাকে নিয়ে তার একমাত্র কন্যা যামিনীর বেঁচে থাকার লড়াইয়ের প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে পাঠকের হৃদয় বেদনার্দ্র হয়ে ওঠে। পরিবেশ ও পরিস্থিতির মিশ্র প্রভাবে আবেগাপ্লুত নায়কের মতোই পাঠকও যামিনীর জন্য মানবিক কিছু করার প্রেরণা পায়।
কিন্তু এরপরেই কল্পনাবিলাসিতার সঙ্গে বাস্তব রূঢ়তার দুস্তর ব্যবধান প্রকট হয়ে ওঠে। নিজের ভদ্রাসনে ফিরে এসে কথকের সেই ক্ষণিক আবেগ বা স্বপ্ন মোহময়তা মুছে যায় অচিরেই। মহানগরে ফিরে আসার পর কিছুদিন ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত থেকে সুস্থ হয়ে উঠলে তেলেনাপোতার স্মৃতি তার কাছে একটা ঝাপসা স্বপ্ন বলে মনে হয়। এই অস্পষ্টতা মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনের দ্বিধাগ্রস্ত মোহাচ্ছন্নতা ও পলায়নী মনোবৃত্তিরই প্রকাশ। তার এই খন্ডিত জীবনবোধ দেশকাল নিরপেক্ষ-এমনটাই ঘটেছিল কখনও কোথাও কোনো-এক অতীতে, এমনটাই ঘটবে অন্য কোনো ভবিষ্যতে।
আর এভাবেই সমগ্র গল্পটি আত্ম-আবিষ্কারের অনবদ্য এক লেখচিত্র হয়ে ওঠে।
LINK TO VIEW PDF
PDF DOWNLOAD LINK ONLY FOR SUBSCRIBERS
৩) নায়ক ও তাঁর দুই সঙ্গীর গোরুর গাড়িতে করে যাওয়ার অভিনব অভিজ্ঞতার বর্ণনা দাও। ৫
৪) “কে, নিরঞ্জন এলি?”- নিরঞ্জন কে? কোন পরিস্থিতিতে গল্পকথক নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন? ২+৩=৫
৫) “আপনার আসল উদ্দেশ্য আপনি নিশ্চয় বিস্মৃত হবেন না”- আসল উদ্দেশ্যটি কী ছিল? সেই উদ্দেশ্য সাধনে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কী করলেন? ২+৩=৫
৬) “আমি তোমায় কথা দিচ্ছি মাসিমা”- কে কাকে কোন প্রসঙ্গে কী কথা দিয়েছিল নিজের ভাষায় লেখো। ২+৩=৫
৭) “মনে হবে তেলেনাপোতা বলে কোথায় কিছু সত্যি নেই”- কার মনে হবে? এই মনে হওয়ার কারণ কী? ২+৩=৫
৮) ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্প অবলম্বনে এই গল্পের গল্পকথকের চরিত্র বিশ্লেষণ করো। ৫