আকাশের দুই বন্ধু প্রশ্নের উত্তর । পঞ্চম শ্রেণি বাংলা
WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্য পাতাবাহার গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত আকাশের দুই বন্ধু গল্পের অনুশীলনীর বিবিধ প্রশ্নের উত্তর এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদান করা হলো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বিষয়ে বার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে শিক্ষার্থীরা এই আকাশের দুই বন্ধু প্রশ্নের উত্তর । পঞ্চম শ্রেণি বাংলা ভালো করে তৈরি করবে।
আকাশের দুই বন্ধু প্রশ্নের উত্তর :
ক) শূন্যস্থান পূরণ করো :
১) ওঁদের আকাশে উড়িয়ে —— যুদ্ধ হবে।
উঃ প্যাচখেলার।
২) ——চাইছে মায়ের কাছে?
উঃ খাবার।
৩) এমনি করে রোজ পৃথিবী —— হচ্ছে।
উঃ নতুন।
৪) ——- নিয়ে কে আর দয়া দেখায়।
উঃ আবর্জনা।
৫) কিন্তু একদিন——আসেই।
উঃ উৎসব।
৬) এবার বোধ হয় ——- খেলা শুরু হবে।
উঃ প্যাঁচের।
৭) আমরাতো – ওদের হাতের ——-।
উঃ গোলাম।
৮) ওদের হাতের ওই ——- আমাদের ভাগ্য।
উঃ সুতো।
৯) তার পরেই সেই ——- ঘটনা ঘটে গেল।
উঃ আশ্চর্য।
খ) সঠিক উত্তর নির্বাচন করোঃ
১) গল্পে একটি ঘুড়ি চাঁদিয়াল ও অন্যটি (মোমবাতি / পেটকাটা / মুখপোড়া)।
উঃ পেটকাটা।
২) ঘুড়ি আকাশে উড়িয়ে মানুষে (খেলা করে / আনন্দ করে / প্যাঁচ খেলে)।
উঃ প্যাচ খেলে।
৩) ঘুড়ির সাথে সুতো বাঁধা থাকে (বুক ফুটো করে / মাথা ফুটো করে / পেট ফুটো করে)।
উঃ বুক ফুটো করে।
৪) ঘুড়ির সুতো বাঁধা থাকে (হাতের / লাটাই / ছাদ) এর সাথে।
উঃ ঘুড়ির সুতো বাঁধা থাকে লাটাই-এর সাথে।
৫) পেটকাটাও দেখে যেন (মিটমিটিয়ে / চোখ মটকিয়ে/ পিটপিটিয়ে) চাঁদিয়ালকে।
উঃ পেটকাটাও দেখে যেন পিটপিটিয়ে চাঁদিয়ালকে।
গ) এলোমেলো শব্দগুলিকে সাজিয়ে অর্থপূর্ণ বাক্য তৈরিঃ
১) রং তাদের ছড়ানো বাহার কী গায়ের।
উঃ বাহার-ছড়ানো কী তাদের গায়ের রং।
২) নেই প্রাণও ওদের নেই ভালোবাসাও।
উঃ ওদের প্রাণও নেই, ভালোবাসাও নেই।
৩) কেউ ফিরিয়ে না তাকে দেখবে চোখ তখন।
উঃ তখন কেউ চোখ ফিরিয়ে দেখবে না।
৪) আর উৎসবে দুটো পাক আকাশে খায় ঘুড়ি ওই সেই।
উঃ আর সেই উৎসবে ওই দুটো ঘুড়ি পাক খায় আকাশে।
৫) আছে ঝরনা, পাহাড় নাকি আছে অনেক।
উঃ নাকি অনেক পাহাড় আছে, ঝরনা আছে।
৬) হত আমাদের আকাশটি ঘর-বাড়ি যদি।
উঃ আকাশটা যদি আমাদের ঘর-বাড়ি হত।
৭) দিকে এল সে খেয়ে চাঁদিয়ালের তিরবেগে।
উঃ তিরবেগে সে ধেয়ে এল, চাঁদিয়ালের দিকে।
৮) দুজনে টান আমরা প্রাণপণে মারি আয়।
উঃ আয়, আমরা প্রাণপণে টান মারি দুজনে।
৯) করছে মানুষগুলো নীচের কেমন দ্যাখ উল্লাস।
উঃ দ্যাখ নীচের মানুষগুলো কেমন উল্লাস করছে।
১০) বন্ধু যে না কেন আকাশ ওদেরও।
উঃ কেন না, আকাশ যে ওদেরও বন্ধু।
ঘ) অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দাওঃ
১) ঘুড়ি কী?
