মধু আনতে বাঘের মুখে প্রশ্নের উত্তর
WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্য পাতাবাহার বইয়ের অন্তর্ভুক্ত মধু আনতে বাঘের মুখে গল্পের অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো।
১) নির্দেশ অনুসারে উত্তর দাওঃ
ক) শিবশঙ্কর মিত্রের লেখালেখির প্রিয় বিষয় কোনটি ?
উত্তরঃ শিবশঙ্কর মিত্রের লেখালেখির প্রিয় বিষয় ‘সুন্দরবন’।
খ) কোন বইয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ শিশু সাহিত্যের পুরষ্কার পান ?
উত্তরঃ ‘সুন্দরবন’ বইয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ শিশু সাহিত্যের পুরষ্কার পান।
গ) সুন্দরবনকে নিয়ে লেখা তাঁর দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ সুন্দরবনকে নিয়ে লেখা তাঁর দুটি বইয়ের নাম হল ‘বনবিবি’, ‘বিচিত্র এই সুন্দরবন’।
ঘ) সুন্দরবনের যে অংশ পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে, তা কোন দুটি জেলায়, মানচিত্র থেকে খুঁজে বের করো।
উত্তরঃ সুন্দরবনের যে অংশ পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে, তা উত্তর চব্বিশ পরগণা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা এই দুটি জেলায় অবস্থিত।
ঘ) সুন্দরবন অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে যে যে নদী বয়ে গেছে, তাদের নামগুলি লেখো।
উত্তরঃ সুন্দরবন অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে যে যে নদী বয়ে গেছে, তাদের নামগুলি হল বিদ্যাধরী, মাতলা, মাথাভাঙা প্রভৃতি।
ঙ) পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ অঞ্চলটি কোন সমুদ্র-উপকূলে অবস্থিত তা মানচিত্র থেকে খুঁজে বের করো।
উত্তরঃ পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ অঞ্চলটি বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র-উপকূলে অবস্থিত।
চ) ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের বৈশিষ্ট্য শিক্ষকের থেকে জেনে নিয়ে লেখো।
উত্তরঃ
ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো-
১) এই বনাঞ্চলে সর্বদা চিরহরিৎ উদ্ভিদ দেখা যায়।
২) এখানকার বেশিরভাগ উদ্ভিদে শ্বাসমূল ও ঠেসমূল দেখা যায়।
৩) এই বনাঞ্চলের উদ্ভিদদের জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম দেখা যায়।
৪) এখানকার উদ্ভিদের পাতা পুরু তাই তাদের জলধারণ ক্ষমতা বেশি হয়।
৫) এই বনাঞ্চলের উদ্ভিদেরা লবণাক্ত জল সহ্য করে বেঁচে থাকতে পারে।
৬) এখানে শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা দেখা যায়।
৭) ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের উদ্ভিদদের মধ্যে সুন্দরী, খলসি, গেওয়া, কেওড়া, গরান, হোগলা, গোলপাতা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
২) গল্প থেকে তথ্য নিয়ে বাক্যগুলি পূর্ণ করোঃ
সুন্দরবনে মধু কাটতে গিয়েছিল ধনাই, আর্জান আর কফিল। মধু কাটতে তিনজন লোক চাই। তিনজনের কাজ হলো চাক কাটা, মৌমাছি তাড়ানো, এবং ধামা হাতে চাকের নীচে দাঁড়ানো। বাঘ ধনাই কে আক্রমণ করেছিল, কিন্তু সে নিজেই উলটে পড়ল ‘শিষের’ ভিতর। মধুর কলস পড়ল মাথার উপর। বাঘের সারা মুখে নাকে/চোখে মধু ছিটকে পড়ল।
৩) কাজের বর্ণনাঃ
ধনাইঃ চট মুড়ি দিয়ে গাছে উঠে কাস্তে দিয়ে চাক কাটতো।
