নবম শ্রেণির বাংলা গল্প রচনা
আমাদের WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে নবম শ্রেণির বাংলা গল্প রচনা প্রদান করা হলো। এখানে কিছু গল্প লেখার দৃষ্টান্ত দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এখান থেকে তাদের গল্প লেখার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।
নবম শ্রেণির বাংলা গল্প রচনা :
১) সংকেত-সূত্রঃ একজন ভদ্রলোক কয়েকজন বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করলেন – কিন্তু বন্ধুরা কেউ এলেন না-ভদ্রলোক খুব দুঃখিত হলেন – বন্ধুরা এত অসামাজিক কী করে হলেন – দেখা গেল টেবিলের ড্রয়ারে নামলেখা চিঠিগুলি মজুত – চিঠিগুলি ডাকে দেওয়া হয় নি।
উত্তরঃ
কখন অন্যমনে
সকালে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে সুজয় সুনন্দাকে জিজ্ঞেস করে, আজ বাংলা কত তারিখ বলো তো? এখন আর বাংলা সাল তারিখের হিসেবই থাকে না।
সুনন্দা বলে, আজ পয়লা জ্যৈষ্ঠ।
পয়লা জ্যৈষ্ঠ? প্রায় লাফ দিয়ে ওঠে সুজয়। আর তাহলে মাত্র একমাস। পয়লা আষাঢ় আমাদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী। মনে আছে, আমরা ঠিক করেছিলাম বাংলা তারিখটাকেই আমরা বিয়ের দিন হিসেবে মনে রাখব?
সুনন্দা কিছু না বলে বিস্ময়ের চোখে তাকাল সুজয়ের দিকে। তারপর হেসে বলল, যাক, বহরমপুর কলেজের অঙ্কের অধ্যাপক সুজয় সরকার তাহলে পুরোপুরি ভুলোমন নয়। এবার থেকে আমি জনে জনে জানিয়ে আসব, ‘সুজয়বাবু অঙ্ক ছাড়া আর সব ভুলে যান এটা মিথ্যা কথা। অন্তত বিয়ের তারিখটা ভোলেন না।’
কথা শেষ হতেই সুজয় আর সুনন্দা দুজনেই হেসে উঠল সজোরে। তারপর তারা দুজনে মিলে প্রথম বিবাহবার্ষিকী পালনের পরিকল্পনায় ডুবে যায়। ঠিক হয় তাদের দুজনেরই ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। ছাপানো হবে সুন্দর একটি নিমন্ত্রণপত্র।
সুনন্দা বলে, বিবাহবার্ষিকীতে নিমন্ত্রণপত্র ছাপানো একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে না?
সুজয় বলে, বাড়াবাড়ির আর কী আছে? বরং এতে বন্ধুদের একটু সারপ্রাইজ দেওয়া যাবে।
কয়েকদিন পরেই কলেজ থেকে ফেরার পথে সুজয় ছাপানো কার্ডগুলি নিয়ে এল। চমৎকার কাগজ, চমৎকার ছাপা। আমন্ত্রণের বয়ানটিও বেশ সুন্দর। শুরু হয়েছে ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে’ কথাটি দিয়ে। আগে থেকেই ডাকটিকিট এনে রাখা হয়েছিল। সন্ধ্যাবেলা সুনন্দা একাই সেগুলি খামে বসিয়ে ঠিকানা লেখার কাজটিও সেরে ফেলল। সন্ধ্যাবেলাটা সুজয় তার থিসিসের কাজ নিয়ে বসে বলে আজও সুনন্দা তাকে একাজে হাত লাগাতে দেয় নি। একেবারে কার্ডের বাণ্ডিলটি সুজয়ের টেবিলে রেখে বলল, কালই এগুলো পোস্ট করে দিয়ো। দেখো, ভুলো না যেন। সুজয় লেখার কাগজ থেকে চোখ না তুলেই বলল, না না, ভুলব না, কালকেই পোস্ট করে দেব।
আজ পয়লা আষাঢ়। সন্ধে সাতটার মধ্যেই আসতে বলা হয়েছে সবাইকে। খাবারের আয়োজনও করা হয়েছে প্রচুর। সকাল থেকেই সুজয় আর সুনন্দা বন্ধুসমাগমের কথা ভেবে দারুণ খুশি। সাতটা বাজতে যখন আর বেশি বাকি নেই, তখন তারা দুজনেই গেটের কাছে এসে দাঁড়ায়। এইবার তো একটি দুটি করে আসতে শুরু করবে। সুজয় সুনন্দাকে বলে, তুমি তো অনির্বাণকে দেখো নি। আমাদের বিয়ের সময় ও জার্মানিতে ছিল। আজকে নিশ্চয়ই আসছে। ও যা হইচই করতে ভালোবাসে না। দেখবে, একাই মাতিয়ে দেবে।
