ছন্দে শুধু কান রাখো প্রশ্ন উত্তর । সপ্তম শ্রেণির বাংলা
সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা ছন্দে শুধু কান রাখো প্রশ্ন উত্তর প্রদান করা হলো। আমাদের WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে প্রদান করা এই প্রশ্নের উত্তরগুলি তৈরি করে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে। আমাদের নোট বিভাগে সপ্তম শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক সমস্ত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হয়েছে।
ছন্দে শুধু কান রাখো প্রশ্ন উত্তর । সপ্তম শ্রেণির বাংলা :
কবিতার বিষয় সংক্ষেপঃ
আলোচ্য কবিতায় কবি বলেছেন যে, আমাদের চারপাশের সকল কিছুই ছন্দে বাঁধা। এই ছন্দ যেনো একপ্রকার পদ্যবন্ধ। প্রকৃতির এই সুমহান সৃষ্টির প্রতিটি কণাতেই যেনো ছন্দ লুকিয়ে আছে বলে কবি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, আমরা যদি সকল প্রকার দ্বন্দ্ব ভুলে কান ও মন দিয়ে শুনি তবে সব কিছুর মধ্যেই আমরা ছন্দ উপলব্দধি করতে পারবো। কিন্তু আমরা যদি ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত থাকি তবে আমাদের পক্ষে কোনো ছন্দ শোনা কখনোই সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে কবি বিবিধ ছন্দের কথা তুলে ধরেছেন। যেমন- ঝড় বাদল, জোছনা, পাখির কলতান, ঝিঁঝির ডাক, নদীর স্রোত, মোটরের চাকা, রেকগাড়ির চাকা, নৌকা-জাহাজের পাড়ি দেওয়া , ঘড়ির কাটার চলা, দিন-রাতের সংঘটন প্রভৃতি। এই সকল ছন্দ কান ও মন দিয়ে উপলবদ্ধি করতে পারলেই আমাদের জীবন সহজ হয়ে উঠবে এবং আমরা আমাদের জীবনকে পদ্যময় করে তুলতে পারবো।
শব্দার্থঃ
মন্দ= খারাপ , মন= হৃদয়, দ্বন্দ্ব= সংঘাত, জোছনা= চাঁদের আলো, ছন্দহীন= ছন্দ নেই যাতে, ভুবন= পৃথিবী, সংকেত= ইশারা, মজা= আনন্দ, পদ্য= ছন্দবদ্ধ রচনা, পদ্যময়= পদ্য বা কবিতার মতো
কবিতা থেকে কিছু গুরুত্বপুর্ণ প্রশ্নোত্তরঃ
১) “মন্দ কথায় কান দিয়ো না”- মন্দ কথার প্রতি কবির কীরূপ মনোভাব কবিতায় ব্যক্ত হয়েছে?
উত্তরঃ কবি “অজিত দত্ত” রচিত “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতা থেকে গৃহীত অংশে কবি বলেছেন যে, মন্দ কথা যদি আমাদের মনে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করে তবে আমরা ছন্দ শুনতে পারবো না। তাই কবি মন্দ কথায় কান দিতে নিষেধ করেছেন।
২) “কেউ লেখেনি আর কোথাও”- কোন লেখার কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ কবি “অজিত দত্ত” রচিত “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতা থেকে গৃহীত অংশে কবি বলেছেন যে, নদীর স্রোতের ছন্দ যদি আমরা মন দিয়ে উপলব্দধি করি তবে বুঝতে পারবো যে তেমন ছড়া ইতিপূর্বে আর কেউ কখনো লেখেনি।
৩) “চিনবে তারা ভুবনটাকে”- কারা কীভাবে ভুবনটাকে চিনবে?