উঃ সুতোর সাহায্যে আকাশে ওড়ানো যায় এমনই এক কাগজের খেলনা হল ঘুড়ি।
২) ঘুড়িরা কাদের হাতের গোলাম?
উঃ ঘুড়িরা মানুষের হাতের গোলাম।
৩) ঘুড়ি দিয়ে মানুষ কী করে?
উঃ ঘুড়ি দিয়ে মানুষ আকাশে প্যাঁচের লড়াই খেলে।
৪) ইংরেজিতে ঘুড়িকে কী বলা হয়?
উঃ কাইট (Kite)।
৫) কী থেকে গাছ জন্ম নেয়?
উঃ। বীজ থেকে গাছ জন্ম নেয়।
৬) ঘুড়ি কীসের তৈরি হয়?
উঃ ঘুড়ি কাগজের তৈরি হয়।
৭) কাঁপকাঠি কাকে বলে?
উঃ ঘুড়ির বুকের কাঠিকে কাঁপকাঠি বলে।
৮) আকাশের দুই বন্ধুর নাম কী?
উঃ আকাশের দুটি বন্ধু হল দুটি ঘুড়ি— পেটকাটা ও চাঁদিয়াল।
৯) কখন ঘুড়িদের ধরার সাধ্য কারও থাকবে না?
উঃ যদি তারা একসঙ্গে সুতো উপড়ে আকাশে ভেসে যেতে পারে তখন তাদের ধরার সাধ্য কারও থাকবে না।
১০) কোন্ উৎসবে ঘুড়ি ওড়ে ?
উঃ বিশ্বকর্মা পুজো ও সরস্বতী পুজোতে ঘুড়ি ওড়ে।
১১) আকাশ থেকে চাঁদিয়ালের কী দেখতে সুন্দর লাগে?
উঃ আকাশ থেকে চাঁদিয়ালের নদী দেখতে সুন্দর লাগে।
১২) আকাশের দিকে তাকিয়ে তুমি কী কী দেখতে পাও?
উঃ আকাশের দিকে তাকিয়ে আমরা সূর্য, চাঁদ, তারা, পাখি, ঘুড়ি, এসব দেখতে পাই।
১৩) আকাশে তুমি কী কী উড়তে দেখেছ?
উঃ আমি আকাশে পাখি, ঘুড়ি, উড়োজাহাজ, হেলিকপ্টার প্রভৃতি উড়তে দেখেছি।
১৪) কোন্ কোন্ উৎসবে তুমি ঘুড়ি উড়তে দেখেছ?
উঃ বিশ্বকর্মা পুজো, সরস্বতী পুজো, বিভিন্ন সংক্রান্তিতে ঘুড়ি উড়তে দেখা যায়।
১৫) আকাশ কেমন থাকলে ঘুড়ি ওড়াতে সুবিধা হয়? ঘুড়ি ওড়াতে গেলেই বা কী কী লাগে?
উঃ মেঘহীন পরিষ্কার আকাশে থাকলে এবং বাতাস বইলে ঘুড়ি ওড়াতে সুবিধা হয়। ঘুড়ি ওড়াতে গেলে লাগে – ঘুড়ি, সুতো, লাটাই।
১৬) ঘুড়ি সাধারণত কোন্ কোন্ জিনিস দিয়ে তৈরি হয়? সুতোয় মাঞ্জা দিতে কী কী লাগে?
উঃ সাধারণত কাগজ, হালকা প্লাস্টিক, কাঠি প্রভৃতি জিনিস দিয়ে ঘুড়ি তৈরি হয়। সুতো দিয়ে বেঁধে ওড়ানো হয়। সুতোয় মাঞ্জা দিতে লাগে – আটা, রং, কাচের গুঁড়ো।
১৭) আকাশের দুই বন্ধু গল্পে দুটি জিনিস নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলেছে। অপ্রাণীবাচক দুটি জিনিস নিজেদের মধ্যে কথা বলেছে, এমন আর কোন্ গল্প তুমি জান?
উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড়োখবর গল্পে আমরা অপ্রাণীবাচক পাল ও দাঁড়ের কথোপকথন শুনতে পাই। গল্পে দেখি এক মহাজনি নৌকার পাল ও দাঁড়ের মধ্যে ঝগড়া বাধে। কে বেশি বড়ো, কার গুরুত্ব বেশি এই ছিল ঝগড়ার বিষয়। শেষে মাঝি দুজনের মধ্যে ঝগড়ার অবসান ঘটায়।
১৮) গল্পে আকাশ কীভাবে দুটি বন্ধু-ঘুড়ির বন্ধু হয়ে উঠল ?
উঃ আকাশে কোনো লড়াই নেই, কোনো বাধা নেই। নিজেদের মতো ভাসতে পারা যায়। তাই আকাশ উপড়ে যাওয়া ঘুড়ি দুটিরও বন্ধু হয়ে উঠল।
ঙ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তরঃ
১) ঘুড়ির উৎসবে কীভাবে ঘুড়ি দুটি ওড়ে ?
উঃ উৎসবের দিন বাজনা বাজে, মাঠে, ছাদে, পথে, প্রান্তরে ঘুড়ির উৎসবে আকাশ উপচে পড়ে। সেই উৎসবে ঘুড়ি আকাশে পাক খায়। এ বাড়ির ছাদ, ও বাড়ির ফাঁকা জমি থেকে চাঁদিয়াল আর পেটকাটা ঘুড়ি দুটি ওড়ে। ঘুড়ি দুটির বুক ফুটো করে সুতো বাঁধা হয়েছে, সেই বাঁধা সুতো লাটাই ঘুরে খুলছে আর ওদের হাওয়ায় ভাসিয়ে দিচ্ছে। আর ঘুড়ি দুটি ভাসতে ভাসতে উড়ে যাচ্ছে।
২) ভোকাট্টা কী ?
উঃ ভোকাট্টা হল মানুষের তৈরি একটি উল্লাসিত হওয়ার শব্দ। মানুষ আকাশে ঘুড়ির প্যাচ খেলার সময় যার ঘুড়ি অন্যের ঘুড়িকে কেটে দেয় সে তখন যুদ্ধ জেতার আনন্দে ভোকাট্টা বলে চিৎকার করে ওঠে।
৩) পেটকাটা ও চাঁদিয়াল ঘুড়ি দুটি নিজেদের কী দুঃখের কথা বলছিল?
উঃ চাঁদিয়াল ঘুড়িটি পেটকাটাকে বলছিল যে আকাশে প্যাঁচের লড়াই এর পরই কেউ একজন ভোকাট্টা হয়ে হারিয়ে যাবে। তখন কে যে বিপদে পড়বে তা কেউ জানে না। আকাশটা যদি তাদের ঘর-বাড়ি হত তাহলে তারা শুধুই উড়তে পারত। এর উত্তরে পেটকাটা বলে যে তারা বড়ো অসহায়, মানুষের হাতের সুতো যেভাবে তাদের চালায় তারা সেভাবেই চলে। তারা মানুষের হাতের গোলাম।
৪) ঘুড়িদুটি মুক্ত হবার জন্য কী উপায় ভেবেছিল?
উঃ আকাশের দুই বন্ধু’ গল্পে পেটকাটা ও চাঁদিয়াল ঘুড়ি দুটি বুঝেছিল মানুষের হাতের ওই সুতোই তাদের ভাগ্য। তাই তারা প্যাচের সময় জট পাকিয়ে সুতো ছিঁড়ে ফেলতে চেয়েছিল। একসঙ্গে দুজনে উড়ে যেতে চেয়েছিল আকাশে। ভেবেছিল এতেই তারা রক্ষা পেয়ে যাবে, আকাশ তাদের সহায় হবে। তখন এই দুই মুক্তি পাওয়া বন্ধুকে ধরার সাধ্য কারোর থাকবে না।
৫) ‘সে তখন একটা আবর্জনা’—কার কথা বলা হয়েছে? কীভাবে সে আবর্জনা হয়ে যায় ?
