শব্দের গঠন ও শ্রেণিবিভাগ প্রশ্ন উত্তর । ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে শব্দের গঠন ও শ্রেণিবিভাগ প্রশ্ন উত্তর । ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ আলোচনা ও অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই সন্ধি বিষয়ের আলোচনাগুলি অনুশীলনের মধ্য দিয়ে তাদের ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ চর্চা করতে পারবে।
শব্দের গঠন ও শ্রেণিবিভাগ প্রশ্ন উত্তর :
শব্দঃ
‘শব্দ’ কতকগুলি বর্ণের সমাহার। প্রতিনিয়ত আমাদের বাহ্য ধ্বনি সৃষ্টি করে। যেমন—বাড়ি, ঘর, ইত্যাদি।শব্দের সঙ্গে প্রত্যয় ও বিভক্তি যোগ করা হয়। শব্দের সঙ্গে এক বা একাধিক প্রতায় যোগ করে নতুন নতন অর্থেরও বিস্তার ঘটে।
শব্দ কাকে বলে?
অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টিকে বলা হয় শব্দ।
যেমন- মা, বাবা,বই,খাতা ইত্যাদি।
মনের ভাব প্রকাশ করার মাধ্যম এই শব্দকেই বাক্যে ব্যবহার করা হয়। তবে শব্দকে বাক্যে ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজন অনুসারে সামান্য তৈরি করে নিতে হয়, অর্থাৎ বিভক্তি যুক্ত করতে হয়। তখন বিভক্তি যুক্ত শব্দকে বলা হয় পদ। এখন এই পর্বে আমরা প্রথমে শব্দ সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হলো।
শব্দের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?
ক) শব্দ হল ভাষা সৃষ্টির মূলকথা।
খ) অর্থ ছাড়া শব্দ সম্ভব নয়।
গ) একাধিক ধ্বনির মিলিত রূপ গঠন করে।
ঘ) একটিমাত্র ধ্বনিই শব্দ নয়।
ঙ) যে-কোনো ধ্বনিই শব্দ নয়।
চ) ধ্বনির লিখিত রূপ বর্ণ,বর্ণ দিয়ে শব্দ লেখা হয়।
শব্দের শ্রেণিবিভাগঃ
গঠনগতভাবে শব্দ দু-প্রকার-
ক) মৌলিক শব্দ
খ) সাধিত শব্দ।
মৌলিক শব্দঃ
যে-সমস্ত শব্দকে বিশ্লেষণ করা যায় না তাদেরকেই মৌলিক শব্দ বলে।
যেমন: মা, হাত, নাম, পা, ভাই, ঘোড়া, এক, দুই, না প্রভৃতি।
সাধিত শব্দঃ
যে-সমস্ত শব্দকে বিশ্লেষণ করলে প্রকৃতি এবং সেইসঙ্গে যুক্ত প্রত্যয়, উপসর্গ প্রভৃতি পাওয়া যায়, তাদের সাধিত শব্দ বলে।
যেমন: যা (ধাতু) + আ (প্রত্যয়) = যাওয়া, মিতা (শব্দ) + আলি (প্রত্যয়) = মিতালি।
অর্থগতভাবে শব্দের শ্রেণিবিভাগঃ
ক) যৌগিক শব্দ
খ) রুঢ় শব্দ
গ) যোগরুঢ় শব্দ
ক) যৌগিক শব্দঃ
যে-সমস্ত সাধিত শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ এবং প্রচলিত অর্থের মধ্যে কোনো তফাত নেই, তাদেরকে বলে যৌগিক শব্দ।যেমন:জলজ-ব্যুৎপত্তিগত ও প্রচলিত অর্থ একই অর্থাৎ যা জলে জন্মায়।
খ) রুঢ় শব্দঃ
