বঙ্গ আমার জননী আমার কবিতার প্রশ্নের উত্তর । ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা
WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বঙ্গ আমার জননী আমার কবিতার প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তরগুলি অনুশীলনের মধ্য দিয়ে তাদের পাঠ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবে।
বঙ্গ আমার জননী আমার কবিতার প্রশ্নের উত্তর । ষষ্ঠ শ্রেণি বাংলা :
১) বুদ্ধদেব বিশ্বে কীসের বাণী প্রচার করেন ?
উঃ গৌতম বুদ্ধ বিশ্বে মুক্তি বা মোক্ষলাভের বাণী প্রচার করেন ।
২) তিরিশ কোটি জনতার মিলিত কণ্ঠ কীসের ডাক দেয় ?
উঃ তিরিশ কোটি জনতার মিলিত কণ্ঠ ‘আমার দেশ’ বলে ডেকে ওঠে।
৩) বঙ্গমাতার ‘নয়ন’ কেমন ?
উঃ বঙ্গমাতার ‘নয়ন’ শুকনো।
৪) কার বেশ ‘মলিন’ ?
উঃ বঙ্গমাতার বেশ ‘মলিন’।
৫) কার কীর্তি ‘গান্ধার হতে জলধি শেষ’ পর্যন্ত বিস্তৃত ?
উঃ সম্রাট অশোকের কীর্তি ‘গান্ধার হতে জলধি শেষ অবধি বিস্তৃত।
৬) রঘুমণি কীসের বিধান দেন ?
উঃ রঘুমণি ন্যায়ের বিধান দেন।
৭) “কেন গো মা তোর মলিন বেশ” —“মা’ বলতে কবি কাকে বুঝিয়েছেন ? তাকে ‘মা’ বলা হয়েছে কেন ?
উঃ কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ‘মা’ বলতে দেশমাতা ভারতবর্ষকে বুঝিয়েছেন।
মা যেমন আমাদের ধারণ করেন, রক্ষা করেন, ঠিক তেমনি দেশমাতৃকাও তাঁর সন্তানদের আগলে রাখেন, তাদের সুরক্ষা ও আশ্রয় প্রদান করেন। এই কারণেই, কবি তাঁকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করেছেন।
৮) ‘মা’-এর বেশ মলিন ও বেশ রুক্ষ কেন ?
উঃ দেশমাতার বেশ মলিন ও বেশ রুক্ষ তার কারণ তিনি এখন পরাধীন। অত্যাচারী শাসকদের শোষণে তাঁর গৌরব ও সমৃদ্ধি লোপ পেয়েছে ।
৯) অশোক কোথায় কোথায় তাঁর প্রভাব বিস্তার করেছিলেন ?
উঃ অশোক গান্ধার প্রদেশ থেকে দক্ষিণ ভারত পর্যন্ত তাঁর প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।
১০) “অর্ধ-জগৎ ভক্তি-প্রণত চরণে যাঁর”—‘অর্ধ-জগৎ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? কার চরণে তা প্রণত হয়েছে ?
উঃ ‘অর্ধ-জগৎ’ বলতে সারা বিশ্বের অর্ধেক অংশের কথা বোঝানো হয়েছে।
‘অর্ধ-জগৎ’ গৌতম বুদ্ধের চরণে প্রণত হয়েছে ।
১১) “যুদ্ধ করিল প্রতাপাদিত্য”- প্রতাপাদিত্য কে ছিলেন? তিনি কাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন ?
উঃ প্রতাপাদিত্য ছিলেন বাংলাদেশের বিখ্যাত ‘বারো ভুঁইয়া’ বা ‘বারোজন রাজা’-র একজন। যশোর, খুলনার বিস্তৃত অঞ্চলে তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল।
প্রতাপাদিত্য মোগলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বঙ্গদেশে তাদের আধিপত্য বিস্তার রুখেছিলেন।
১২) “ধন্য আমরা”- ‘আমরা’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? আমরা কখন নিজেদের ধন্য বলে মনে করতে পারি ?
উঃ ‘আমরা’ বলতে পরাধীন ভারতের নাগরিকদের কথা বোঝানো হয়েছে।
আমরা নিজেদের ধন্য বলে মনে করব তখন, যখন প্রত্যেকে বীর প্রতাপাদিত্য, চৈতন্যদেব, চণ্ডীদাস কিংবা সম্রাট অশোক বা গৌতম বুদ্ধের আদর্শকে ঠিকমতো অনুসরণ করতে পারব।
১৩) নবীন গরিমা কীভাবে ললাটে ফুটে উঠবে ?
উঃ নবীন গরিমা ললাটে ফুটে উঠবে যখন দেশমাতার ত্রিশ কোটি সন্তানেরা মিলে তাদের জননীর হারানো গৌরব ও সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনবে।
১৪) আমরা কীভাবে বঙ্গজননীর দুঃখ, দৈন্য, লজ্জা দূর করতে পারি ?