উঃ এখানে কেটে যাওয়া ঘুড়ির কথা বলা হয়েছে। ঘুড়ি কাগজের তৈরি একটি খেলনা, তাদের প্রাণ নেই। কে তাদের বানিয়েছে কেউ তার খবর রাখে না। দোকান থেকে তাদের কিনে আনা হয় উৎসবের দিনে ওড়ানোর জন্য। লাট খেতে খেতে তারা আকাশে লড়াই করে তারপর ভোকাট্টা হয়ে কেউ গাছে, ইলেকট্রিকের তারে, কারও বাড়ির ছাদে অথবা নদীর জলে লুটিয়ে পড়ে। নদীর জলে পড়ে বুকের কাপকাঠি ভেঙে সে তখন একটা ফাটা কাগজের টুকরো হয়ে আবর্জনা হয়ে যায়।
৬) বিপদ এলে কীভাবে রক্ষা পেতে হয় বলে ঘুড়ি দুটি মনে করেছিল ?
উঃ পেটকাটা ও চাঁদিয়াল ঘুড়ি দুটি বুঝেছিল বিপদ এলে ভয় পেতে নেই। একসঙ্গে লড়াই না করলে বিপদ থেকে নিস্তার পাওয়া যায় না। তাই মানুষের প্যাঁচে ফেলার খেলায় তারা একসঙ্গে লড়াই করেছিল।
৭) চাঁদিয়াল ঘুড়িটি পৃথিবীর কী কী বিষয় কার কাছে জেনেছিল ?
উঃ চাঁদিয়াল ঘুড়িটিকে যে ছেলেটি ওড়াচ্ছে তার ভাই যখন মাস্টারমশাইয়ের কাছে পড়ছিল, তখন ঘুড়িটি পৃথিবীর কথা শুনেছে। সে শুনেছে পৃথিবীটা খুবই সুন্দর। সেখানে অনেক পাহাড়, ঝরনা, গাছ, ফুল আছে। আবার কোথাও আছে শুধুই ঠান্ডা বরফ।
৮) তারপরেই সেই আশ্চর্য ঘটনা ঘটে গেল’— আশ্চর্য ঘটনাটি কী লেখো। এই ঘটনায় কারা হেরে গেল আর কারা জিতল ?
উঃ আশ্চর্য ঘটনাটি হল ঘুড়ির প্যাচের লড়াই এর সময় সুতো ছিঁড়ে সত্যি সত্যি চাঁদিয়াল আর পেটকাটা দুটি ঘুড়ি একসঙ্গে উড়ে গেল খুশিতে মাথা নাড়তে নাড়তে। দুটি বন্ধু যখন আকাশে উড়ে গেল তখন ঘুড়ি ওড়াতে থাকা দুটি দলই হতভম্ব হয়ে আকাশের দিকে চেয়ে রইল। এই ঘটনায় ঘুড়ি ওড়ানো দুটি মানুষের দলই হেরে গেল। আর জিতে গেল দুই বন্ধু ঘুড়ি পেটকাটা আর চাঁদিয়াল ।
৯) ‘এমনি করে পৃথিবী রোজ নতুন হচ্ছে– লেখক কীভাবে পৃথিবী নতুন হচ্ছে বলে লিখেছেন?
উঃ লেখক গল্পে বলেছেন যে, একটি বীজ মাটিতে পড়ে তার থেকে নতুন গাছ জন্ম নেয় আমরা সেটা দেখেছি। ছোট ধীরে ধীরে সবুজ পাতা মেলে, তাতে ফুলের কুঁড়ি দেখা দেয় ফুলও ফোটে আবার পাখির বাসায় না । ডি দেয় ডিম ফোটে, পাখির ছানারা কিচির মিচির করে ডাক দেয়। হাঁ করে মায়ের কাছে খাবার চায়। একদিন তার রড়ো হয়ে আকাশে ডানা মেলে ওড়ে, একটি সুন্দর পাখি হয়ে ওঠে। আমরা তাদের চোখ মেলে অবাক হয়ে দেখি আর মনে মনে বাঃ বলে তারিফ করি। এভাবেই রোজ অসংখ্য প্রাণ জন্ম নেয়। নতুন ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, এভাবেই রোজ পৃথিবী নতুন করে গড়ে ওঠে।
চ) ব্যাখ্যাধর্মী উত্তর দাওঃ
১) গল্পে প্রকৃতির বৈচিত্র্যময়, সুন্দর রূপ কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উঃ ‘আকাশের দুই বন্ধু’ গল্পটিতে লেখক দুটি ঘুড়ির বলা কথার মধ্য দিয়ে প্রকৃতির এক বৈচিত্র্যময় রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন। যেখানে বলা হয়েছে – পৃথিবীটা খুবই সুন্দর। এখানে পাহাড়, ঝরনা, গাছ ও ফুল আছে। কোথাও আবার বরফও আছে। বীজ মাটিতে পুঁতলে, তার থেকে যেমন সুন্দর গাছ জন্মায়, গাছটি ধীরে ধীরে সবুজ পাতা ছড়িয়ে হাওয়ায় দোলে। ফুলের কুঁড়ি উঁকি মারে, ফুল ফোটে। প্রকৃতিতে ঘটা এই সব ঘটনার বর্ণনাতেই গল্পে প্রকৃতির বৈচিত্র্যময় রূপ ফুটে উঠেছে।
২) পেটকাটা ও চাঁদিয়ালের কীভাবে দেখা হয়েছিল? তাদের বন্ধুত্বই বা কীভাবে গড়ে উঠল ?
