হাবুর বিপদ গল্পের প্রশ্নের উত্তর । ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা
WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য হাবুর বিপদ গল্পের প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তরগুলি অনুশীলনের মধ্য দিয়ে তাদের পাঠ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবে।
হাবুর বিপদ গল্পের প্রশ্নের উত্তর । ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা :
১) অজেয় রায়ের লেখা একটি জনপ্রিয় বইয়ের নাম লেখো।
উঃ ‘আমাজনের গহনে’ অজেয় রায়ের লেখা একটি জনপ্রিয় বই।
২) তিনি কোন কোন পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন ?
উঃ শুকতারা, সন্দেশ, কিশোর ভারতী ইত্যাদি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন।
৩) প্রফুল্লর রচনা সুধীরবাবুর কেন পছন্দ হয়নি ?
উঃ স্কুলে ভালো ছাত্র প্রফুল্ল ‘দে সরকারের’ রচনা বই দেখে ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনাটি পুরো নকল করেছিল, তাই তার রচনা সুধীরবাবুর পছন্দ হয়নি। তুমি আরো একটু ভালো আশা করেছিলেন।
৪) নিতাই শাস্তি পেল কেন ?
উঃ নিতাই রচনা না লিখে মায়ের অসুস্থতার মিথ্যা অজুহাত দেওয়ায় তাকে শাস্তি পেতে হয়েছিল।
৫) সুধীরবাবু কোন অন্যায়কে ক্ষমা করেন না ?
উঃ ক্লাসে না পড়ে আসার অন্যায়কে সুধীরবাবু ক্ষমা করেন না।
৬) সুধীরবাবুর কপালের ভাঁজ কীসের চিহ্ন ?
উঃ সুধীরবাবুর কপালে ভাঁজ পড়লে বোঝা যায় যে, তিনি সন্তুষ্ট হতে পারেননি।
৭) তিনকড়ি হাঁ করে হাবুর খাতার দিকে তাকিয়েছিল কেন ?
উঃ তিনকড়ি হাবুর পাশে বসে লক্ষ করছিল যে, হাবু সাদা খাতা সামনে ধরে রচনা পড়ে যাচ্ছে। সাদা খাতা দেখে রচনা পড়ার বিষয়ে তিনকড়ি বিস্মিত হয়ে হাবুর খাতার দিকে তাকিয়েছিল।
৮) “ছেলেটা চর্চা রাখলে বড়ো হয়ে নির্ঘাত সাহিত্যিক হবে”—ছেলেটি সম্বন্ধে একথা বলার কারণ কী ?
উঃ হাবু নিজের অভিজ্ঞতা থেকে রচনাটি বলেছিল। সেজন্যই সুধীরবাবু মনে করেছেন হাবুর এই মৌলিক রচনার চর্চা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে সে ভবিষ্যতে অবশ্যই একজন সাহিত্যিক হিসাবে খ্যাতিমান হবে।
৯) “মাঝে মাঝে পাতা উলটিয়ে বলে চলে”- পাতা ওলটানোর কারণ লেখো।
উঃ হাবু রচনা পড়তে পড়তে মাঝে মাঝে পাতা ওলটায়। সে বোঝাতে চায় যে, সে রচনাটি খাতায় লিখেছে। রচনা লেখার কথা গোপন রাখতেই সে পাতা ওলটায়। ক্লাসে দাঁড়িয়ে মুখে মুখে মাস্টারমশাইকে হাবু গল্পটি শুনিয়েছিল। ফলে বাড়ির কাজ না করে এনে ছলনার আশ্রয় নিয়ে সে অবশ্যই মাস্টারমশাইকে ঠকিয়েছিল।
১০) “বেমালুম ঠকাল আমাকে”- হাবুল কি সত্যিই মাস্টারমশাইকে ঠকিয়েছিল ?