সুনন্দা বলে, আমার বন্ধু কেতকীও কম যায় না। দেখেছ তো, বিয়ের সময় গানে গানে কেমন জমিয়ে দিয়েছিল। আজকেও ওকে দিয়ে বেশ কয়েকটা গান গাওয়াব।
দেখতে দেখতে সাতটা বেজে যায়। কিন্তু এখনও কেউ আসছে না কেন? একটা চাপা অস্বস্তি নিয়ে সুজয় আবার ঘড়িতে চোখ রাখে। সাতটা বেজে দশ। সুজয় গেট থেকে বেরিয়ে রাস্তায় একবার দাঁড়িয়ে আবার সুনন্দার কাছে ফিরে আসে। সুনন্দার মুখেও উদ্বেগের ছাপ। সাতটা কুড়ি, পঁচিশ, সাড়ে সাতটা, পৌনে আটটা, আটটা। একজনেরও দেখা নেই। সুজয় আর সুনন্দার উদ্বেগ ক্রমশ অভিমানে পরিণত হয়। সকলেরই কি একই দিনে জরুরি কাজ পড়ল? আমাদেরকে এভাবে উপেক্ষা করল সবাই? আমাদের ইচ্ছার এতটুকু মূল্য দিল না? তারা দুজনে ঘরের সোফায় এসে বসে। দেওয়াল ঘড়িতে রাত তখন কাঁটায় কাঁটায় ন-টা। সুজয় সুনন্দার দিকে তাকিয়ে দেখে, তার চোখের কোণে জল। তীব্র একটা যন্ত্রণা সুজয়ের বুক ঠেলে বেরিয়ে আসতে চায়। সুজয় চাপা, কঠিন স্বরে বলে, কোনো বন্ধুর সঙ্গেই আর কোনো সম্পর্ক রাখব না। তারপর সুনন্দাকে বলে, সুনন্দা, আমার বড্ড মাথা ধরেছে। মাথাধরার ট্যাবলেটগুলো কোথায় রেখেছ, একটা দাও।
সুনন্দা বলে, ও তো তোমার এই পড়ার টেবিলের ড্রয়ারেই থাকে। দিচ্ছি, বসো।
সুনন্দা টেবিলের ড্রয়ারটা টেনেই কীরকম একটা অস্বাভাবিক আওয়াজ করে ওঠে। সুজয় চমকে উঠে জিজ্ঞেস করে, কী হল? কী হল সুনন্দা?
সুনন্দা কোনো কথা বলে না। শুধু ড্রয়ারের ভিতর থেকে টেনে বের করে নাম-ঠিকানা লেখা, ডাকটিকিট বসানো একটা চিঠির বাণ্ডিল। তাদের প্রথম বিবাহবার্ষিকীর নিমন্ত্রণপত্র।
২) সংকেত-সূত্র: এক বৃদ্ধা চোখে দেখতেন না-চিকিৎসকের সঙ্গে চুক্তি হল-সারাতে পারলে পুরস্কার। অন্ধত্বের সুযোগে চিকিৎসক বৃদ্ধার আসবাবপত্র সরালেন। দৃষ্টি ফিরে পেলে পুরস্কার দাবি-অনাদায়ে মামলা। বৃদ্ধার যুক্তি-অন্ধ অবস্থায় কিছু দেখতেন না, এখনও ঘরের কিছু দেখছেন না। চোখ সেরেছে কি? বিচারক বুঝলেন।
উত্তরঃ
এক বৃদ্ধা ও এক লোভী চিকিৎসক
করুণাময়ী দেবী বল্লভপুরের এই বিশাল বাড়িতে একা থাকেন। পুরোনো জমিদার আমলের বিশাল বাড়ি। দামি আসবাবপত্রে ঠাসা। করুণাময়ী দেবীর বয়স এখন পঁচাত্তর। বয়স হলেও তাঁর স্বাস্থ্য মোটামুটি ভালোই। কিন্তু তাঁকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে তাঁর চোখ দুটো। গত একবছর ধরে তিনি চোখে কিছুই দেখছেন না। নিজেকে তিনি এখন অন্ধই ভেবে নিয়েছেন।
বৃদ্ধা একদিন খবর পেলেন, বল্লভপুরে একজন ভালো চক্ষু-চিকিৎসক এসেছেন-ড. শিশির মজুমদার। করুণাময়ী দেবী একদিন শিশিরবাবুকে বাড়িতে এনে তাঁর চোখের বিষয়ে বললেন। ডাক্তার তাঁর চোখ দুটি পরীক্ষা করে দেখে বললেন, সেরে যাবে, তবে একটু দেরি হবে। বৃদ্ধার মনে আশার আলো জ্বলে উঠল। তিনি শিশিরবাবুর হাত দুটি ধরে বললেন, ডাক্তারবাবু, আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিন, আমি আপনাকে অনেক টাকা পুরস্কার দেব।
বৃদ্ধার ঘরের দামি আসবাবপত্রগুলোর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলেন শিশিরবাবু। কী সুন্দর সব চেয়ার, টেবিল, সোফা, খাট, আলমারি। হঠাৎ পুরস্কারের কথায় সম্বিৎ ফিরে পেলেন তিনি। মনে মনে কীসব হিসাব কষে নিয়ে বললেন, পুরস্কার? আপনার চোখ সারিয়ে দিতে পারলে কত টাকা পুরস্কার দেবেন?
