পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে প্রশ্নের উত্তর
WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা পাতাবাহার পাঠ্যবই থেকে পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, তোমাদের পাঠ্যবই থেকে পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে পাঠ্যাংশটি ভালো করে পাঠ করে, নিম্নে প্রদান করা পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর সমাধান করতে পারবে।
১) সংক্ষিপ্ত উত্তর দাওঃ
১.১) পশ্চিমবঙ্গের যে-কোনো একটি পাহাড়ের নাম লেখো।
উত্তর : পশ্চিমবঙ্গের একটি পাহাড়ের নাম হল পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়।
১.২) পাহাড়ের কথা বললেই কোন ছবি তোমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে ?
উত্তরঃ পাহাড়ের কথা বললেই আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য। একপাশে জঙ্গলে ঢাকা উঁচু উঁচু পাহাড় আর একপাশে গভীর খাদ। এরই মাঝখান দিয়ে চলেছে সরু পাহাড়ি রাস্তা। পাহাড়ের গা বেয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা নদী, কোথাও আবার সেই নদী থেকে জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে। খুব নীচ দিয়ে ভেসে চলেছে মেঘের দল, যেন হাত বাড়ালেই তাদের স্পর্শ করা যাবে।
১.৩) বর্ষায় মাছ ধরা নিয়ে তোমার অভিজ্ঞতার কথা কিংবা মাছ ধরা নিয়ে তোমার পড়া একটি গল্প বা ছড়া লেখো ।
উত্তরঃ আমি যখন খুব ছোট ছিলাম তখন বর্ষাকালে আমার বাবার সাথে বাড়ির সামনের খালে মাছ ধরতাম। আমাদের বাড়ির সামনের খালটি বর্ষাকালে জলে পরিপূর্ণ হয়ে যেত। আর সেই খাল দিয়ে অনেক ছোট ছোট মাছ ভেসে যেত। আমার বাবা আর আমি টানা জাল দিয়ে সেই মাছগুলি ধরতাম। সেই স্মৃতি কখনো ভোলার নয়।
১.৪) বর্ষায় প্রকৃতির রূপ কেমন হয় ? তোমার পাঠ্যবইতে বর্ষা নিয়ে আর কোন কোন লেখা রয়েছে ?
উত্তরঃ বর্ষায় প্রকৃতি এক অপরূপ রূপে সেজে ওঠে। গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহের পর যখন বর্ষা আসে প্রকৃতি তখন হয়ে ওঠে সজল, স্নিগ্ধ। বর্ষার জলধারায় গাছপালা সতেজ ও সবুজ হয়ে ওঠে। নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর, জলাশয় সব জলে ভরে ওঠে। বর্ষায় আকাশ বেশির ভাগ সময় ঘন কালো মেঘে ঢেকে থাকে। মাঝে মাঝে বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রচন্ড বৃষ্টি হয়। সন্ধ্যেবেলায় ব্যাঙের ডাক শোনা যায়।
বর্ষা নিয়ে আমার পাঠ্যবইতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’ কবিতা, ও লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘তালনবমী’ গল্প রয়েছে ।
২) বাক্য মিলঃ
উত্তরঃ
ক | খ |
---|---|
চল মাছ ধরি গিয়ে | নতুন বছরের নতুন জলে |
মাছরাঙা বার বার | ছোঁ মেরেও পায়নি মাছ |
কুরুয়া পাখি | উড়ে উড়ে কাঁদছে |
বকেরা | উড়ছে সার বেঁধে |
ছাপিয়ে গিয়েছে | নদীর কূল |
৩) প্রদত্ত সূত্র অনুসারে গানটি থেকে গল্প তৈরিঃ
উত্তরঃ