উঃ তিরিশ কোটি জনগণের মিলিত অংশগ্রহণে দেশজননী পরাধীনতা থেকে মুক্তি লাভ করবেন।
১৫) “যদিও মা তোর দিব্য আলোকে ঘিরে আছে আজ আঁধার ঘোর”- কবির কেন মনে হয়েছে যে বঙ্গজননীকে আঁধার ঘিরে আছে ?
উঃ দেশমাতা, বঙ্গজননী উভয়েই তখন ছিলেন পরাধীন। অত্যাচারী বিদেশি শাসকদের শোষণে ভারতবর্ষের ঐশ্বর্য ও গৌরব হারিয়ে গিয়েছিল। বদলে অন্ধকারপূর্ণ অন্যায় ও অনাচারের রাজত্ব বিস্তৃত হয়েছিল। ভারতমাতাকে কবি ‘দেবী”, ‘সাধনা’ বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি পবিত্রতার প্রতীক। কিন্তু অশুভ শক্তির শোষণে বঙ্গজননীকে ঘিরে ধরেছে ঘন অন্ধকারের বলয়। এমনটাই কবির ধারণা।
১৬) বঙ্গবাসীর সামুদ্রিক বাণিজ্য বিস্তারের ভাবনা ‘বঙ্গ আমার জননী আমার!’ কবিতার কোন্ পঙক্তিতে ফুটে উঠেছে ?
উঃ বঙ্গবাসীর সামুদ্রিক বাণিজ্য বিস্তারের ভাবনা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘বঙ্গ আমার!জননী আমার!’ কবিতার ‘একদা যাহার অর্ণব-পোত ভ্রমিল ভারত-সাগরময়’ পঙ্ক্তিটিতে ফুটে উঠেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কবি বিজয়চন্দ্ৰ মজুমদারের পরামর্শে দ্বিজেন্দ্রলাল তাঁর কবিতায় এই অংশটি যুক্ত করেন।
১৭) কোন বিপ্লবীর কারামুক্তির পর তাঁর অভ্যর্থনা সভায় দ্বিজেন্দ্রলালের ‘বঙ্গ আমার! জননী আমার!’ কবিতাটি গান হিসেবে পরিবেশিত হয় ?
উঃ দেশবরেণ্য বাগ্মী, বিপ্লবী বিপিনচন্দ্র পালের কারামুক্তির পর তাঁর অভ্যর্থনা সভায় ইভনিং ক্লাবের সভ্যদের দ্বারা প্রকাশ্যে দ্বিজেন্দ্রলালের ‘বঙ্গ আমার! জননী আমার’ কবিতাটি গান হিসেবে পরিবেশন করেন।
১৮) দ্বিজেন্দ্রলাল রায় তাঁর কোন্ নাটকে ‘বঙ্গ আমার! জননী আমার!’ গানটি যুক্ত করতে চেয়েছিলেন ?
উঃ দ্বিজেন্দ্রলাল রায় তাঁর ‘নূরজাহান” নাটকের প্রথম অভিনয়ে পরেই, নাটকের যে অংশে নূরজাহান বঙ্গদেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, সেখানে গানটি ড্রামের বাদ্যধবনি সহযোগে রাখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
১৯) “কেটে যাবে মেঘ” – কোন্ মেঘ কীভাবে কেটে যাবে ?
উঃ আকাশে জমা ঘন, কালো মেঘ আমাদের দুর্যোগ বা ঝড়ের সংকেত এনে দেয়। তেমনি দেশ ও জাতির পরাধীন জীবনে অত্যাচারী শাসকের শোষণ বিপদের আভাস বয়ে নিয়ে এসেছিল; ভারতজননীর গৌরব মুছে গিয়েছিল। দেশমাতা, বঙ্গমাতার এই করুণ অবস্থা বদলাতে, কবির মতে, সমস্ত দেশবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের মিলিত অংশগ্রহণেই দুরবস্থা ও দৈন্যের এই কালো মেঘ কেটে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
২০) “কেন-গো মা তোর ধূলায় আসন, কেন-গো মা তোর মলিন বেশ?”- দেশজননীর এই দৈন্যদশার কারণ কী বলে তোমার মনে হয় ?
উঃ ভারতবর্ষ তখন পরাধীন। যেখান থেকে গৌতম বুদ্ধ মুক্তিলাভের বাণী প্রচার করা শুরু করেছিলেন সেখানেই আজ অত্যাচারী শাসকেরা থাবা বসিয়েছে। পরাক্রমী সম্রাট অশোকের কীর্তিও সকলে যেন ভুলতে বসেছে। ন্যায়, আদৰ্শ— সবকিছুই যেন মুছে গিয়েছে। সব মিলিয়ে বিদেশি ব্রিটিশ শাসকদের শোষণে দেশমাতার দশা শোচনীয় রূপ নিয়েছিল।