আর্জানঃ লম্বা কাঁচা বাঁশের মাথায় মশাল জ্বেলে ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়াতো।
কফিলঃ একটা বড়ো ধামা হাতে চাকের নীচে দাঁড়াতো যাতে চাক কাটা শুরু হলে সেগুলি মাটিতে না পড়ে ধামার মধ্যেই পড়ে।
৪) অর্থ লেখোঃ
ধামা = শস্য রাখা বা মাপার জন্য তৈরি বেতের ঝুড়ি
গোঁয়ার্তুমি = একগুয়েমি জেদের ভাব
চট = পাটের সুতো থেকে তৈরি মোটা কাপড়
হাজির = উপস্থিত
ঝিরঝিরে = মৃদু ঝরঝর আওয়াজ
মধু আনতে বাঘের মুখে প্রশ্নের উত্তর : (WBNOTES.IN)
১০) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তরঃ
উত্তরঃ পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনে রয়েছে।
১০.২) সুন্দরবনের খ্যাতি ও সমাদরের দুটি কারণ লেখো।
উত্তরঃ
সুন্দরবনের খ্যাতি ও সমাদরের দুটি কারণ –
১) সুন্দরবনের ঐতিহ্য হল এখানকার বিরল জীববৈচিত্র্য, বিচিত্র গাছগাছালি, নৈসর্গিক দৃশ্যাবলি, নদী-খাঁড়ি-জলপথ এবং রাজকীয় বাংলার বাঘ/ রয়াল বেঙ্গল টাইগার ।
২) এছাড়া প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে ওঠা ও সংক্ষরিত অবস্থায় টিকে থাকা পৃথিবীর একক-বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ও অভয়ারণ্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত হল সুন্দরবন ।
১০.৩) কোন কোন গাছে সাধারণত মৌচাক দেখা যায় ?
উত্তরঃ খলসি, গেওয়া, কেওড়া, গরান ইত্যাদি গাছে সাধারণত মৌচাক দেখা যায়।
১১) ‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো।
উত্তরঃ
ক | খ |
---|---|
মধু | মৌচাক |
নাস্তা | জলখাবার |
কাস্তে | কাটারি |
ডিঙি | ছোটো নৌকা |
শিষে | ছোটো সরু খাদ |
সাঁকো | সেতু |
১২) গল্পের ঘটনাগুলি ক্রমানুসারে সাজিয়ে লেখাঃ
উত্তরঃ
১) পেটপুরে নাস্তা খেয়ে বনে মধু কাটার জন্য তৈরি হল।
২) ডিঙি করে অনেক দূর বনের ভিতর গিয়ে তিনজনে ডাঙায় উঠেছে;
৩) মনের আনন্দে একটার পর একটা মধুর চাক কেটে চলেছে।
৪) আর্জান এক থাবা কাদা তুলে গোল করে পাকিয়ে নিয়ে ছুঁড়ে মারল চাক লক্ষ করে।
৫) কয়েকটা মৌমাছি ওদের দিকে তাড়া করল।
১৩) সংক্ষিপ্ত উত্তর দাওঃ
১) বসন্তকালে সুন্দরবনের দৃশ্যটি কেমন তা নিজের ভাষায় পাঁচটি বাক্যে লেখো।
উত্তরঃ বসন্তকালে সুন্দরবনের দৃশ্যটি থাকে অত্যন্ত মনোরম। এই সময় সুন্দরবনে নানা গাছে নানা ফুল ধরে। গরান গাছে হলদে রঙের ছোটো ছোটো ফুল ধরে। ফুলের গন্ধে, হলুদ রঙে আর মৌমাছির গুঞ্জনে সারা বন মেতে ওঠে। এই সময় ঝিরঝিরে বসন্তের হাওয়াও বইতে থাকে।
২) যদি তুমি কখনও সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যাও, তবে কাকে কাকে সঙ্গে নেবে ? জিনিসপত্রই বা কী কী নিয়ে যাবে ?
উত্তরঃ যদি আমি কখনো সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ করতে যাই তবে আমি আমার বন্ধু রাহুল এবং আমার কাকাবাবুকে সঙ্গে নেব। কারণ আমার কাকাবাবুর সুন্দরবনে যাওয়ার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। সঙ্গে নিতে হবে লাঠি, মশাল, কাস্তে, ধামা, চট, কলসি এবং আগুন জ্বালানোর জিনিস।
৩) ‘বাংলার বাঘ’ নামে কে পরিচিত ?
উত্তরঃ ‘বাংলার বাঘ’ নামে পরিচিত স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।
৪) ‘বাঘাযতীন’ নামে কা পরিচিত ?
