এক ভুতুড়ে কান্ড গল্পের প্রশ্নের উত্তর । ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা
WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এক ভুতুড়ে কান্ড গল্পের প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তরগুলি অনুশীলনের মধ্য দিয়ে তাদের পাঠ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবে।
এক ভুতুড়ে কান্ড গল্পের প্রশ্নের উত্তর । ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা :
১) ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ রচনাংশে লেখক কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছিলেন ?
উঃ ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ রচনাংশে লেখক রাঁচি থেকে হুডু যাচ্ছিলেন।
২) ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গল্প অনুযায়ী রাঁচি থেকে হুজুর দূরত্ব মোটামুটি কত মাইল ?
উঃ ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গল্প অনুযায়ী রাঁচি থেকে হুজুর দূরত্ব মোটামুটি বারো মাইল।
৩) ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গদ্যাংশ অনুসারে কে লেখককে কখনও দেখা দেননি ?
উঃ ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গদ্যাংশ অনুসারে ভূত লেখককে কখনও দেখা দেননি।
৪) লেখকের মতে তাঁর ‘হার্ট’ কীরূপ ?
উঃ লেখকের মতে তাঁর ‘হার্ট’ ‘উইক’ বা দুর্বল।
৫) লেখকের মতে, যেখানে সন্ধে হয় সেখানে আর কী ঘটে ?
উঃ লেখকের মতে, যেখানে সন্ধে হয় সেখানে সাইকেলের টায়ার ফাঁসে।
৬) ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গল্পে কোন কালের কথা বলা হয়েছে ?
উঃ ‘এক ভূতুড়ে কাণ্ড’ গল্পে শীতকালের কথা বলা হয়েছে।
৭) লেখকের মতে, কার দৃষ্টিভঙ্গি উদার হতে পারে না ?
উঃ লেখকের মতে, বাঘের দৃষ্টিভঙ্গি ‘উদার’ হতে পারে না।
৮) গল্পে কোন কোম্পানির মোটরগাড়ির উল্লেখ রয়েছে ?
উঃ গল্পে অস্টিন কোম্পানির মোটরগাড়ির উল্লেখ রয়েছে।
৯) “এই একই প্রশ্ন প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে পুনঃপুনঃ আমার মানসপটে উদিত হয়েছে।”- কথকের মনে কোন প্রশ্ন কেন বারবার জেগেছিল ?
উঃ গল্পের কথক রাঁচি থেকে হুজুর পথে সাইকেলে চড়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝরাস্তায় তাঁর সাইকেল খারাপ হয়ে যায়। তিনি বুঝতে পারেন না সাইকেল ফেলে তিনি হাঁটা দেবেন, নাকি অপেক্ষা করবেন নাকি রাঁচি ফিরে যাবেন। শেষপর্যন্ত কি এই দীর্ঘ পথ তাঁকে হেঁটেই যেতে হবে- এই প্রশ্নই তখন কথকের মনে বারবার জেগেছিল।
১০) “আমার টর্চ বাতিটা জ্বালিয়ে নিয়ে প্রাণপণে ঘোরাতে লাগলাম।”- কথকের এই কাজের পরিণাম কী হয়েছিল ?
উঃ শীতের রাতের কুয়াশা এবং চাঁদের আলো ফিকে হয়ে আসা সত্ত্বেও কথকের টর্চের আলো একটি লরির ড্রাইভার দেখতে পেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি কথককে সাহায্যদানের বদলে লরি না থামিয়ে মুহূর্তের মধ্যে পথের বাঁকে দূরে অদৃশ্য হয়ে যান। কথকের প্রচেষ্টা এভাবে ব্যর্থ হয়।
১১) “সাইকেল ঘাড়ে করে যেতে হলেই হয়েছে।”- লেখকের গন্তব্য কোথায় ? সাইকেল ঘাড়ে করে যাওয়ার প্রসঙ্গ এসেছে কেন ?
