আমরা কবিতার প্রশ্ন উত্তর । নবম শ্রেণির বাংলা
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে আমরা কবিতার প্রশ্ন উত্তর । নবম শ্রেণির বাংলা প্রদান করা হলো। বাংলা বিষয়ের এই প্রশ্নের উত্তরগুলি অনুশীলনের মধ্য দিয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে। এছারাও শিক্ষার্থীরা আমাদের Class Note বিভাগ থেকে বাংলা বিষয়ের অধ্যায়ভিত্তিক সকল প্রকার প্রশ্নের উত্তর দেখে নিতে পারবে।
আমরা কবিতার প্রশ্ন উত্তর । নবম শ্রেণির বাংলা :
আমরা কবিতার MCQ প্রশ্নের উত্তর :
১) ‘আমরা’ কবিতার কবি হলেন – সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
২) ‘আমরা’ কবিতাটি গৃহীত হয়েছে যে কাব্যগ্রন্থ থেকে – কুহু ও কেকা
৩) ‘বাম হাতে যার কমলার ফুল’- এখানে কার কথা বলা হয়েছে? – বঙ্গদেশ
৪) ‘ভালে কাঞ্চন-শৃঙ্গ-মুকুট’- ‘ভালে’ শব্দের অর্থ – কপাল
৫) বঙ্গভূমির কোল ভরা আছে – কনক ধানে
৬) বঙ্গভূমির বুক ভরা আছে- স্নেহে
৭) বঙ্গভূমির চরনে আছে – পদ্ম
৮) আমরা যুদ্ধ করে বেঁচে আছি – বাঘের সঙ্গে
৯) ‘আমরা হেলায় নাগেরে খেলাই’- ‘নাগ’ শব্দের অর্থ – সাপ
১০) আমাদের সেনারা যুদ্ধ করেছে – সজ্জিত চতুরঙ্গে
১১) ‘দশানন’ কে?- রাবণ
১২) রামচন্দ্রের রপিতামহ হলেন – মহারাজ রঘু
১৩) ‘আমাদের ছেলে ______ লঙ্কা করিছে জয়’ – বিজয়সিংহ
১৪) ‘এখাতে মোরা মগেরে রুখেছি’– ‘মগ’ বলতে বোঝায় – আরাকানের জলদস্যু
১৫) ‘জ্ঞানের নিধান আদিবিদ্বান’- ‘আদিবিদ্বান’ হলেন – কপিলমুনি
১৬) সাংখ্যদর্শনের প্রতিষ্ঠাতা – কপিল
১৭) গিরি তুষার ভয়ংকর পথ অতিক্রম করেছিল – অতীশ দীপঙ্কর
১৮) ‘বাংলার রবি’ বলতে বোঝায় – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে
১৯) ‘স্থপতি মোদের স্থাপনা করেছে’- বরভূধরের ভিত্তি
২০) ‘যাদের নাম অবিনশ্বর’ তারা হলেন – বিট্পাল ও ধীমান
২১) ‘আমাদের পট অক্ষয় করে রেখেছে ______’ – অজন্তায়
২২) আমরা মনের দ্বার খুলে দেই – কীর্তন আর বাউল গানে
২৩) দেবতাদের আমরা জানি – আত্মীয় বলে
২৪) ‘ঘরের ছেলের চক্ষে দেখেছি বিশ্বভূপের _______’ – ছায়া
২৫) ‘বিশ্বভূপ’ শব্দের অর্থ – বিশ্বভূমি
২৬) ‘বাঙালির হিয়া অমিয় মথিয়া’- কায়া ধরেছেন – নিমাই
২৭) ‘বীর সন্ন্যাসী বিবেকের বাণী ছুটেছে ____’ – জগৎময়
২৮) ‘বিবেকের বাণী’ বলতে বোঝানো হয়েছে – বিবেকানন্দের কথা
২৯) বাঙালি সাধক জরের সাড়া পেয়েছে – তপের প্রভাবে
৩০) ‘ধাতা’ শব্দের অর্থ – ঈশ্বর
৩১) কার মুখের প্রশ্ন বাঙালিরা কেড়ে নিয়েছে? – বেতালের
৩২) ‘শ্মশানের বুকে আমরা রোপণ করেছি _____’ – পঞ্চবটী
৩৩) আমাদের করতলের মধ্যে ভবিষ্যতের কী লুকানো রয়েছে? – অমরতা
৩৪) ‘মুক্ত হইব দেব-ঋণে মোরা _______ তীরে’ – মুক্তবেণীর
৩৫) বাঙালির গৌরব যার আশীর্বাদে ভরে উঠবে – বিধাতার
আমরা কবিতার প্রশ্ন উত্তর । আমরা কবিতার SAQ প্রশ্নের উত্তর :
১) “মুক্তবেণীর গঙ্গা যেথায় মুক্তি বিতরে রঙ্গে৷”–গঙ্গা কোথায় মুক্তি বিতরণ করে?