বৃদ্ধা বললেন, পঞ্চাশ হাজার।
হিসেবী মানুষ শিশিরবাবু বললেন, তাহলে একটা চুক্তি হওয়া দরকার।
সেইদিনই উকিল ডেকে চুক্তি করা হল, বৃদ্ধার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পারলে ডাক্তার শিশির মজুমদার পঞ্চাশ হাজার টাকা পুরস্কার পাবেন।
ডাক্তারবাবু রোজই বৃদ্ধার বাড়িতে এসে চোখের চিকিৎসা করেন। আর বৃদ্ধার অন্ধত্বের সুযোগে তাঁর দামি আসবাবপত্রগুলি একটি দুটি করে সরাতে থাকেন। দেখতে দেখতে বৃদ্ধার সমস্ত আসবাবপত্র চলে গেল ডাক্তারবাবুর বাড়িতে।
একদিন করুণাময়ী দেবী সত্যি সত্যিই দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেলেন। কিন্তু দেখতে পেলেন না তাঁর দামি আসবাবপত্রের একটিও। এসব যে ডাক্তারেরই কাণ্ড তা তিনি সহজেই বুঝে ফেললেন। শর্ত অনুযায়ী ডাক্তারবাবু পুরস্কার দাবি করলে বৃদ্ধা তা দিতে অস্বীকার করলেন। ক্ষুব্ধ ডাক্তারবাবু মামলা করলেন করুণাময়ী দেবীর নামে।
বিচারকের সামনে হাজির হতে হল করুণাময়ী দেবীকে। বিচারক তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়া সত্ত্বেও তিনি চুক্তি অনুযায়ী পুরস্কারের টাকা ডাক্তারবাবুকে দিচ্ছেন না কেন? বৃদ্ধা সবিনয়ে জানালেন, ধর্মাবতার, আমার চোখ কি সত্যিই উনি সারিয়ে দিতে পেরেছেন? আমি যখন অন্ধ ছিলাম তখন আমার ঘরের দামি আসবাবপত্রগুলি দেখতে পেতাম না। এখনও সেগুলিকে দেখতে পাচ্ছি না। তাহলে আমার চোখ সারল কোথায়?