উত্তরঃ কবি “অজিত দত্ত” রচিত “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতা থেকে গৃহীত অংশে কবি বলেছেন যে, কান ও মন দিয়ে আমাদের চতুর্দিকের সকল ছন্দ যদি আমরা শুনতে পারি তবে আমরা আমাদের এই ভুবন অর্থাৎ বিশ্বকে প্রকৃত রূপে চিনতে সক্ষম হবো।
৪) “পদ্য লেখা সহজ নয়”- পদ্য লেখা কখন সহজ হবে বলে কবি মনে করেন?
উত্তরঃ কবি “অজিত দত্ত” রচিত “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতা থেকে গৃহীত অংশে কবি বলেছেন যে, জীবনের সকল ছন্দ হৃদয় দিয়ে উপলবদ্ধি করতে পারলে আমাদের জীবন পদ্যময় হয়ে উঠবে। আর তখনই আমাদের পক্ষে পদ্য লেখা সহজ হয়ে উঠবে।
৫) “ছন্দ শোনা যায় নাকো”- কখন কবির ভাবনায় আর ছন্দ শোনা যায় না?
উত্তরঃ কবি “অজিত দত্ত” রচিত “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতা থেকে গৃহীত অংশে কবি বলেছেন যে, সকল প্রকার দ্বন্দ থেকে নিজেদের বিরত রাখতে না পারলে আমাদের পক্ষে কখনোই কোনো ছন্দ শোনা সম্ভব হবে না।
১) ঠিক উত্তর বেছে নিয়ে লেখোঃ
১.১) ছন্দে বাঁধা- খ) রাত্রি-দিন
১.২) জীবন হবে- ঘ) পদ্যময়
১.৩) ‘দিন দুপুরে_____ ডাকে’- খ) পাখির
২) নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাওঃ
৩ ২.১) ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ কবিতায় কবি কোন কথায় কান দিতে নিষেধ করেছেন?
উত্তরঃ কবি “অজিত দত্ত” তাঁর “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতায় মন্দ কথায় কান দিতে নিষেধ করেছেন।
২.২) ‘ছন্দ শোনা যায় নাকো’।- কখন ছন্দ শোনা যায় না?
উত্তরঃ কবি “অজিত দত্ত” তাঁর “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতায় বলেছেন যে, দ্বন্দ্ব ভুলে মন না দিলে ছন্দ শোনা যায় না।
২.৩) ‘কেউ লেখেনি আর কোথাও’- কোন প্রসঙ্গে কবি একথা বলেছেন?
উত্তরঃ কবি “অজিত দত্ত” তাঁর “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতায় বলেছেন যে, নদীর স্রোতের ছন্দ যদি আমরা আমাদের মনের মাঝে উপলব্ধি করতে পারি তবে আমরা বুঝতে পারবো যে, তেমন ছড়া আর কেউ কোথাও লেখেনি।
৩) নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাওঃ
৩.১) ‘মনের মাঝে জমবে মজা’।- মনের মধ্যে কীভাবে মজা জমে ওঠে?
উৎসঃ
কবি “অজিত দত্ত” রচিত “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গ্রহণ করা হয়েছে।
মনের মধ্যে জমে ওঠা মজাঃ
কবি বলেছেন যে, আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের মাঝেই ছন্দ লুকিয়ে রয়েছে। কিন্তু সেই ছন্দকে মনের মাঝে উপলবধি করতে হলে আমাদের কান ও মন দিয়ে প্রকৃতির ছন্দের সংকেতকে আত্মস্থ করতে হবে। তাহলেই আমরা আমাদের এই ভুবনটাকে নতুন করে চিনতে পারবো। আর তখনই আমাদের মনের মাঝে মজা জমবে ও আমাদের জীবন পদ্যময় হয়ে উঠবে।
৩.২) ‘পদ্য লেখা সহজ নয়’- পদ্য লেখা কখন কঠিন হয়ে ওঠে?