নতুন বছরের নতুন জলে আনন্দ করে মাছ ধরতে যাই চল। বর্ষায় এই সুন্দর প্রকৃতিতে নদীর কূল ছাপিয়ে মাঠ ঘাট জলে থৈ থৈ করছে। মাঠে ঘাটে, কত পাখি, যেমন বক, মাছরাঙা, কুরুয়া তারা কেউ সার বেঁধে উড়ছে, কেউ মাছের আশায় বার বার জলে ছোঁ মারছে আর কেউ উড়ে উড়ে কাঁদছে। একদিকে মাছ না পাওয়া গেলে অন্যদিকে চল।
৪) কোনো উৎসব বা অনুষ্ঠানে তুমি খুব হৈচৈ আনন্দ করেছ আর মজা পেয়েছ । কী কী করলে সেই দিন তা দিনলিপির আকারে খাতায় লেখো।
উত্তরঃ
আজ ২৫শে বৈশাখ, কবিগুরুর জন্মতিথি। সকাল থেকেই আজ মনটা খুশিতে ভরে ছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে ধূতি-পাঞ্জাবি পড়ে স্কুলে চলে যাই। স্কুলে সকলে মিলে কবিগুরুর জন্মদিন পালন করি। গানে, আবৃত্তিতে, নৃত্যনাট্যে কবিগুরুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। এরপরে সকলে মিলে খিচুড়ি খাওয়া হয়। আমরা সব বন্ধুরা মিলে আমাদের স্কুলের বাংলা শিক্ষকের সাথে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে ঘুরতে যাই। এভাবেই আজকের দিনটা আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থেকে যাবে।
৫) মূল লেখাটা অন্য ভাষায়, কিন্তু নিজের ভাষায় তুমি পড়েছ আর দারুণ লেগেছে এমন দুটি লেখার নাম:
উত্তরঃ কাফকা গল্পসমগ্র এবং আরব্য রজনীর গল্প।
৬) একটি বৃষ্টির দিনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠিঃ
প্রিয় বন্ধু পাপান,
আশাকরি তুই ভালোই আছিস। আমিও বেশ ভালো আছি। অনেকদিন হলো তোর সাথে কথা হয় না; তাই তোকে চিঠি লিখতে বসলাম। গতকাল থেকে এখানে একনাগারে বৃষ্টি পড়ে চলেছে। গতকালও স্কুলে যেতে পারি নি; মনে হচ্ছে আজও যাওয়া হবে না। আজ তো সকালে দাদাও আমাকে পড়াতে আসতে পারে নি। মা বলেছে আজকে খিচুড়ি রান্না করবে। জানিস পাপান, আজকে আমি একটা কাগজের নৌকা বানিয়েছি। আমাদের বাড়ির সামনের খাল দিয়ে অনেক জল যাচ্ছে, ভাবছি সেই জলেই আজ নৌকাটা ভাসাবো। নৌকাতে তোর নাম-ঠিকানা লিখে দেবো; পেলে জানাস!
আজ এই পর্যন্তই থাক। কাকু-কাকিমাকে আমার প্রণাম জানাস, আর বুবানকে আমার অনেক ভালোবাসা দিস। বৃষ্টির দিনগুলি তুই কীভাবে কাটাচ্ছিস, তা জানাতে ভুলিস না কিন্তু।
ইতি
তোর প্রিয় বন্ধু অনুপম
পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে প্রশ্নের উত্তর : (WBNOTES.IN)
৭) কথায় বলে ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ – সেই বাঙালির পরিচয় গানটিতে কীভাবে ফুটে উঠেছে ?
উত্তরঃ বাঙালির প্রিয় খাদ্য হল মাছ ভাত। বাঙালিরা মাছ ধরতেও খুব ভালোবাসে। ‘পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে’ গল্পে যে গানের কথা বলা হয়েছে সেখানেও রাভা জনগোষ্ঠীর মানুষরা মাছ ধরতে যাচ্ছে। নতুন বছরে বর্ষার নতুন জলে যখন নদীর কূল ছাপিয়ে মাঠ ঘাট জলে থৈ থৈ করছে তখন তারা একসঙ্গে মাছ ধরতে চলেছে। একস্থানে মাছ না পাওয়া গেলে তারা অন্যস্থানে যেতেও রাজি। গল্পে উল্লেখ্য গানটির মাধ্যমে তাদের মাছ খেতে ভালো লাগার কথা ফুটে উঠেছে। বাঙালিরাও মাছ খেতে ভালোবাসে, তাদের যে কোনও আনন্দ অনুষ্ঠানের অঙ্গই হল মাছ। সেই মাছ প্রিয় বাঙালির পরিচয়ও গানটিতে কিছুটা হলেও ফুটে উঠেছে।
৮) বৃষ্টি কীভাবে প্রকৃতিকে বাঁচায় ?