বিচক্ষণ বিচারক বৃদ্ধার কথার ইঙ্গিত ও যুক্তি বুঝতে পারলেন। মহানুভব বিচারকের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত ফাঁস হয়ে গেল ডাক্তারবাবুর অপকীর্তি।
৩) সংকেত-সূত্র: এক পণ্ডিত নৌকোয় নদী পার হচ্ছেন-মাঝি লেখাপড়া শেখে নি শুনে পণ্ডিত বলেন মাঝির জীবন আট আনাই ব্যর্থ-মাঝ নদীতে নৌকো গেলে ঝড় ওঠে-মাঝি বলে, নৌকো ডুবলে সে সাঁতরে প্রাণ বাঁচাবে-ভীত পণ্ডিত বলেন, তিনি সাঁতার জানেন না-মাঝির মন্তব্য: পণ্ডিতের জীবন ষোলো আনাই বৃথা।
উত্তরঃ
জীবনের হিসাব
দুর্গাচরণ তর্করত্ন যেমন পণ্ডিত তেমনি দাম্ভিক। সবাইকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা তাঁর স্বভাব। দিনরাত পুঁথিপত্র নিয়ে বসে থাকেন, গ্রামের মানুষজনের সঙ্গে যোগাযোগও তাঁর বড় কম। মাঝে মাঝে শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে ডাক এলে তবেই তিনি বাড়ির বাইরে যান।
আজ তর্করত্নমশায় চলেছেন মনোহরপুর গ্রামে। ওখানে তিনকড়িবাবুর বাড়িতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। তর্করত্নের গ্রাম রাধানগর থেকে মনোহরপুর যেতে হলে নদীপথে যাওয়াই শ্রেয়। সকলেই তাই যায়।
ঘাটে তারিণী মাঝির নৌকা বাঁধাই ছিল। তর্করত্ন সেই নৌকায় উঠে বসলেন। তারিণীকে বললেন, চল্, মনোহরপুর যাব।
নৌকা ছেড়ে দিলে তারিণী বলল, বাবাঠাকুর, মনোহরপুরে কি ছেরাদ্দ না যগ্যি? কী আছে? আপনি তো এমনি এমনি যাবেন না?
তর্করত্নমশায় খেঁকিয়ে ওঠেন, অ্যাঁ, কী বললি, ছেরাদ্দ, যগ্যি? তোর কথাবার্তা এত অশুদ্ধ কেন? শ্রাদ্ধ, যজ্ঞ বলতে পারিস না?
আমরা কি আর লেখাপড়া শিখেছি বাবাঠাকুর? আমরা কথা বলতে হয় বলি। ভুল হলে মাপ করে দেবেন।
তর্করত্ন বলেন, সে কি, ব্যাকরণ পড়িস নি? কাব্য পড়িস নি? ন্যায় পড়িস নি?
তারিণী নৌকা চালাতে চালাতে সবিনয়ে জানায়, না, বাবাঠাকুর, আমি নেকাপড়া কিছুই জানি না।
মুখের মধ্যে কীরকম একটা অদ্ভুত শব্দ করেন তর্করত্ন। তারপর প্রবল তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলেন, তারিণী, লেখাপড়া যখন শিখিস নি, তখন তোর জীবনটা তো আট আনাই ব্যর্থ। তুই তো আধখানা মানুষ।
তারিণী ঘাড় নাড়ে, তা হবে।
লেখাপড়া না জানার জন্য তারিণীর জীবনটা কীভাবে একটা ফাঁকিতে পরিণত হয়েছে, সেকথাই বড় বড় কঠিন সংস্কৃত শ্লোকসহ তর্করত্নমশায় তারিণীকে বোঝাতে শুরু করলেন। তারিণী কখনো ‘হুঁ’-‘হাঁ’ করে, কখনো চুপ করে থাকে।
এমন সময় আকাশে দেখা গেল কালো মেঘ। কিছুক্ষণের মধ্যেই মেঘে আকাশ ঢেকে গেল। তারিণী বোঝে এই মেঘের মর্ম। সে বলে, বাবাঠাকুর, মনে হয় ঝড় উঠবে।
নৌকা তখন মাঝনদীতে। শুরু হয়ে গেল ঝড়। নৌকা টলমল করতে লাগল। তর্করত্নের মুখ পাংশুবর্ণ হয়ে গেছে। তারিণী জিজ্ঞেস করে, বাবাঠাকুর, সাঁতার জানেন তো? নৌকা ডুবে গেলে সাঁতার দিয়ে ওপারে পৌঁছতে হবে।
তর্করত্ন আতঙ্কিত মুখে বলেন, না রে, আমি যে সাঁতার জানি না।
তারিণী বলে, সে কি, সাঁতার জানেন না? নৌকা ডুবলে আমি তো সাঁতরে ওপারে চলে যাব। কিন্তু আপনি জীবন বাঁচাবেন কী করে? নেকাপড়া না জানার জন্যে আমার জীবনের আট আনা নষ্ট হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সাঁতার না জানার জন্যে আপনার জীবনের যে সবটাই ফাঁকি বাবাঠাকুর!