উৎসঃ
কবি “অজিত দত্ত” রচিত “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি চয়ন করা হয়েছে।
পদ্য লেখার কঠিনতাঃ
কবি তার এই কবিতায় অত্যন্ত দক্ষতার সাথে প্রকৃতির কাব্যিক ছন্দের সাথে পাঠককূলের পরিচয় করিয়েছেন। কবি দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ের সাথে জানিয়েছেন যে, আমরা যদি আমাদের লৌকিক দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ ভুলে প্রকৃতির ছন্দে অবগাহন করতে না পারি, আমরা যদি আমাদের মন-প্রাণ দিয়ে প্রকৃতির ছন্দকে উপলবধি করবার প্রচেষ্টা না করি, তবে আমাদের পক্ষে পদ্য লেখা কঠিনতর হয়ে উঠবে।
৩.৩) ‘চিনবে তারা ভুবনটাকে’- কীভাবে ভুবনকে চেনা সম্ভব হবে?
উৎসঃ
কবি “অজিত দত্ত” রচিত “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
ভুবনকে চেনার উপায়ঃ
কবি বলেছেন আমাদের পরিবেশে ছড়িয়ে রয়েছে বিবিধ প্রাকৃতিক ছন্দ সংকেত। আমরা যদি পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ভুলে আমাদের সকল অনুভূতি একত্রিত করে বিশ্বপ্রকৃতির স্বরূপ উদ্ঘাটনে প্রবৃত্ত হই, তাহলেই আমরা প্রকৃতির সকল ছন্দকে আমাদের হৃদয় দিয়ে উপলবদ্ধি করতে সক্ষম হবো। তাই যারা কান ও মন দিয়ে সকল ছন্দ শুনবে, তারাই ছন্দ সুরের সংকেতে ভুবনকে তার প্রকৃত রূপে চিনতে সমর্থ হবে।
৪) নীচের প্রশ্নটির উত্তর নিজের ভাষায় লেখোঃ
৫ ‘কিচ্ছুটি নয় ছন্দহীন’- ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ কবিতায় কবি সমস্ত কিছুর মধ্যে কীভাবে ছন্দের সন্ধান পেয়েছেন তা বিশ্লেষণ করো।
উৎসঃ
কবি “অজিত দত্ত” রচিত “ছন্দে শুধু কান রাখো” কবিতা থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গ্রহণ করা হয়েছে। কবি তাঁর এই কবিতায় যেন ছন্দের সাগরে অবগাহন করেছেন।
কবির চোখে ছন্দের পরিচয়ঃ
কবি তাঁর সমগ্র কবিতা জুড়েই বিবিধ ছন্দের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন। কবি বলেছেন আমরা যদি কান ও মন দিয়ে উপলবদ্ধি করি তবে আমরা ঝড়-বাদল, জ্যোতস্নাতে ছন্দ খুঁজে পাবো। পাখি ও ঝিঁঝির ডাকের মধ্যেও যে অপরূপ ছন্দ লুকিয়ে আছে তার পরিচয়ও কবি প্রদান করেছেন। নদীর স্রোতের ছন্দের ন্যায় কোনো ছড়া রচিত হয় নি বলে কবির বিশ্বাস। প্রাকৃতিক ছন্দের মাঝে কবি যান্ত্রিক ছন্দকেও তাঁর কবিতার মাধ্যমে উপস্থাপিত করেছেন। আর তাই তিনি লিখেছেন-
“ছন্দ বাজে মোটর চাকায়
ছন্দে চলে রেলগাড়ি
জলের ছন্দে তাল মিলিয়ে
নৌকো জাহাজ দেয় পাড়ি।”
কবি আরো বলেছেন যে, ঘড়ির কাঁটার চলার মাঝে, দিন-রাত্রির পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনেও ছন্দ রয়েছে। এই বিশ্বের প্রতিটি কোণেই ছন্দ লুকিয়ে রয়েছে বলে কবির বিশ্বাস। আর সেই ছন্দকে উপলবদ্ধি করে পদ্য রচনা করতে আমাদের দ্বন্দ্বহীন নির্বিরোধী মনের প্রয়োজন বলে কবি অজিত দত্ত জানিয়েছেন।