উঃ সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর ‘আমরা’ কবিতায় বলেছেন যে মুক্তধারা গঙ্গাতীর্থ ভূমি বাংলায় মুক্তি বিতরণ করে।
২) আমরা কীভাবে ‘দেব-ঋণে’ মুক্ত হব?
উঃ সারা পৃথিবীর মানুষকে মিলনের মহামন্ত্রে দীক্ষিত করে আমরা বাঙালিরা ‘দেব-ঋণে’ মুক্ত হব।
৩) বাংলা মায়ের দেহ কোন্ কোন্ ফুলে ভূষিতা?
উঃ বাংলা মায়ের দেহ অতসী ও অপরাজিতা ফুলে ভূষিত। তার বামহাতে কমলার ফুল আর বশে গল্প শােভা পায়।
৪) সাগর কেমন করে বঙ্গভূমির বন্দনা করে?
উঃ বঙ্গভূমির দক্ষিণতম প্রান্তে থাকা বঙ্গোপসাগর অনবরত অজস ঢেউয়ের আছড়ে পড়ার মধ্য দিয়ে তার বঙ্গভূমির বন্দনা করে ।
৫) বাঙালি জাতি কীসের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে?
উঃ বাংলার দক্ষিণে অবস্থিত সুন্দরবনের গভীর অরণ্যে হিংস্র বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঙালি বেঁচে থাকে।
৬) আমরা হেলায় নাগেরে খেলাই’-~কবি কেন বলেছেন?
উঃ বাংলার নদী-খাল-বিলে অসংখ্য সাপের খেলা বাস| সাপের খেলা দেখানাে কিছু বাঙালির পেশা, তাই কবি এ কথা বলেছেন|
৭) নাগের মাথায় কে নেচেছিলেন?
উঃ পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে শ্রীকৃয় কালিয় নাগের মাথা অর্থাৎ ফণার ওপর নেমেছিলেন।
৮) চতুরঙ্গ কী?
উঃ হাতি, ঘােড়া, রথ ও পদাতিক—এই চারটি শাখাবিশিষ্ট সেনাবাহিনীকে চতুর বলে।
৯) কবির মতে বাঙালি সেনা কার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল?
উঃ কবির মতে বাঙালি সেনা রামচন্দ্রের প্রপিতামহ রঘুর সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল।
১০) কোন্ বাঙালি সকা জয় করেছিলেন?
উঃ রাঢ় বাংলার সিংহপুরের রাজপুত্র বিজয়সিংহ লঙ্কাদ্বীপ জয় করে সেখানে রাজত্ব ও রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন।
১১) সিংহল নামের মধ্য দিয়ে কোন্ বাঙালি নিজের শৌর্যের পরিচয় যেখেছেন?
উঃ বাঙালি বিজয়সিংহ লঙ্কা জয় করে সিংহল নামকরণের মধ্য দিয়ে নিরে শৌর্যের পরিচয় রেখেছেন।
১২) কবির মতে কাদের হুকুমে দিল্লিনাথকে হটতে হয়েছিল?
উঃ কবির মতে বাংলার বিখ্যাত বারাে ভূঁইয়ার অন্যতম চঁাদ রায় ও প্রতাপাদিত্যের মুকুমে দিল্লিনাথকে হটতে হয়েছিল।
১৩) ‘‘আদিবিদ্বান্ কাকে বলা হয়েছে?
উঃ বৈদিক ঋষি তথা সাংখ্যদর্শনের প্রপেতা মহামুনি কপিলকে আদিবিদ্বান্ বলা হয়েছে।
১৪) তিব্বতে জ্ঞানের দীপ কে জ্বেলেছিলেন?
উঃ বাঙালি পন্ডিত অতীশ দীপঙ্কর বা দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তিব্বতে জ্ঞানের দীপ জ্বেলেছিলেন তথা বৌদ্ধধর্মের প্রচার করেছিলেন।
১৫) “বাঙালির ছেলে ফিরে এল দেশে যশের মুকুট পরি।”- বাঙালির ছেলে কে?