উঃ এ বাড়ির ছাদ আর ও বাড়ির একফালি ফাঁকা জমি থেকে পেটকাটা ও চাঁদিয়াল ঘুড়ি দুটিকে ওড়ানো হয়েছিল। হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে ওদের দেখা হয়েছিল। দুই ঘুড়ির দুই মালিকের লাটাই থেকে সুতো ছাড়ার খেলায় তারা উঠে চলেছে। আরও উপরে উঠতে উঠতে ওরা ঘুরে ঘুরে দেখছে একে অপরকে। তারা আড়চোখে দেখতে থাকে, দেখতে দেখতে তারা দুলছে আর ভাবছে, তারা যেন কত দিনের বন্ধু।
৩) বন্ধুত্বকে অটুট রাখতে তারা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল?
উঃ। বন্ধুত্বকে অটুট রাখতে ঘুড়ি দুটি নিজেরা নিজেদের সুতোয় দুজনে জড়িয়ে জট পাকিয়ে নিয়ে প্যাচের সময় সুতো ছিঁড়ে ফেলে আকাশে উড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ভেবেছিল এতেই তারা রক্ষা পাবে।
৪) তাদের পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত কীভাবে সফল হল ?
উঃ ঘুড়ি দুটি নিজেদের সুতো জড়িয়ে প্রাণপণ টানাটানি করতে গিয়ে দুজনের বাঁধন আরও শক্ত হয়ে গেল। ফলে দুজনেই সুতো ছিঁড়ে সত্যি সত্যি উড়ে গেল। খুশিতে মাথা নাড়তে নাড়তে দুই বন্ধু একসঙ্গে আকাশে উড়ে গেল।
৫) গল্পে প্রকৃতির বৈচিত্র্যময়, সুন্দর রূপ কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উঃ আকাশের দুই বন্ধু গল্পে শৈলেন ঘোষ দুটি ঘুড়ির বন্ধুত্বের কথা প্রসঙ্গে অনেক স্থানেই প্রকৃতির সৌন্দর্যের কথা, বৈচিত্র্যের কথা তুলে ধরেছেন। বীজ থেকে কীভাবে গাছের জন্ম হয়, তারপর সেই গাছে ফুল ফোটে তার বর্ণনা রয়েছে এই গল্পে। আবার গাছে বাসা বাঁধে পাখিরা। তাদের ডিম ফুটে পাখির ছানা জন্ম নেয়, ডানা মেলে আকাশে ওড়ে। এইভাবে রোজ পৃথিবী নতুন রূপে ধরা দেয়। এ ছাড়া, গল্পে ঘুড়িদের কথোপকথনের মাধ্যমে প্রকৃতির সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়েছেন লেখক। পেটকাটা আর চাঁদিয়াল আকাশ থেকে নীচের নদীর সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছে। চাঁদিয়াল একটি ছেলের মাস্টারমশায়ের মুখে শুনেছে, পৃথিবীটা খুব সুন্দর। অনেক পাহাড়, ঝরনা, গাছ, ফুল, আছে এই পৃথিবীতে। আবার কোথাও শুধু বরফ। এভাবেই এই গল্পে পৃথিবীর সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যের কথা বর্ণিত হয়েছে।
৬) পেটাকাটা ও চাঁদিয়ালের কীভাবে দেখা হয়েছিল? তাদের বন্ধুত্ব বা কীভাবে গড়ে উঠল?
