bachho-kake-bole

বাচ্য কাকে বলে? বাচ্যের শ্রেণিবিভাগ করো । দশম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ

WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে বাংলা ব্যাকরণ বিষয়ের বাচ্য থেকে বাচ্য কাকে বলে? বাচ্যের শ্রেণিবিভাগ করো । দশম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ সামগ্রিক আলোচনাটি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদান করা হলো। মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষা দিতে চলা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই বাচ্য সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরগুলি তৈরি করে তাদের মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।  

বাচ্য কাকে বলে? বাচ্যের শ্রেণিবিভাগ করো : 

১) বাচ্য কাকে বলে?
উঃ বাচ্য শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো কথনীয়। কোন বাক্যের সমাপিকা ক্রিয়া, কর্তা ও কর্মের সম্পর্ক ঠিক কীভাবে ঘটেছে, বাক্যের যে লক্ষণ বা প্রকাশভঙ্গি থেকে তা জানা যায় তাকে বাচ্য বলে।
২) বাচ্য কত প্রকার ও কী কী?
উঃ বাংলা ভাষায় বাচ্য চার প্রকার। যথা-
১)কর্তৃবাচ্য
২)কর্মবাচ্য
৩)ভাববাচ্য
৪)কর্মকর্তৃবাচ্য।
৩) কর্তৃবাচ্য কাকে বলে?
উঃ বাক্যে যখন  উদ্দেশ্য ও কর্তা অভিন্ন হয় এনং ক্রিয়া সে কর্তার প্রাধান্য মেনে তার সঙ্গে সংগতি রক্ষা করে, তখন তাকে কর্তৃবাচ্য বলে।
যেমনঃ অনন্যা গান করে।
৪) সকর্মক কর্তৃবাচ্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ কর্তৃবাচ্যে সমাপিকা ক্রিয়াটি সকর্মক হলে, সেই কর্তৃবাচ্যকে সকর্মক কর্তৃবাচ্য বলা হয়।
যেমনঃ অনন্যা বই পড়ে।
৫) অকর্মক কর্তৃবাচ্য কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উঃ কর্তৃবাচ্যের সমাপিকা ক্রিয়াটি যদি অকর্মক হয়, তবে সেই কর্তৃবাচ্যকে অকর্মক কর্তৃবাচ্য বলে।
যেমনঃ অনন্যা খায়।
৬) কর্মবাচ্য কাকে বলে?
উঃ বাক্যের বিধেয় অংশে থাকা কর্ম, কর্তার ভূমিকা গ্রহণ করলে এবং ক্রিয়াপদ তার সঙ্গে সংগতি রক্ষা করলে, তাকে কর্মবাচ্য বলে।
যেমনঃ অনন্যার দ্বারা ফুল তোলা হয়।
৭) ভাববাচ্য কাকে বলে?
উঃ যে বাক্যে ক্রিয়া বিশেষ্যরুপ গ্রহণ করে ও বাক্যে প্রধানভাবে অবস্থান করে এবং ক্রিয়ার ভাবটিই অর্থগতভাবে প্রধান হয়, তাকে ভাববাচ্য বলে।
যেমনঃ অনন্যার কোথায় থাকা হয়।
৮) কর্মকর্তৃবাচ্য কাকে বলে?
উঃ যে বাচ্যে কর্তা অনুপস্থিত থাকে এবং কর্মই কর্তারূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে কর্মকর্তৃবাচ্য বলে।
যেমনঃ কলমটা চলছে না।

৯) কর্তৃবাচ্য থেকে কর্মবাচ্যে পরিবর্তনের পদ্ধতিগুলি লেখো।

উঃ কর্তৃবাচ্য থেকে কর্মবাচ্যে পরিবর্তন করতে হলে-

ক) কর্মটি প্রাণীবাচক হলে দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক যোগ করতে হবে।
যেমনঃ অনন্যা গান করছে> অনন্যার দ্বারা গান করা হচ্ছে।

খ) কর্মটি অপ্রাণীবাচক হলে একই রকম থাকবে।
যেমনঃ চাঁদ দেখেছে?> চাঁদ দৃষ্ট হয়েছে?

গ) ক্রিয়ার মূল ধাতু ক্রিয়াবিশেষ্য হয়ে যাবে।
যেমনঃ দেখ>দেখা, খা> খাওয়া

১০) কর্মবাচ্য থেকে কর্তৃবাচ্যে পরিবর্তনের পদ্ধতিগুলি লেখো।

উঃ কর্মবাচ্য থেকে কর্তৃবাচ্যে পরিবর্তন করতে হলে-

ক) কর্মবাচ্যে কর্তার “র”, “এর”, “দের” বিভক্তি এবং “দ্বারা”, “দিয়া”, “কর্তৃক” অনুসর্গ লোপ করতে হবে।

খ) করণ কারককে কর্তৃকারকে পরিবর্তন করতে হবে।

গ) কর্তৃপদকে কর্মপদে পরিণত করতে হবে।

১১) কর্তৃবাচ্য থেকে ভাববাচ্যে পরিবর্তনের পদ্ধতিগুলি লেখো।

উঃ কর্তৃবাচ্য থেকে ভাববাচ্যে পরিবর্তন করতে হলে-

ক) কর্তৃ পদটিতে “র”, “এর”, “কে” বিভক্তি যুক্ত করতে হবে।

খ) “হ” ও “য” ধাতু দিয়ে সমাপিকা ক্রিয়া গঠিত হয় এবং ক্রিয়াটি প্রথম পুরূষের রূপ নেয়।
যেমনঃ কেমন ঘুমালে?> কেমন ঘুম হল?