উঃ বাঙালির ছেলে বলতে এখানে পণ্ডিত রঘুনাথ শিরােমপির কথা বলা হয়েছে।
১৬) ‘পক্ষধরের পক্ষশাতন’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উঃ বাঙালি পণ্ডিত রঘুনাথ শিরােমণি মিথিলার মহাপণ্ডিত পধর মিশ্রকে বিতর্কসভায় পরাজিত করেছিলেন। একেই কবি ‘ধরের পক্ষলাতন’ বলেছেন।
১৭) প্রাচীন বাংলার দুজন বিখ্যাত ভাস্করের নাম লেখাে।
উঃ প্রাচীন বাংলার দুজন বিখ্যাত ভার হলেন বিপাল আর ধীমান।
১৮) অজন্তা কেন বিখ্যাত?
উঃ খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মধ্যে বুদ্ধদেব ও জাতকের কাহিনি নিয়ে আঁকা গুহাটিত্রগুলির জন্য অজন্তা বিখ্যাত।
১৯) বাঙালি কোন্ গানে তার হূদয়ের গােপন দ্বার খুলে দিয়েছে?
উঃ বাঙালি তার একান্ত নিজস্ব কীর্তন আর বাউলগানে হৃদয়ের গােপন দ্বার খুলে দিয়েছে |
২০) কারা মন্বন্তরে মরেনি?
উঃ মন্বন্তরে বহু মানুষের মৃত্যু হলেও বাঙালি জাতি শেষপর্যন্ত মরেনি, তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।
২১) ‘মারী নিয়ে ঘর করি’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উঃ বাংলায় বহুবার বিভিন্ন রােগের মহামারি দেখা দিয়েছে। তাই কবি বলেছেন আমরা ‘মারী নিয়ে ঘর করি’।
২২) মন্বন্তর এবং মহামারির পরেও বাঙালি কীভাবে বেঁচেছে?
উঃ কবির মতে, বিধাতার আশীর্বাদে বাঙালি জাতি অমৃতের টিকা পরে মন্বন্তর এবং মহামারির পরেও নিজের অস্তিত্ব বজায় রেখেছে।
২৩) আকাশে প্রদীপ জ্বালা হয় কেন?
উঃ বাঙালি হিন্দুরা স্বর্গগত পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে কার্তিক মাসের সন্ধ্যায় বাঁশের ডগায় প্রদীপ জ্বেলে দেয়।
২৪) মানুষের ঠাকুরালি’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উঃ নিজের কর্মগুণে রক্তমাংসের মানুষের দেবত্বে উত্তীর্ণ হওয়াকেই কবি ‘মানুষের ঠাকুরালি’ বলেছেন।
২৫) বাঙালির হিয়া অমিয় মথিয়া’ কে কায়া ধরেছেন?
উঃ বাঙালির হৃদয়-অমৃত মন্থন করে নিমাই তথা শ্রীচৈতন্যদেব মানবমূর্তি ধারণ করেছেন।
২৬) “বীর সন্ন্যাসী বিবেকের বাণী ছুটেছে জগৎময়।”—কীভাবে বিবেকের বাণী জগৎময় প্রচারিত হয়েছে?
উঃ সন্ন্যাসী বিবেকানন্দের বাণী জগৎময় ছুটেছে অর্থাৎ তার মতাদর্শ সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে গ্রহণযােগ্য হয়ে উঠেছে।
২৭) “জড়ের সাড়া’ কে পেয়েছিলেন?
উঃ বাঙালি বিজ্ঞানসাধক আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, আপাতদৃষ্টিতে জড়পদার্থ গাছের মধ্যে প্রাণের সাড়া পেয়েছিলেন।
২৮) শব-সাধনা কী?
উঃ সদ্যোমৃত পুরুষের শবের ওপর ঘােড়ায় চড়ার ভঙ্গিতে বসে তান্ত্রিক সাধনাকেই শব-সাধনা বলা হয়।
২৯) জগতে মহামিলনের গান কে গেয়েছেন?
উঃ বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জগতে মহামিলনের গান গেয়েছেন।
৩০) বাঙালি কার মুখের প্রশ্ন কেড়ে নিয়েছে?
উঃ ‘আমরা’ কবিতায় কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের মতে বাঙালি বেতালের মুখের প্রশ্ন কেড়ে নিয়েছে।
৩১) পবটী কোন্ কোন্ বৃক্ষের সমাহার?