৪) কচ্ছপ এবং খরগোশ – ভালো বন্ধু – কচ্ছপ – তার ধীর গতির জন্য পরিচিত – খরগোশের দ্রুত গতি – কচ্ছপকে নিয়ে মজা করে – তাকে চ্যালেঞ্জ করে – রেফারি নির্বাচিত – দৌড় শুরু – খরগোশ অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী – ঘুমায় – কচ্ছপ জিতে যায়।
উত্তরঃ
অতিদর্পে হত লঙ্কা
একসময় দুই বন্ধু ছিল, একটি কচ্ছপ এবং একটি খরগোশ। পুরো জঙ্গল তাদের ভ্রাতৃত্ববোধ সম্পর্কে এবং তারা কীভাবে একে অপরের সাথে একত্রে থাকে তা সম্পর্কে সচেতন ছিল, যাই হোক না কেন। একদিন, যখন তারা তাদের নিজ নিজ গতি সম্পর্কে আলোচনা করছিল, খরগোশ কচ্ছপের গতি কম হওয়ার জন্য তাকে মজা করল। এখন, এটি একটি সুপরিচিত সত্য যে কচ্ছপের সাধারণত একটি শক্ত খোলস থাকে যা তাদের হাঁটা কঠিন করে তোলে। কিন্তু খরগোশ তাকে নিয়ে মজা করতে থাকে। কচ্ছপ খুব রেগে যায় এবং তাকে এটি প্রমাণ করতে বলে। খরগোশ, পালাক্রমে কচ্ছপকে তার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করার জন্য চ্যালেঞ্জ জানায়। তারা উভয়েই তারিখ এবং সময় নির্ধারণে একমত হয়। খবরটি জঙ্গলের রাজা সিংহের কাছে পৌঁছে যায়। তিনি একজন রেফারি বেছে নেন এবং প্রস্তুতি শুরু করার ঘোষণা দেন। পুরো জঙ্গল উত্তেজিত হয়ে ওঠে কারণ এটি ছিল প্রথমবারের মতো দুই ভাই একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করছিল। দৌড়ের কয়েকদিন আগে, খরগোশ নিজের সম্পর্কে উচ্চাভিলাষী হয়ে ঘুরে বেড়াত, অন্যদিকে, কচ্ছপটি মনোযোগ সহকারে অনুশীলন করত। দৌড়ের আগের রাতে, কচ্ছপ সময়মতো ঘুমিয়ে পড়ল, যাতে অন্যদিনও সে প্রাণবন্ত থাকে, অন্যদিকে খরগোশটি স্বপ্ন দেখতে থাকল যে সে জিতবে এবং এটা কতটা স্পষ্ট যে তার কোনও প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। অপেক্ষার অবসান ঘটল, টিকিট সম্পূর্ণ বিক্রি হয়ে গেল এবং জনতা আনন্দিত ছিল। উভয় প্রতিযোগীই শুরুর লাইনে প্রস্তুত ছিল এবং দৌড় এক কিলোমিটার দূরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। বাঁশি বাজল এবং উভয়েই তাদের নিজস্ব গতিতে দৌড়াতে শুরু করল। খরগোশ অর্ধেক দূরত্ব অতিক্রম করল, যখন কচ্ছপ খরগোশ যা অতিক্রম করেছিল তার অর্ধেকই অতিক্রম করতে পারল। অতি আত্মবিশ্বাসী খরগোশটি ঘুমিয়ে নেওয়ার কথা ভাবল এবং ভাবল যে কচ্ছপটি তার কাছে আসার আগেই সে জেগে উঠবে এবং বাকি দূরত্ব অতিক্রম করবে। কিছুক্ষণ পরে, শিসের শব্দে খরগোশের ঘুম ভেঙে যায় এবং সে দেখে কচ্ছপ জিতে গেছে।
৫) বুনিয়া ছিল একজন বোকা ছেলে, যে মনোযোগ আকর্ষণ করত। সে কাঠুরিয়া ছিল এবং গাছ কাটতে জঙ্গলের গভীরে যেত। একদিন সে একটা দুষ্টুমি করতে চাইল। সে তার কণ্ঠে চিৎকার করে বলল, “একটি বাঘ আছে, বাঘ আছে, একটি বাঘ আছে…”
উত্তরঃ
মিথ্যার শাস্তি