উঃ লেখকের গন্তব্যস্থল হুডু।
সাইকেল চেপে রাঁচি থেকে হুডু যাওয়ার সময় মাঝরাস্তায় লেখকের সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যায়। সেই অবস্থায় সাইকেল চালানো অসম্ভব। এই কারণেই সাইকেল ঘাড়ে করে যাওয়ার প্রসঙ্গটি এসেছে।
১২) “যেখানে বাঘের ভয় সেইখানেই সন্ধে হয়”- প্রবাদটির মর্মার্থ কী ? একই ভাব বোঝাতে তুমি আরেকটি প্রবাদ উল্লেখ করো।
উঃ উদ্ধৃত প্রবাদটির মর্মার্থ হল- কোনো বিপদ এড়াতে চাইলেও সেই বিপদের সামনে পড়া।
একই ভাব বোঝাতে ব্যবহৃত আরেকটি প্রবাদ হল— ‘একে মা মনসা, তায় ধুনোর গন্ধ’।
১৩) “চিরদিনই আমি আশাবাদী”—এই আশাবাদের গুণে লেখক কীভাবে পুরস্কৃত হলেন ?
উঃ লেখকের সাইকেলের টায়ার ফেঁসে গিয়েছিল বলে তিনি সন্ধেবেলা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। সেই অবস্থায় ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকাটা নিরাপদের নয়। তাই তিনি বিপদ থেকে মুক্তি পেতে যে-কোনো সাহায্যের আশা করছিলেন। কিছুক্ষণ বাদেই একটি বেবি অস্টিন এসে দাঁড়ায় এবং তিনি উঠে বসেন। এভাবেই আশাবাদের গুণে লেখক পুরস্কৃত হন।
১৪) গল্প অনুসরণে সেই নির্জন বনপথে লেখকের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।
উঃ ছুডু যাবেন বলে গল্পের কথক একদিন সাইকেল চেপে বের হন। মাঝরাস্তায় তাঁর সাইকেলের টায়ার ফেঁসে যায়। বাকিটা পথ তিনি কীভাবে যাবেন তারই চিন্তা করতে আমি থাকেন। এমন সময় একটি ছোটো গাড়ি তার সামনে এসে পাড়ায় কথক এই অপ্রত্যাশিত সাহায্য লাভ করে গাড়িতে চড়ে বসলেও বুঝতে পারেন ড্রাইভারের জায়গা একেবারে ফাঁকা— সেখানে কেউ বসে নেই। সেই মুহূর্তে চলন্ত গাড়ি থেকে নেমে পড়াটাও নিরাপদ ছিল না। তাই তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন।
অবশেষে দু ঘন্টা পথ অতিক্রম করার পর যখন রেললাইন দিয়ে ট্রেন ছুটে আসতে দেখেন তখন কথক উপায় না দেখে গাড়ি থেকে নেমে যান। ট্রেন পেরিয়ে গেলে বুঝতে পারেন গাড়িটি অক্ষতই আছে। শুধু তাই নয়, একজন ভদ্রলোক গাড়ির পেছন থেকে সামনে এসে কথককে বিকল মোটরগাড়িখানা ঠেলতে অনুরোধ করেন।
১৫) “বাঘের দৃষ্টিভঙ্গি ওরকম উদার হতে পারে না।”— কোন উদার দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা হয়েছে ? লেখকের কাছে সেই ‘দৃষ্টিভলি’ কতটা উদারতা নিয়ে এসেছিল, তা বুঝিয়ে দাও।
উঃ গল্পের কথক দুটি হলদে রঙের চোখকে চারপাশের কুয়াশা ভেদ করে আসতে দেখেন। তিনি প্রথমে ভাবেন বাঘ আসছে হয়তো। কিন্তু চিন্তা করে বুঝতে পারেন বাঘের দৃষ্টির মধ্যে এক ধরনের হিংস্রতা রয়েছে, যা হলুদ রঙের আলোর মধ্যে ধরা দেয়নি। পরে তিনি বুঝতে পারেন ও দুটি আসলে মোটরগাড়ির হেডলাইটের আলো
গল্পের কথক মোটরগাড়ি দেখে উঠে পড়েছিলেন বটে, কিন্তু তাঁর যাত্রা সুখের হয়নি। গাড়িতে চড়ামাত্র তিনি দেখেছিলেন ড্রাইভিং সিটে কেউ বসে নেই, গাড়ির ইঞ্জিনও দেখা যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে সেই ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ শেষ পর্যন্ত কোনো উদারতা নয়, বরং একটি ভূতুড়ে অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছিল।
১৬) “এই হয়তো সশরীরে রাঁচি ফেরার শেষ সুযোগ।”- কোন সুযোগের কথা বলা হয়েছে ? লেখক কীভাবে সেই সুযোগটাকে কাজে লাগালেন ?
