কর্তৃকারক কাকে বলে? কর্তৃকারক কত প্রকার ও কি কি?
আমাদের WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে বাংলা ব্যাকরণের অন্তর্ভুক্ত কারক থেকে কর্তৃকারক কাকে বলে? কর্তৃকারক কত প্রকার ও কি কি? এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের আলোচনাগুলি প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই কর্তৃকারক ও তার শ্রেণিবিভাগ থেকে প্রশ্নের উত্তরগুলি তৈরি করে তাদের মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
কর্তৃকারক কাকে বলে? কর্তৃকারক কত প্রকার ও কি কি? :
কর্তৃকারকঃ
বাক্যে যে পদটি ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে বলা হয় কর্তা। ক্রিয়াপদের সঙ্গে সেই পদের সম্পর্ককে বলা হয় কর্তৃকারক।
যেমনঃ অনন্যা ভাত খায়।
এখন কর্তৃকারকের বিবিধ বিভাগগুলি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো –
মুখ্য কর্তাঃ
যে নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে মুখ্য কর্তা বলে।
যেমনঃ আমি ভাত খাই।
প্রযোজক কর্তাঃ
যখন কর্তা নিজে না কাজ করে অন্য কাউকে দিয়ে কাজ করায়, তখন তাকে বলে প্রযোজক কর্তা।
যেমনঃ মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছে।
প্রযোজ্য কর্তাঃ
প্রযোজক কর্তা যাকে দিয়ে কাজটি করায় সে হল প্রযোজ্য কর্তা।
যেমনঃ মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছে।
বাক্যাংশ কর্তাঃ
কোনো বাক্যাংশ ক্রিয়া সম্পাদন করলে বা কর্তার ভূমিকা নিলে, তাকে বাক্যাংশ কর্তা বলে।
যেমনঃ তোমরা সবাই একসঙ্গেই আসবে।
অনুক্ত কর্তাঃ
যে বাক্যের কর্তা প্রধানভাবে প্রতীয়মান হয় না তাকে অনুক্ত কর্তা বলে। সাধারণত ভাব বাচ্যের কর্তাকে অনুক্ত কর্তা বলা হয়।
যেমনঃ আমার দ্বারা কাজটি করা হবে।
সমধাতুজ কর্তাঃ
বাক্যের কর্তা এবং ক্রিয়াপদ একই ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হলে সেই কর্তাকে সমধাতুজ কর্তা বলে।
যেমনঃ রাঁধুনি রান্না করছে।
নিরপেক্ষ কর্তাঃ
বাক্যে সমাপিকা ক্রিয়া এবং অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা ভিন্ন ভিন্ন হলে অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তাটিকে নিরপেক্ষ কর্তা বলে।
যেমনঃ তুমি এলে আমি যাবো।
ব্যতিহার কর্তাঃ
দুই বা তার বেশি কর্তা পারস্পরিক সাহচর্যে ক্রিয়া সম্পাদন করলে তাদেরকে ব্যতিহার কর্তা বলে।
যেমনঃ রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়।
উহ্য কর্তাঃ
কোনো বাক্যে কর্তা উহ্য থাকলে সেই কর্তাকে উহ্য কর্তা বলে।
যেমনঃ এদিকে এসো (তুমি উহ্য)
কর্মবাচ্যের কর্তাঃ
কর্মপদের প্রাধান্যসূচক বাক্যে কর্মপদের কর্তা ব্যবহৃত হয়।
যেমনঃ বিড়াল দ্বারা ইঁদুরটি ধৃত হয়েছে।
ভাববাচ্যের কর্তাঃ
ক্রিয়ার প্রাধান্যসুচক বাক্যে যে কর্তা ব্যবহৃত হয়, তাকে ভাববাচ্যের কর্তা বলা হয়।
যেমনঃ তোমার খাওয়া হবে না।
কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তাঃ
বাক্যের কর্ম যখন কর্তা হিসেবে প্রতীয়মান হয় তখন সেই কর্তাকে কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্তা বলা হয়।
যেমনঃ শাঁখ বাজে।
উপকরণ বা সাধণ কর্তাঃ
যখন উপকরণকে কর্তা হিসেবে গ্রহণ করা হয়, তখন তাকে বলে উপকরণ কর্তা।
যেমনঃ ঢেঁকি স্বর্গে গিয়েও ধান ভানে।
উপবাক্যীয় কর্তাঃ
বাক্যের অন্তর্গত উপবাক্য যদি সেই বাক্যের কর্তা রূপে ক্রিয়া সম্পাদন করে, তখন তাকে উপবাক্যীয় কর্তা বলে।
যেমনঃ তুমি এভাবে কথা বলবে তা ভাবতে পারি নি।
এক ক্রিয়ার বহু কর্তাঃ
বাক্যে যখন একাধিক কর্তা একটি কাজ সম্পন্ন করে তখন তাকে এক ক্রিয়ার বহু কর্তা বলে।
যেমনঃ রাম, শ্যাম, যদু ও মধু ক্রিকেট খেলে।
বহু ক্রিয়ার এক কর্তাঃ
যখন একজন কর্তা একাধিক ক্রিয়া সম্পন্ন করে তখন তাকে বহু ক্রিয়ার এক কর্তা বলে।
যেমনঃ আমি স্নান করি, ভাত খাই ও ঘুমাই।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
কর্তৃকারকে অনুসর্গের ব্যবহার = তোমার দ্বারা হবে না।
কর্তৃকারকে শূন্য বিভক্তির ব্যবহার = বনে বাঘ থাকে।