যে-সমস্ত সাধিত শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থের সঙ্গে প্রচলিত অর্থের তফাত থাকে, তাদেরকে বলে রুঢ় বা রুঢ়ি শব্দ।যেমন:কুশল- যে যজ্ঞের জন্য কুশ আনে(ব্যুৎপত্তিগত অর্থ), প্রচলিত অর্থ—মঙ্গল।
হরিণ-যে হরণ করে (ব্যুৎপত্তিগত অর্থ), প্রচলিত অর্থ-একটি নির্দিষ্ট পশু।
গ) যোগরুঢ় শব্দঃ
যে-সমস্ত সাধিত শব্দের একাধিক ব্যুৎপত্তিগত অর্থ থাকলেও প্রচলিত অর্থে তার মধ্যে কেবল একটিকেই বোঝায়, তাদের যোগরুঢ় শব্দ বলে। যেমন:পঙ্কজ – পাঁকে জন্মায় যা (ব্যুৎপত্তিগত অর্থ), প্রচলিত অর্থ—পদ্ম। জলদ—জল দেয় যা (ব্যুৎপত্তিগত অর্থ), যোগরূঢ় অর্থ বা প্রচলিত অর্থ—মেঘ।
শব্দের গঠন ও শ্রেণিবিভাগ প্রশ্ন উত্তর :
১) দুটি করে অর্থঃ
পড়া— পাঠ করা, পতিত হওয়া
তিল— শস্য, দেহের চিহ্ন
বর্ণ— অক্ষর, রং
বল— শক্তি, খেলার বল
চিনি— মিষ্টি দ্রব্য, পরিচিতি
মুকুর— দর্পণ, বকুল গাছ
জাতি— শ্রেণি, প্রকার
লক্ষ— বহু, শত সহস্র সংখ্যা
বাঁক— মোর, বক্রতা
কাল— সময়, সর্বনাশের কারণ
নর— মানুষ, পুরুষ
২) স্তম্ভ মিলঃ
দাউ দাউ – আগুন
গুম গুম – কিল মারা
শোঁশোঁ – বাতাস বওয়া
ফিস ফিস – কথা বলা
ভন ভন – মাছি
হাউ হাউ – কান্না
খিক খিক – হাসি
থপ থপ – পা ফেলে চলা
কড় কড় – বাজ পড়া
ঝন ঝন – কাচের সার্শি
৩) মৌলিক শব্দ আর যৌগিক শব্দঃ
মৌলিক শব্দ = বই, মাছ, দাদা, ছয়
যৌগিক শব্দ = পন্ডশ্রম, ঝুলন্ত, করি, সফলতা, নীচতম, দেখি, বিদ্যামন্দির
শব্দের গঠন ও শ্রেণিবিভাগ প্রশ্ন উত্তর :
৪) উপযুক্ত সংখ্যাবাচক ও পূরণবাচক শব্দ উল্লেখ করে শূন্যস্থান পূরণঃ
৪.১) ______ সমুদ্র _______ নদী।
উত্তরঃ সাত, তেরো।
৪.২) হাতের ________ আঙুল সমান হয় না।
উত্তরঃ পাঁচটি।
৪.৩) সপ্তাহে ________ দিন।
উত্তরঃ সাত।
৪.৪) শ্রাবণ হলো বছরের _______ মাস।
উত্তরঃ চতুর্থ।
৪.৫) ষষ্ঠ শ্রেণিতে _______ স্থান পেয়েছি।
উত্তরঃ প্রথম
৪.৬) _____ ভাই চম্পা আর ______ বোন পারুল।
উত্তরঃ সাত, এক।
৪.৭) অরুণ, বরুণ, কিরণমালা ______ ভাইবোন।
উত্তরঃ তিন।
৪.৮) _______ শ্রেণির শেষে মাধ্যমিক পরীক্ষা।
উত্তরঃ দশম।
৪.৯) _______ পঞ্চাশের সঙ্গে ______ যোগ করলে হয় পঞ্চাশ।
উত্তরঃ ঊন, এক।
৪.১০) আমার বয়স এখন ______ বছর, ______ শ্রেণীতে পড়ি।
উত্তরঃ বারো, ষষ্ঠ।
৫) নীচের বাক্যগুলিতে কী জাতীয় সংখ্যাবাচক বা পুরণবাচক শব্দ ব্যবহার হয়েছে তা লেখো :
৫.১) বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে প্রেস থেকে দেড়শো বই নিয়ে এসো।
সাড়ে চারটে— ভগ্নাংশিক সংখ্যা শব্দ
দেড়শো বই— ভগ্নাংশিক সংখ্যা শব্দ
৫.২) রজতজয়ন্তী পালন করতে সাত মাথার মোড় থেকে ভোর পৌনে ছটায় প্রভাতফেরী বার হবে।