বুনিয়া ছিল একটা বোকা ছেলে, মনোযোগ আকর্ষণ করত। সে কাঠুরিয়া ছিল এবং জঙ্গলের গভীরে গাছ কাটতে যেত। একদিন সে একটা দুষ্টুমি করতে চাইত। সে তার উচ্চস্বরে চিৎকার করে বলল, “একটা বাঘ আছে, বাঘ আছে, একটা বাঘ আছে…” এমনকি যখন তার কোনও চিহ্নই ছিল না। গ্রামবাসীরা দ্রুত ছুটে এসেছিল ভেবে যে বুনিয়া বিপদে পড়েছে। বুনিয়ার মায়ের চোখে জল। গ্রামবাসীরা তাদের সুরক্ষার অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত ছিল এবং পৌঁছানোর পর তারা কোনও বাঘ দেখতে পেল না, কেবল বুনিয়া তাদের বাজিয়ে হাসছে। গ্রামবাসীরা আহত হয়েছিল এবং হতাশায় তারা গালিগালাজ করতে শুরু করেছিল। বুনিয়া বুঝতে পারেনি যে সে কী করেছে এবং সে চুপিচুপি হাসতে থাকে। এক সপ্তাহ কেটে গেল এবং সবাই বুনিয়াকে উপেক্ষা করছিল। একদিন, সে এবং তার বন্ধু জঙ্গলে গেল। অন্য দিনের মতোই, তারা একে অপরের সাথে গল্প করতে করতে তাদের কাজ শুরু করল। হঠাৎ, তারা কাছে একটি গর্জন শুনতে পেল। বাঘটি জঙ্গলের তার বন্ধুর দিকে ছিল। ভুনিয়া গ্রামবাসীদের কাছে সাহায্য চাইতে দৌড়ে গেল। কেউ তার কথা শোনেনি কারণ তারা ভেবেছিল এটা তার একটা মজা। সে সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছিল, কিন্তু কেউ তাকে বিশ্বাস করেনি। সে চা বিক্রেতার কাছে দৌড়ে গিয়ে পুরো ঘটনাটি খুলে বলে। চা বিক্রেতা তাকে সন্দেহের সুযোগ দিয়ে তার সাথে চলে গেল। তারা সেখানে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত তার বন্ধুকে কোথাও দেখা যাচ্ছিল না। তারা তার নাম ধরে ডাকল এবং জঙ্গলে তাকাল, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ভুনিয়া বুঝতে পারল এবং মেনে নিল যে এটি সব তার ভুল।
৬) মান্য নামের একটি মেয়ে – স্বপ্নের কলেজে ভর্তি হয়েছে – বন্ধু তৈরি করেছে – মজা করেছে – পড়াশোনা করতে পারেনি – খারাপ নম্বর পেয়েছে।
উত্তরঃ
পরিশ্রমের বিকল্প নেই
একসময় মান্য নামে এক পরিশ্রমী মেয়ে থাকত। প্রবেশিকা পরীক্ষায় সে জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে, যা তার স্বপ্নের কলেজে ভর্তির সুযোগ খুলে দেয়। সে খুব খুশি ছিল। তার সহজ-সরল ব্যক্তিত্বের কারণে সে অন্য ব্যাচমেটদের সাথে বন্ধুত্ব করা সহজ করে তুলেছিল। প্রথম কয়েক মাস, সে তার বন্ধুদের সাথে মজা করত। পড়াশোনার পরিবর্তে, তারা আরও মজাদার এবং স্মরণীয় কার্যকলাপে লিপ্ত হত। সে যখন মজা করছিল, তখন তার পরীক্ষা আরও কাছে এসেছিল। তার মনের ভেতরে, সে চিন্তিত ছিল যে সে আর যথেষ্ট পড়াশোনা করছে না। তার বন্ধুরা তাকে আশ্বস্ত করেছিল যে সে খুব বেশি চিন্তিত এবং পড়াশোনা না করার ফলে সে ঠান্ডা দেখাচ্ছে। তাই তার নতুন বন্ধুদের প্রভাবিত করার জন্য, সে পড়াশোনা করেনি। যখন পরীক্ষা একেবারেই কাছে এসেছিল, তখন সে পড়াশোনা করতে পারছিল না কারণ সে ভালো নোটও তৈরি করতে পারছিল না এবং বক্তৃতাগুলো ঠিকমতো শুনতেও পারছিল না। প্রশ্নপত্র পরীক্ষা করার সময়, সে বুঝতে পারল যে তার মন তার উত্তরপত্রের মতোই ফাঁকা! সে কম নম্বর পেয়েছিল। সে বুঝতে পেরেছিল যে, তার পরিশ্রমী স্বভাবকে কোনও কিছুর জন্য ত্যাগ করা উচিত নয়, এমনকি শালীন দেখানোর জন্যও। এরপর সে তার বন্ধুত্বের ইতি টানলো এবং তার আসল স্বরূপে ফিরে গেল।