উত্তরঃ ‘বাঘাযতীন’ নামে কা পরিচিত বিপ্লবী নেতা যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।
৫) ‘সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ’ – এই বিষয়ে পাঁচটি বাক্য লেখো।
উত্তরঃ সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে গেলে রয়াল বেঙ্গল টাইগার, শিয়াল, সাপ, শূকর, হায়না প্রভৃতি প্রাণীর সম্মুখে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সুন্দরবনের গা ঘেষে বয়ে চলা নদীর মধ্যে কুমিরও থাকে। এখানকার বেশিরভাগ গাছের শ্বাসমূল থাকায় মাটিতে খুব সাবধানে পা ফেলে চলতে হয়। মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করার সময় মৌমাছির হুল ফোটানোর সম্ভাবনা থাকে। এইসব কারণে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ।
৬) ধনাই কীসের মন্ত্র জানে ?
উত্তরঃ লেখক ‘শিবশঙ্কর মিত্র’ -এর লেখা ‘মধু আনতে বাঘের মুখে’ গল্পে ধনাই মৌমাছিকে ভুল পথে চালোনা করার মন্ত্র জানে।
৭) গরান গাছের ফুল দেখতে কেমন ?
উত্তরঃ গরান গাছের ফুল ছোটো ছোটো হলদে রঙের।
৮) ডিঙি করে মধু সংগ্রহ করতে কে কে গিয়েছিল ?
উত্তরঃ লেখক শিবশঙ্কর মিত্রের লেখা ‘মধু আনতে বাঘের মুখে’ গল্পে ডিঙি করে মধু সংগ্রহ করতে গিয়েছিল ধনাই, আর্জান ও কফিল।
৯) টীকাঃ
ট্যাক্ঃ
দুটো ছোটো নদী মিশে যখন একটা ত্রিভুজ খন্ড তৈরি করে, তখন ঐ ত্রিভুজ আকারের জমির মাথাকে ‘ট্যাক’ বলা হয়।
শিষেঃ
বনের মধ্যে যে সরু ছোটো ছোটো খাদ দেখা যায় তাকে শিষে বলে। শিষে সাধারণত তিন চার হাত চওড়া হয়।
১০) মধুর চাক খুঁজে পাওয়ার পন্থাটি কী ?
উত্তরঃ মধুর চাক খুঁজে পাওয়ার পন্থাটি হলো, মৌমাছি ফুল থেকে মধু নিয়ে কোনদিকে ছুটে চলেছে, তা লক্ষ করা এবং তার পিছু পিছু সেদিকে যাওয়া।
১১) কফিল ও আর্জানকে পেছনে ফিরে ডাকার সময় ধনাই কী দেখেছিল ?
উত্তরঃ লেখক শিবশঙ্কর মিত্রের লেখা ‘মধু আনতে বাঘের মুখে’ গল্পে কফিল ও আর্জানকে পেছনে ফিরে ডাকার অবকাশ ধনাই পায়নি। তার আগেই বিকট হুঙ্কারে বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে তার উপর।
১২) বাঘটা শিষের ভিতর পড়ে গেল কীভাবে ?
উত্তরঃ লেখক শিবশঙ্কর মিত্রের লেখা ‘মধু আনতে বাঘের মুখে’ গল্পে বাঘটা ধনাইকে লক্ষ্য করে ঝাঁপ দিলেও, লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়ে সে ধনাইকে ডিঙিয়ে গিয়ে পড়ে তবলা গাছের উপর। গাছটাতে ঠোক্কর লেগে বাঘের মাথায় আঘাত লাগে এবং সে উলটে গিয়ে ধপাস করে পড়ে শিষের ভিতর।
১৩) ধনাই কীভাবে বাঘের হাত থেকে বেঁচে গেল ?
উত্তরঃ লেখক ‘শিবশঙ্কর মিত্র’-এর লেখা ‘মধু আনতে বাঘের মুখে’ গল্পে বাঘটা তবলা গাছে ঠোক্কর খেয়ে মাথায় আঘাত পেয়ে উলটে গিয়ে ধপাস করে পড়ে শিষের ভিতর এবং বাঘের লেজের বাড়িতে ধনাই-এর মাথায় থাকা মধুর কলস ভেঙে পড়ে বাঘের মাথার উপর। বাঘের সারা মুখে নাকে চোখে মধু ছিটকে পড়ে। মুখে মধু পড়তেই বাঘ চোখমুখ কুঁচকে ফ্যোঁৎ ফ্যোঁৎ শব্দ করতে লাগল। এইভাবে ধনাই বাঘের হাত থেকে বেঁচে গেল।