রজতজয়ন্তী – বিশুদ্ধ সংখ্যা শব্দ
সাত মাথার মোড় – বিশুদ্ধ সংখ্যা শব্দ
পৌনে ছটায় – ভগ্নাংশিক সংখ্যা শব্দ
৫.৩) আড়াই কিলো ময়লায় দুপোয়া ঘি মেখে এক লিটার জল দিয়ে আধ ঘণ্টা রেখে লেচি পাকিয়ে প্রয়োজন মতো দুটো চারটে করে লুচি ভাজুন যাতে জনাচল্লিশ লোক পেটপুরে খেতে পারে।
আড়াই কিলো— ভগ্নাংশিক সংখ্যা শব্দ
দুপোয়া— ভগ্নাংশিক সংখ্যা শব্দ
এক লিটার— বিশুদ্ধ সংখ্যা শব্দ
আধ ঘন্টা— ভগ্নাংশিক সংখ্যা শব্দ
দুটো চারটে— অনির্দেশক সংখ্যা শব্দ
জনাচল্লিশ— অনির্দেশক সংখ্যা শব্দ
৫.৪) পয়লা বৈশাখ থেকে ষাটোর্ধ্ব মানুষেরা বছরে দুবার বিনাখরচে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারবেন।
পয়লা বৈশাখ— পূরণবাচক শব্দ
ষাটোর্ধ্ব— পূরণবাচক শব্দ
দুবার— বিশুদ্ধ সংখ্যা শব্দ
৫.৫) মেজোকাকার পঞ্চাশতম জন্মদিন তেরোই অক্টোবর পালিত হবে।
মেজো কাকা— পূরণবাচক শব্দ
পঞ্চাশতম— পূরণবাচক শব্দ
তেরোই— পূরণবাচক শব্দ
৬) নীচের সংখ্যাশব্দগুলির উপযুক্ত পূরণবাচক রূপ বসাওঃ
৬.১) আমরা (২২) ________ শ্রাবণও রবীন্দ্র স্মরণ করি।
উত্তরঃ বাইশে।
৬.২) ছেলেরা (৪) _______ আষাঢ় অনুষ্ঠানটি করল।
উত্তরঃ চৌঠা।
৬.৩) আমরা নেতাজির (১২৪) _________ তম জন্মদিন পালন করলাম।
উত্তরঃ একশো চব্বিশ।
৬.৪) এবার ছাত্রটি (১১) ________ শ্রেণিতে পড়ছে।
উত্তরঃ একাদশ।
৬.৫) ভাই (১৫) _________ অঙ্কটি পারেনি।
উত্তরঃ পনেরোর।
শব্দের গঠন ও শ্রেণিবিভাগ প্রশ্ন উত্তর :
৭) নির্দেশ অনুসারে উত্তর লেখোঃ
৭.১) সোয়া পাঁচটা বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ পাঁচটা বেজে ১৫ মিনিট বোঝায়।
৭.২) মহাজন শব্দটির অর্থগত শ্রেণি লেখো।
উত্তরঃ মহাজন— এর ব্যুৎপত্তিগত অর্থ যে ব্যক্তি মহান বা মহৎ। কিন্তু এর প্রচলিত অর্থ হয়ে গেছে সুদ ব্যবসায়ী, অর্থাৎ যে টাকা ধার দিয়ে চড়া সুদ নেয়। সুতরাং, তাকে মহান ব্যক্তি নিশ্চয়ই বলা যায় না।
৭.৩) মৃগ– ব্যুৎপত্তিগত অর্থ লেখো।
উত্তরঃ বনের পশু
৭.৪) সামুদ্রিক- গঠনগতভাবে কোন শব্দ ?
উত্তরঃ শব্দের সঙ্গে শব্দাংশ জুড়ে সাধিত শব্দ।
৭.৫) মৌলিক শব্দের আরেক নাম কী ?
উত্তরঃ সিদ্ধ শব্দ।
PDF DOWNLOAD LINK ONLY FOR SUBSCRIBERS
নিম্নের PDF প্রশ্নের উত্তরের LINK -গুলি শুধুমাত্র আমাদের SUBSCRIBERS -দের জন্য। আমাদের ওয়েবসাইটের SUBSCRIPTION নিতে চাইলে যোগাযোগ করুন আমাদের WHAT’S APP no 7001880232 -তে।
১) শব্দের গঠন ও শ্রেণিবিভাগ থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর।
উত্তর দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক/টাচ করতে হবে