উত্তরঃ বৃষ্টি হল প্রকৃতিতে জলের অন্যতম প্রধান উৎস। জল ছাড়া জীবজগতের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। বৃষ্টি না হলে প্রকৃতিতে খরা দেখা দেবে। বৃষ্টির জলে গাছপালা বেড়ে ওঠে, মাঠে ফসল ফলে। আর এই গাছপালার উপর নির্ভর করে সমস্ত প্রাণীজগৎ বেঁচে থাকে। বৃষ্টি না হলে সমস্ত উদ্ভিদকূল ও প্রাণীকূলই ধ্বংস হয়ে যাবে। এইভাবে বৃষ্টি প্রকৃতিকে বাঁচায়।
৯) ‘খরা’ বলতে কী বোঝায় ?
উত্তরঃ খরা বলতে বোঝায় অনাবৃষ্টি। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় জলের অভাবে মাটি, পুকুর, খাল-বিল, জলাশয় সব শুকিয়ে যায়। সূর্যের প্রচন্ড তাপে গাছপালা, পশুপাখি, মানুষ মারা যায়। চারিদিকে জলকষ্ট দেখা দেয়। এই অবস্থাকে খরা বলে।
১০) অনাবৃষ্টির ফলে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালার অবস্থা কেমন হয়েছিল ?
উত্তরঃ ‘পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে’ গল্পে অনাবৃষ্টির ফলে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা সব ধ্বংস হয়ে গেছিল।
১১) ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছে ব্যাঙ কী দেখল ?
উত্তরঃ ‘পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে’ গল্পে ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছে ব্যাঙ দেখল, সেখানে সবাই নানান ভোজ ও আনন্দ-উৎসবে ব্যস্ত। ভগবান তাদের স্ত্রী ও মন্ত্রীদের নিয়ে মহানন্দে দিন কাটাচ্ছে।
১২) প্রাসাদের দৃশ্য দেখে ব্যাঙ রাগে উত্তেজিত হয়ে পড়ল কেন ?
উত্তরঃ ‘পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে’ গল্পে প্রাসাদের দৃশ্য দেখে ব্যাঙ রাগে উত্তেজিত হয়ে পড়ল কারণ পৃথিবীতে খুব খরা হয়েছে। মানুষ, পশু, গাছপালা ধ্বংস হয়ে গেছে। অথচ ভগবান পৃথিবীর দুরাবস্থার দিকে নজর না দিয়ে তাদের স্ত্রী ও মন্ত্রীদের নিয়ে মহানন্দে নানান ভোজ ও আনন্দ-উৎসবে ব্যস্ত।
১৩) ভগবান ও তার রক্ষীরা মৌমাছি, বাঘ, মোরগের হাতে কীভাবে নাকাল হলো ?
উত্তরঃ ‘পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে’ গল্পে মৌমাছিরা রক্ষীদের মুখে হুল ফুটিয়ে দিয়েছিল। বাঘ তাদের খেয়ে নেবে বলে ভয় দেখিয়েছিল। মোরগ তার ডানা ঝাপটে ভয় দেখিয়েছিল। এইভাবে ভগবান ও তার রক্ষীরা মৌমাছি, বাঘ, মোরগের হাতে নাকাল হয়েছিল।
১৪) শিক্ষক /শিক্ষিকার সাহায্যে ‘বৃষ্টি’ নিয়ে প্রচলিত দুটি ছড়া ও দুটি গল্প সংগ্রহ করো ।
উত্তরঃ
‘বৃষ্টি’ নিয়ে প্রচলিত দুটি ছড়া হল –
ক) আয় বৃষ্টি ঝেপে ধান দেবো মেপে,
ধানের ভেতর পোকা খোকন সোনা বোকা ।
খ) বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এল বান,
শিবঠাকুরের বিয়ে হল তিন কন্যে দান ।
‘বৃষ্টি’ নিয়ে প্রচলিত দুটি গল্প হল-
ক) তালনবমী (ছোটগল্প)
খ) পথের পাঁচালী (উপন্যাস)