গ) সমাপিকা ক্রিয়ার ধাতুর সঙ্গে আ, আনা, অন ইত্যাদি কৃৎপ্রত্যয় যোগে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য গঠিত হয়।
যেমনঃ সে শুনেছে> তার শোনা হয়েছে।

১২) ভাববাচ্য থেকে কর্তৃবাচ্যে পরিবর্তনের পদ্ধতিগুলি লেখো।

উঃ ভাববাচ্য থেকে কর্তৃবাচ্যে পরিবর্তন করতে হলে-

ক) ভাববাচ্যে কর্তার “র”, “এর”, “দের”, “কে” বিভক্তির লোপ ঘটিয়ে কর্তৃপদকে “শূণ্য” বিভক্তিযুক্ত করতে হবে।

খ) ভাববাচ্যের ক্রিয়াকে কর্তৃবাচ্যের শর্তানুসারে মৌলিক ক্রিয়ায় পরিণত করতে হবে।

১৩) বাচ্য পরিবর্তন বলতে কী বোঝ ?

উঃ কোন বাক্যের অর্থগত পরিবর্তন সাধন না করে তাকে এক বাচ্য থেকে অন্য বাচ্যে রূপান্তরকেই বাচ্য পরিবর্তন বলে।  কর্তৃবাচ্যকে কর্ম ও ভাববাচ্যে, কর্ম ও ভাববাচ্যকে কর্তৃবাচ্যে রূপান্তর করা যায়। কর্মবাচ্যকে ভাববাচ্যে রূপান্তরিত করা যায় না। আবার কর্মকর্তৃবাচ্যেরও রূপান্তর হয় না।

 

নির্দেশানুসারে বাচ্য পরিবর্তন করোঃ-

 

১) লোকটি কাশিতে কাশিতে আসিল। (ভাববাচ্য)

উঃ লোকটির কাশিতে কাশিতে আসা হইল।

২) অপূর্ব রাজি হইয়াছিল। (কর্মবাচ্য)

উঃ অপূর্বর রাজি হওয়া হইয়াছিল।

৩) সে ট্রেনে চাপিয়া বসিল। (ভাববাচ্য)

উঃ তাহার ট্রেনে চাপিয়া বসা হইল।

৪) ইচ্ছা করিলে আমি তোমাকে টানিয়া নীচে নামাইতে পারি। (কর্মবাচ্য)

উঃ ইচ্ছা হইলে আমা কর্তৃক তোমাকে টানিয়া নীচে নামানো যাইতে পারে।

৫) তার যে বর্মায় আসা হয়েছে এ খবর সত্য। (কর্তৃবাচ্য)

উঃ সে যে বর্মায় এসেছে এ খবর সত্য।

৬) তাহার অনুভব করা হইল। (কর্তৃবাচ্য)

উঃ সে অনুভব করিল।

৭) আমি এখন তবে চললুম কাকাবাবু। (ভাববাচ্য)

উঃ আমার এখন তবে চলা হল কাকাবাবু।

৮) এককালে বাংলায় তাকে বলা হত ঝরনা কলম। (কর্তৃবাচ্য)

উঃ এককালে বাংলায় তাকে বলত ঝরনা কলম।

৯) হিমালয়ের গুহাতে থাকেন। (ভাববাচ্য)

উঃ হিমালয়ের গুহাতে থাকা হয়।

১০) ওর লেখক মেসো ছাপিয়ে দিয়েছে। (কর্মবাচ্য)

উঃ ওর লেখক মেসো কর্তৃক ছাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

১১) মেসো গল্পটি নিয়ে চলে গেলেন। (কর্মবাচ্য)

উঃ মেসো কর্তৃক গল্পটি নিয়ে চলে যাওয়া হল।

১২) ওর লেখক মেসো ছাপিয়ে দিয়েছে। (কর্মবাচ্য)

উঃ ওর লেখক মেসো ছাপিয়ে দিয়েছেন।

১৩) নতুন করে লিখেছেন। (ভাববাচ্য)

উঃ নতুন করে লেখা হয়েছে।

১৪) সেই মেয়েটির মৃত্যু হলো না।(কর্তৃবাচ্য)

উঃ সেই মেয়েটি মারা গেল না।

১৫) শিশুরা খেলছিল মায়ের কোলে। (ভাববাচ্য)

উঃ শিশুদের মায়ের কোলে খেলা হচ্ছিল।

১৬) ক্ষমা করো। (ভাববাচ্য)

উঃ ক্ষমা করা হোক।

১৭) বড়োরা শিখিয়ে দিয়েছিলেন। (কর্মবাচ্য)

উঃ বড়োদের দ্বারা শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

১৮) পালকের কলমও আর চোখে পড়ে না। (কর্তৃবাচ্য)

উঃ পালকের কলমও আর চোখে দেখি না।

১৯) এই নেশা পেয়েছি আমি শরৎদার কাছ থেকে। (কর্মবাচ্য)

উঃ এই নেশা আমি শরৎদা কর্তৃক প্রাপ্ত হয়েছি।

২০) হিমালয়ের গুহাতে থাকেন। (ভাববাচ্য)

উঃ হিমালয়ের গুহাতে থাকা হয়।

LINK TO VIEW PDF FILE (ONLY FOR SUBSCRIBERS)

বাচ্য কাকে বলে? বাচ্যের শ্রেণিবিভাগ করো

দশম শ্রেণির মাধ্যমিক বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক নোট দেখতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক করতে হবে 

বাচ্য কাকে বলে? বাচ্যের শ্রেণিবিভাগ করো

মাধ্যমিকের বিবিধ বিষয়ের সাজেশন দেখতে নিম্নের ছবিতে ক্লিক/টাচ করতে হবে 

বাচ্য কাকে বলে? বাচ্যের শ্রেণিবিভাগ করো

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি করার প্রচেষ্টা করবেন না !
Scroll to Top