উঃ কথক দূর থেকে একটি বেবি অস্টিন আসতে দেখেন। তিনি বুঝতে পারেন এই গাড়িতে তাঁকে চড়তেই হবে, নইলে এই জনহীন পথে রাত্রিবেলা যে কোনো সময় বিপদ আসতে পারে। সেই গাড়িতে উঠে রাঁচিতে ফিরে যাওয়ার সুযোগটিকে এখানে ‘শেষ সুযোগ’ বলা হয়েছে।
লেখক মন্থর গতিতে চলা গাড়িটিতে উঠে পড়তে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। হাঁকডাক করবার পরও যখন গাড়িটি দাঁড়ায় না তখন তিনি তার গায়ে গিয়ে পড়েন এবং হ্যান্ডেল খুলে ভেতরে ঢুকে যান। এভাবেই লেখক তাঁর শেষ সুযোগটিকে কাজে লাগান ।
১৭) “বে-ড্রাইভার গাড়ি যেমন চলছিল তেমনি চলতে লাগল”- ‘বে-ড্রাইভার গাড়ি’ চলার প্রকৃত কারণটি কীভাবে গল্পে উন্মোচিত হল ?
উঃ গাড়িতে উঠে বসে লেখক ড্রাইভারকে উদ্দেশ্য করে লালপুরার মোড়ে তাঁকে নামিয়ে দেওয়ার কথা বলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বলতে গিয়ে তাঁর চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চায়, শার্টের কলার যেন আরও পেঁচিয়ে ধরে এবং শরীরে ঘাম দেখা দেয়। কারণ তিনি দেখেন গাড়িটি চালকবিহীনভাবে চলছে এবং তার ইঞ্জিনও নেই। পরে কোনোভাবে গাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে তিনি বুঝতে পারেন গাড়িটি হয়তো একজন কেউ ঠেলছিল। কারণ এক ভদ্রলোক মোটরগাড়ির পেছন থেকে সামনে এগিয়ে এসে গাড়িটি ঠেলবার অনুরোধ জানান। এভাবেই ‘বে-ড্রাইভার গাড়ি’ চলার প্রকৃত কারণটি উন্মোচিত হয়।
১৮) ‘এবারও আমার আলস্যই জয়ী হল শেষটায়’- গল্প অনুসরণে লেখকের উৎকণ্ঠা, আলস্য কর্মতৎপরতার দৃষ্টান্ত দাও ৷
উঃ
লেখকের উৎকণ্ঠাঃ
‘এই ঝাপসা আলো আর কুয়াশার মধ্যে সাইকেল টেনে পাক্কা সাত মাইলের ধাক্কা। —ভাবতেই আমার বুকটা দুর দুর করতে থাকে।’
আলস্যঃ
‘হেঁটে যাওয়ার চেয়ে বসে যাওয়ার আরাম বেশি বিবেচনা করে প্রাণের মায়া ছেড়ে দিয়ে সেই ভূতুড়ে গাড়িকেই আশ্রয় করে রইলাম।’
কর্মতৎপরতাঃ
‘অগত্যা, আগায়মান গাড়ির গায়ে গিয়ে পড়লাম। দরজার হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে ঢুকে পড়লাম ভেতরে | চলন্ত গাড়িতে ওঠা সহজ নয়, নিরাপদও না; কিন্তু কী করব, এক মিনিটও সময় নষ্ট করার ছিল না।”