উঃ ঘুড়ি ওড়ার উৎসবে আকাশে অনেক ঘুড়ি উড়ছিল। আকাশে অনেক ঘুড়ির মধ্যে দুটি ঘুড়ি ছিল চাঁদিয়াল আর পেটকাটা। এ বাড়ির ছাদ ও বাড়ির একফালি ফাঁকা জমি থেকে ওদের ওড়ানো হচ্ছিল। আকাশে ভাসতে ভাসতে উড়তে উড়তে ওদের দেখা হয়েছিল।
চাঁদিয়াল ও পেটকাটা দুটো ঘুড়িই অনেক উঁচুতে উড়তে উড়তে একে অপরকে দেখতে থাকে। দেখতে দেখতে ভাবে অনেকদিনের বন্ধু। ক্রমে তাদের মধ্যে আকাশ, পৃথিবীর সৌন্দর্য, মানুষদের হাতে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন, মুক্তির আশা ও পরিকল্পনা প্রভৃতি নানা বিষয়ে কথাবার্তা হতে থাকে। এইভাবে তাদের দুজনের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।
৭) বন্ধুত্বকে অটুট রাখতে তারা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল?
উঃ আকাশে উড়তে উড়তে পেটকাটা আর চাঁদিয়াল বুঝতে পারছিল দুইদল মানুষ তাদের প্যাঁচ খেলিয়ে নিজেরা আনন্দ পাবে। আর ঘুড়িদের মধ্যে যে প্যাঁচ কেটে পড়ে যাবে তার শোচনীয় পরিণতির কথা ভেবে দুটি ঘুড়িই শঙ্কিত হয়ে ওঠে। তারা ঠিক করে প্যাঁচের সময়ে তারা দুজনেই সুতো ছিঁড়ে একসঙ্গে আকাশে অনেক উঁচুতে উড়ে যাবে। মানুষের হাতের সুতো ছিঁড়ে তাদের নাগালের বাইরে চলে যাবে। মানুষের হাতের সুতো ছিঁড়ে তাদের নাগালের বাইরে চলে যাবে আর আকাশ হবে তাদের বন্ধু। তারা আত্মরক্ষার জন্য এই পরিকল্পনা করেছিল।
৮) তাদের পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত কীভাবে সফল হল?
উঃ আকাশের দুই বন্ধু গল্পে দুই দল মানুষ পেটকাটা আর চাঁদিয়াল এই দুই উড়ন্ত ঘুড়িতে প্যাঁচ লাফিয়ে মজা দেখছিল। পেটকাটার সুতোর আচমকা টান পড়তেই সে ধেয়ে এসেছিল চাঁদিয়ালের দিকে। আর চাঁদিয়ালও ঝাঁপিয়ে পড়ল পেটকাটার সুতো জড়িয়ে। দুজনেই ঠিক করল, তারা ভয় পাবে না। তারা তাদের পূর্ব পরিকল্পনা মতো বাঁচন লড়াই করে একজোট হয়ে সুতো ছিঁড়ে দুজনেই আকাশে উড়ে দিয়েছিল।
৯) গল্পে আকাশ কীভাবে দুটি বন্ধু-ঘুড়ির বন্ধু হয়ে উঠল?
উঃ শৈলেন ঘোষের আকাশের দুই বন্ধু গল্পে দেখি পেটকাটা আর চাঁদিয়াল ঘুড়ি দুটি আকাশে উড়তে উড়তে তাদের বন্ধুত্ব হয়ে যায়। তাদের ইচ্ছা হয়, মানুষের গোলামি ত্যাগ করে যদি তারা শুধু এরকমই আকাশের বুকে উড়ে বেড়াতে পারত তাহলে কত ভালো হত। শেষ পর্যন্ত মানুষের লড়িয়ে দেওয়া প্যাঁচের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে প্রাণপণ লড়াই করে তারা জয়ী হয়েছে। একসঙ্গে সুতো ছিঁড়ে দুজনেই উড়ে গেছে নীল বিস্তীর্ণ আকাশের বুকে। এখন আকাশই তাদের সহায়, আকাশই তাদের বন্ধু।