উঃ হাবু তার রচনা খাতায় বাড়ির কাজের রচনাটি লিখে আনেনি। সে খাতার দিকে তাকিয়ে লেখা পরার ভঙিতে বানিয়ে বানিয়ে রচনা পাঠ করেছিল। এইরূপে সে তার মাস্টারমশাইকে ঠকিয়েছিল। তবে তার রচনার মৌলিকতা ছিল প্রশংসনীয়।
১১) হাবুলের রচনা শুনে সুধীরবাবুর হাবুলকে কী বলার ইচ্ছে হয়েছিল ? শেষ পর্যন্ত সেই ইচ্ছে তিনি পূরণ হয় না কেন ?
উঃ হাবুলের রচনা শুনে সুধীরবাবু তাকে পিঠ চাপড়ে উৎসাহিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।কিন্তু তিনি তা করতে পারেননি কারণ তাহলে পরবর্তীকালে অনেক ছাত্র বাড়ির কাজ না করে স্কুলে আসবে এবং অনুসরণ করে না লিখে বানিয়ে বলবে। ফলে ক্লাসের শৃঙ্খলারক্ষা করা অসম্ভব হবে। তাই তিনি তার ইচ্ছা পূরণ করলেন না।
১২) স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে হাবুর কী মনে হচ্ছিল ?
উঃ স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে হাবর মনে হচ্ছিল যে, সেদিন স্কুলে না ঢুকে বাড়ি ঘিরে যাবে কিনা।
১৩) তার চোখে স্কুলের ভেতরের কোন ছবি ধরা পড়ে ?
উঃ একতলা স্কুলবাড়ির ঘরে ঘরে ছেলেদের কলরব করা, সকাল ৭টায় স্কুল শুরুর আগে কিছু ছেলে তখনও খেলা করা এবং বাংলা শিক্ষক সুধীরবাবুর ভারিক্কি চেহারার ছবি ফুটে উঠছে।
১৪) হাবু শেষের দিকের বেঞ্চে বসতে চায় না কেন ? সে শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে বসে ?
উঃ হাবু শেষের দিকের বেঞ্চে বসতে চায় নাকারণ শেষের দিকের বেঞ্চে বসা ছাত্রদের প্রতি মাস্টারমশাইরা কড়া নজর রাখেন। সেজন্য হাবু শেষের দিকের বেঞ্চে বসতে চায় না।
সে শেষ পর্যন্ত থার্ড বেঞ্চে তিনকড়ির পাশে গিয়ে বসে।
১৫) “এইটাই সুধীরবাবুর মেথড”- সুধীরবাবুর মেথডটি কী ? তার এমন মেথড অবলম্বন করার যুক্তিটি কী ?
উঃ ক্লাসের ছেলেদের রচনা লিখতে দিলে সুধীরবাবুর বেছে বেছে কিছু ছেলেকে লেখা রচনাটি পড়তে বলে। এটাই হল সুধীরবাবুর পড়ানোর মেথড ।
কারণ ,অন্যেরা তখন মন দিয়ে রচনা পড়া শোনে। যেহেতু অন্যদের লেখা সকলে পড়তে পারে না সেজন্য ক্লাসে কতকগুলি রচনা পড়া শেষ হলে লেখার মান সম্বন্ধে ছাত্রদের একটা ধারণা জন্মাবে এবং ভালো লেখার জন্য তাদের আগ্রহ সৃষ্টি হবে।
১৬) রচনা পড়ার সময় প্রফুল্লকে সুধীরবাবু থামিয়ে দিলেন কেন ? তাকে তিনি কোন্ পরামর্শ দিলেন ?
উঃ রচনা পড়ার সময় প্রফুল্লকে সুধীরবাবু থামিয়ে দিলেন; কারণ প্রফুল্ল তার লেখা রচনাটি ‘দে সরকারের’ বই থেকে হুবহু নকল করে এনেছিল।
সুধীরবাবু প্রফুল্লকে কেবলমাত্র একটা বই অনুসরণ না করে আরও কয়েকটি বই অনুসরণ করে নিজে লেখার চেষ্টা করার পরামর্শ দিলেন।
১৭) ‘সুধীরবাবুর একটি মুদ্রাদোষ’- কী সেই ‘মুদ্রাদোষ’ ? কখনই বা এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ?