উঃ পঞ্চবটী হল বট, বেল, অশ্বথ, অশােক, আমলকী—এই পাঁচটি বৃক্ষের সমাহার।
৩২) ‘আমরা’ কবিতায় পঞ্চবটীর ছায়ায় বাঙালি কী করবে বলে কবি জানিয়েছেন?
উঃ কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের মতে পঞ্চবটীর ছায়ায় বাঙালি জগতের শতকোটি মানুষের মধ্যে মিলন ঘটবে।
৩৩) “আমরা’ কবিতায় বিধাতার বরে কী হবে বলে কবি মনে করেছেন?
উঃ বিধাতার বরে অর্থাৎ আশীর্বাদে সারা পৃথিবী বাঙালির গৌরবেপরিপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে কবি আশা করেন।
৩৪) ভুবন কেমন করে বাঙালির গৌরবে ভরে উঠবে?
উঃ বিধাতার আশীর্বাদে এবং বাঙালির প্রতিভা ও তপস্যা বা সাধনায় পৃথিবী তার গৌরবে ভরে উঠবে।
৩৫) বিষম ধাতুর মিলন কে ঘটিয়েছেন?
উঃ বিষম অর্থাৎ ভিন্ন ধর্মবিশিষ্ট ধাতুর রাসায়নিক সংযােগ ঘটিয়েছেন বাঙালি বিজ্ঞানী, রসায়নবিদ আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়।
আমরা কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর :
১) ‘নিমাই ধরেছে কায়া’- নিমাই কায়া ধরেছে কীভাবে? ৩
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট কবি “সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত” বিরচিত “আমরা” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
ব্যাখ্যাঃ
উধৃতাংশটির মধ্য দিয়ে শ্রীচৈতন্যদেবের ব্যক্তিত্বের স্বরূপ সুপ্রকাশিত হয়েছে। কবি ‘অমিয় মথিয়া’ শব্দবন্ধের মাধ্যমে বাঙালির হৃদয়জাত মায়া-মমতার মতো মানবিক গুণাবলীর প্রকাশ ঘটিয়েছেন; যা শ্রীচৈতন্যদেবের মধ্যে আমরা পর্যবেক্ষণ করে থাকি। তিনি সকলকে জাতপাতের উর্দ্ধে মানবরূপে ভালোবাসতে শিখিয়েছিলেন। তাই কবি বলেছেন, বাঙালির প্রেমিক সত্তাই নিমাইয়ের বাণীরূপে প্রকাশ পেয়েছে।
২) ‘আমরা, বাঙালি বাস করি সেই বাঞ্ছিত ভূমি বঙ্গে’ – কবি বাংলা দেশকে ‘বাঞ্ছিত ভূমি’ কেন বলেছেন? ৩
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট কবি “সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত” বিরচিত “আমরা” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
‘বাঞ্ছিত ভূমি’ বলার কারণঃ
বাঞ্ছিত ভূমি’ অর্থাৎ যে দেশ সকলের আকাঙ্ক্ষার স্থান। বাংলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে পুণ্যসলিলাগঙ্গা, তার মাথায় তুষার হিমালয়ের মুকুট আর তার পা ধুয়ে দেয় সমুদ্রের জল। বাংলামায়ের কোলভরাসোনার ধান আর দেহ অজস্র ফুলে শোভিত। অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পূর্ণ, সুজলা-সুফলা, বাংলারমাটিতে শত তীর্থের পুণ্য অর্জন করা যায় বলে বঙ্গদেশকে কবি ‘বাঞ্ছিত ভূমি’ বলেছেন।
৩) ‘বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করিয়া আমরা বাঁচিয়া আছি’ – কবি কেন একথা বলেছেন? ৩
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট কবি “সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত” বিরচিত “আমরা” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
কবির মন্তব্যের কারণঃ
বাংলার দক্ষিণের বনভূমি অঞ্চল সুন্দরবন প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। সুন্দরবনের রাজকীয়বাঘ বা রয়ালবেঙ্গল টাইগার সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত। কিন্তু এই অঞ্চলের বাসিন্দা এবং জীবিকার কারণে কাঠ, মধু,মাছ ইত্যাদি সংগ্রহের জন্য যাদের জঙ্গলে যেতে হয় তাদের প্রতিনিয়ত এই হিংস্র প্রাণীটির আক্রমণেরমুখে পড়তে হয়। তাই কবি বলেছেন যে বাঙালি বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে।