উঃ সুধীরবাবুর কথার শেষে ‘মনে থাকবে’ শব্দবন্ধটি বলা সুধীরবাবুর মুদ্রাদোষ। মনে থাক বা না থাক, তিনি সবাইকেই একথা বলে থাকেন।
নিতাই সেদিন ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চে বসেছিল। সে রচনা লিখে আনেনি। অজুহাত হিসাবে সে মায়ের অসুস্থতার কথা মিথ্যা করে জানিয়েছিল। কিন্তু নিতাই ধরা পড়ে যায়, তার মিথ্যা কথা বলার জন্য। সুধীরবাবু তাকে পরদিন রচনা লিখে আনার নির্দেশ দেন। ভুলে গেলে তার কঠোর শাস্তির কথা জানিয়ে তিনি ‘মনে থাকবে’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছিলেন।
১৮) “তবেই রচনার প্রকৃত সাহিত্যিক মূল্য আসবে”- সুধীরবাবুর মতে কীভাবে একটি রচনা সাহিত্যিক মূল্যে অনন্য হয়ে ওঠে ?
উঃ ক্লাসের ফার্স্ট বয় প্রশান্ত তার ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনাটি বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে লিখলেও সুধীরবাবুর মনে হয় ঠিকমতো বুঝে লেখা হয়নি। কারণ হিসাবে তিনি তার লেখায় মৌলিকত্বের অভাব লক্ষ্য করেছেন। সুধীরবাবুর মতে একটি রচনা কেবলমাত্র রচনা বই এর উপর নির্ভর করে লিখলে তাতে মৌলিকতা থাকে না। অনেকগুলো বই পড়ে বুঝে নিয়ে নিজে লিখলে একটি রচনা সাহিত্যিক মূল্যে অনন্য হয়ে ওঠে।
১৯) “শুনছিস্? স্রেফ আবোল তাবোল।”- হাবু ওরফে হাবুলচন্দ্রের রচনা পড়াকে প্রশান্তর ‘আবোল তাবোল’ মনে হয়েছে কেন ? তুমি কী এর সঙ্গে একমত ?
উঃ হাবুলচন্দ্র সেদিন ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনা খাতায় লিখে আনেনি। সুধীরবাবু তাকে রচনা পড়তে বলায় যে কোনো কিছু না ভেবে নিজের অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে সহজ সরল ভাষায় তার কথা বলে। হাবুর বলার মধ্যে ভাষার বাঁধুনি না থাকায় হাবুর রচনাকে প্রশান্ত আবোল তাবোল বলেছে।
না, আমি প্রশান্তর সঙ্গে একমত নই। রচনার তথ্য বই থেকে জোগাড় করলেও রচনার গুণগত মান লেখকের নিজস্বতা এবং মৌলিকতার উপর সর্বদা নির্ভরশীল।
২০) “তার কাছে রহস্য পরিষ্কার হয়ে গেল”- কোন্ রহস্যের কথা বলা হয়েছে ? কীভাবে তার জট ছাড়ল ?
উঃ ক্লাসে সকলের রচনা পড়ার পর সুধীরবাবুর নির্দেশে মনিটার হরিপদ সকলের থেকে খাতা জমা নিতে যায়। হাবু খাতা জমা দিতে চায় না। হাবুর অনিচ্ছার কথা জেনে সুধীরবাবু হাবুর খাতা নিয়ে দেখেন সে রচনা লেখেনি এবং সজন্যই সে খাতা জমা দিতে চায়নি। এটাই ছিল তার খাতা না জমা দেবার রহস্য।
সেই রহস্যের জাল ছাড়াতে গিয়ে সুধীরবাবু দেখলেন হাবুর বীজগণিতের খাতায় কোনো রচনা লেখা নেই। তিনি এ ২০ বছরের অভিজ্ঞতায় এ জাতীয় অভিজ্ঞতার মুখোমুখি ইতিপূর্বে কোনোদিন হননি। তিনি বুঝতে পারলেন যে,যে রচনা বলেছে তা সে লেখেনি, বানিয়ে বানিয়ে বলেছে।