৪) ‘আমরা হেলায় নাগেরে খেলাই, নাগেরি মাথায় নাচি’ – পঙক্তিটি ব্যাখ্যা করো। ৩
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট কবি “সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত” বিরচিত “আমরা” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
পঙতির ব্যাখ্যাঃ
খাল-বিল-নদী-জঙ্গলে পূর্ণ বাংলায় অসংখ্য রকমের নাগ অর্থাৎ সাপ রয়েছে। তাই বাংলার বেশ কিছু সংখ্যক মানুষের জীবিকা সাপ ধরে সাপ খেলা দেখানো। অন্যদিকে, পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ কালিয় নাগকে দমন করে তার মাথার উপর নেচেছিলেন। কৃষ্ণ বাংলার মানুষ না হলেও ভালোবেসে বাঙালি তাঁকে আপন করে নিয়েছে। তাই কবি শ্রীকৃষ্ণের উপাখ্যানটিকেও বাঙালির কৃতিত্বের অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৫) ‘কীর্তনে আর বাউলের গানে আমরা দিয়েছি খুলি’ – উদ্ধৃতিটির মাধ্যমে কবি কি বলতে চেয়েছেন? ৩
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট কবি “সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত” বিরচিত “আমরা” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
কবির বক্তব্যঃ
বাংলার অতিপ্রাচীন দুটি গীতিধারা হল ‘কীর্তন’ আর ‘বাউল গান’। মাটির মানুষের কথা আর আত্মানুসন্ধানের গান এই বাউল সংগীত আর রাধা-কৃয়কে কেন্দ্রে রেখে ঈশ্বর ও মানব প্রেমানুভূতিরআকুলতা প্রকাশিত হয় কীর্তন গানে। বাঙালি সমাজের মানসিক দুঃখ-সুখ, ভালোবাসা-মিলনের বাণীরূপ এই কীর্তন আর বাউল গান। বাঙালির মনের সকল মাধুরী একাত্ম হয়ে যায় এই গানগুলির মধ্যে। আপন-পর ভুলে সকলকে আপন বক্ষে ধারণ করার ঐতিহ্য রয়েছে কীর্তন আর বাউলের মন আকুল করা সুরে। উদ্ধৃতাংশের মাধ্যমে কবি সে কথাই বুঝিয়েছেন।
আমরা কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তরঃ
১) ‘আমরা’ কবিতায় কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বঙ্গভূমির যে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়েছেন, তার স্বরূপ বিশ্লেষণ করো। ৫
উৎসঃ
কবি ‘সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত’ বঙ্গভূমির রূপসৌন্দর্যকে প্রকাশ করেছেন ‘আমরা’ কবিতায়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্য ও অনন্যতাঃ
গঙ্গা নদীবিধৌত এই বঙ্গভূমি। পুণ্যতোয়া নদীতীরস্থ এই বাংলার মাটিতে রয়েছে অনেক মহামানবের স্পর্শ। গঙ্গার জলধারাবাহিত পলিময় এদেশের মাটিতে সোনার ফসল ফলে। সোনালি ধানে ভরে থাকে গোটা দেশ। তা যেন মায়ের স্নেহের মতো ঝরে পড়ে বাংলার বুকে। নানারকম পুষ্পরাজিতে পরিপূর্ণ বঙ্গমাতার দেহ। অতসী-অপরাজিতা-পদ্মের মতো কত রকম ফুলের সুগন্ধে আমোদিত হয় এদেশের বাতাস। কোথাও কমলালেবুর ফুল, কোথাও-বা মহুয়ার মাদকতাপূর্ণ গন্ধে ভরে থাকে বাংলার আকাশ। গাঙ্গেয় সমতল ভূমির এ-ছবি বদলে যেতে থাকে উত্তরে। সেখানে কাঞ্চনবর্ণা হিমালয় পর্বতের কাঞ্চন-শৃঙ্গ-মুকুটের আশ্চর্য দীপ্তি হৃদয় রাঙিয়ে দেয়। বরফাচ্ছাদিত পাহাড়ের চূড়াগুলি যেন এই বঙ্গভূমির মাথার সোনার মুকুট। সূর্যের আলোয় তা কাঞ্চনবর্ণ ধারণ করে। পর্বতচূড়ায় প্রতিবিম্বিত আলোয় প্লাবিত হয় চারদিক। আবার উত্তরবঙ্গের এই ছবি বদলে যায় দক্ষিণবঙ্গে। সেখানে বঙ্গোপসাগরের জলধারায় প্রতিমুহূর্তে উদ্বেলিত হয়ে চলেছে উপকূলের মাটি। মনে হয় শততরঙ্গে সাগর যেন বঙ্গভূমির চরণবন্দনা করছে।
বঙ্গভূমির এই রূপসৌন্দর্য দেখতে দেখতে কবিও যেন বলতে চেয়েছেন ‘ওগো মা তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ভরে’।
২) ‘আমরা’ কবিতায় কবি বাঙালির কৃতিত্বকে যেভাবে বর্ণনা করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো। ৫
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট কবি “সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত” বিরচিত “আমরা” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
কবির চোখে বাঙালির কৃতিত্বঃ
পাঠ্য কবিতাটি বাংলা ও বাঙালিকে কেন্দ্র করে রচিত। কবিতার শুরুতে বাংলার রূপ বর্ণনার পরেই কবি বাঙালির গৌরবগাথা রচনা করেছেন। জলে-জঙ্গলে পূর্ণ বাংলায় বাঙালিজাতি সাপ ও বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে –
“আমরা হেলায় নাগেরে খেলাই, নাগেরি মাথায় নাচি”
সিংহলি পুরাণ অনুসারে রাঢ় বাংলার সিংহপুরেররাজপুত্র বাঙালি বিজয়সিংহ লঙ্কা জয় করেন এবং তাঁর নামানুসারেই লঙ্কার সিংহল নামকরণ করা হয়। বাঙালি বহির্দেশীয় আক্রমণকারী মগ ও মোগলের সঙ্গেও প্রাণপণ লড়াই করেছে। বারোভূঁইয়ার অন্যতম চাঁদ রায়, প্রতাপাদিত্যকে পরাজিত করতে দিল্লির মোগল সম্রাটকে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছিল। বাংলার গঙ্গাসাগরে কপিলমুনির আশ্রম আছে। তাই কবি ধরে নিয়েছেন তাঁর সুপ্রাচীন সাংখ্যদর্শনের রচনাভূমি এই বাংলা। বাঙালি পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর তিব্বতে গিয়ে বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও শিক্ষাবিস্তারকরেন-
“বাঙালির ছেলে ফিরে এল দেশে যশের মুকুট পরি।”
নবদ্বীপের রঘুনাথ শিরোমণি মিথিলার পণ্ডিত পক্ষধর মিশ্রকে তর্কযুদ্ধে পরাজিত করে বাংলারগৌরব বৃদ্ধি করেন। বাঙালি কবি জয়দেবের লেখা কাব্য ‘গীতগোবিন্দ’ সংস্কৃত সাহিত্যের অমূল্যসম্পদ। স্থাপত্য-ভাস্কর্য-শিল্পকলাতেও বাঙালি কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে। পাল যুগের বিখ্যাত ভাস্কর ছিলেন বিট্পাল ও ধীমান। মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব, শ্রীরামকৃষৃ্দেব আধ্যাত্মিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বাঙালিকে অপূর্ব মহিমা দান করেছেন-
“বাঙালীর হিয়া অমিয় মথিয়া নিমাই ধরেছে কায়া।”
বাঙালি বিজ্ঞানীআচার্য জগদীশচন্দ্র বসু গাছের মধ্যে প্রাণের স্পন্দন আবিষ্কার করেছেন। ড. প্রফুল্লচন্দ্র রায় রসায়নশাস্ত্রে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। স্বামী বিবেকানন্দের বাণী মুগ্ধ করেছে বিশ্ববাসীকে –
“বীর সন্ন্যাসী বিবেকের বাণী ছুটেছে জগৎময়।”
বাঙালির কবি রবীন্দ্রনাথও তাঁর কবিতায় মানুষের মহামিলনের কথা বলেছেন।
সবশেষে কবি আশা প্রকাশ করেছেন যে বাঙালি একদিন তার প্রতিভা ও কর্মপ্রচেষ্টায় বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা অর্জন করবে।
LINK TO VIEW PDF FILE (ONLY FOR SUBSCRIBERS)
নিম্নের PDF প্রশ্নের উত্তরগুলি শুধুমাত্র আমাদের Subscribers -দের জন্য। নবম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের সাবস্ক্রিপশন নিতে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথেঃ What’s App: 7001880232
এখানে আরো প্রশ্নের উত্তর খুব শীঘ্রই প্রদান করা হবে।
নবম শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেখতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবে