অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর । দশম শ্রেণি বাংলা
WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে দশম শ্রেণির মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর । দশম শ্রেণি বাংলা আলোচনাটি প্রদান করা হলো। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বাংলা অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর । দশম শ্রেণি বাংলা :
১) ‘আমি এখন হাজার হাতে পায়ে/এগিয়ে আসি, উঠে দাঁড়াই’- কে, কেন এগিয়ে আসেন ?
উৎসঃ
কবি “জয় গোষ্মামী” রচিত “পাতার পোশাক” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এক আশ্চর্য দলিল।
যাদের এগিয়ে আসার কথা বলা হয়েছেঃ
কবিতায় শান্তিকামী, যুদ্ধবিরোধী সাধারণ মানুষের এগিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে।
এগিয়ে আসার কারণঃ
অস্ত্রের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী মনুষের প্রতিবাদের ভাষা। মানুষের মিলিত প্রতিরোধ যে-কোনো অস্ত্রকে আটকাতে পারে। যে মানুষেরা অস্ত্রের উপর নির্ভরশীল তাদের কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে, অস্ত্র আসলে মানবতার বিরোধী। অস্ত্র নয়, মনুষের সঙ্গে মানুষের সুসম্পর্কই এই পৃথিবীর শেষ সত্য। সেই অজস্র শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের শক্তিতেই তিনি শক্তিশালী হয়ে এগিয়ে আসেন।
২) কবিতায় কবি ‘হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়াই’ বলতে কি বুঝিয়েছেন ?
উৎসঃ
কবি “জয় গোষ্মামী” রচিত “পাতার পোশাক” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এক আশ্চর্য দলিল।
তাৎপর্যঃ
যুদ্ধবিরোধী এই কবিতার মূল বক্তব্য হল- মানবতার কাছে সাম্রাজ্যবাদের আত্মসমর্পণ। সম্ভবত কবি জয় গোস্বামী হাত নাড়ানোকে রূপক অর্থে লেখার সাথে তুলনা করেছেন। কবি মনে করেছেন গানের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে মানবতার জাগরণ হবে এবং তা দিয়ে যুদ্ধের প্রতীক ‘বুলেট’ থামিয়ে দেওয়া বা কবির ভাষায় তাড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।
৩) ‘গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে’- কবির এই মন্তব্যের তাৎপর্য আলোচনা করো।
উৎসঃ
কবি “জয় গোষ্মামী” রচিত “পাতার পোশাক” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এক আশ্চর্য দলিল।
তাৎপর্যঃ
যে কোনো অশুভ প্রচেষ্টার প্রতিরোধের এই কাজে সংগীত একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। গানের মধ্য দিয়ে যেমন আনন্দ আর সুন্দরের বিকাশ ঘটে, মন শুদ্ধ হয়ে ওঠে, ঠিক সেরকমই গান হয়ে উঠতে পারে প্রতিবাদের বাহনও। তাই বুলেট অর্থাৎ যুদ্ধকে বাধা দিতে কবি গানকেই বর্মের মতো ব্যবহার করেন।
৪) ‘আঁকড়ে ধরে সে-খড়কুটো’- কবি কাকে ‘খড়কুটো’ বলেছেন ? তাকে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছেন কেন ?
উৎসঃ
কবি “জয় গোষ্মামী” রচিত “পাতার পোশাক” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এক আশ্চর্য দলিল।
খড়কুটোর পরিচয়ঃ
অস্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গানকে কবি আঁকড়ে ধরতে চেয়েছেন। বিশ্বজুড়ে চলতে থাকা হিংসা ও হানাহানির বিরুদ্ধে কবির সম্বল মাত্র একটি-দুটি গান। এই স্বল্পতা বোঝাতেই কবি ‘খড়কুটো’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
আঁকড়ে ধরতে চাওয়ার কারণঃ
ডুবন্ত মানুষ কিছু আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়। যদি সেটা খড়কুটোও হয়, তবে তাকেই সে অবলম্বন ভেবে আঁকড়ে ধরে। কবিও মনে করেছেন, গানই হল হিংস্রতার এই পৃথিবীতে মানুষের চেতনা বদলানোর মাধ্যম। এই গান আদতে জীবনের গান। কবির কাছে মাত্র একটা-দুটো গান আছে, যাদের আঁকড়ে ধরেই বাঁচতে চান তিনি।
৫) “রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে” -পঙক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উৎসঃ
কবি “জয় গোষ্মামী” রচিত “পাতার পোশাক” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এক আশ্চর্য দলিল।
তাৎপর্যঃ
আলোচ্য কবিতায় কবি মানবতার কথা বলেছেন। মানব সভ্যাতায় ‘গান’ হল সৃজনশীলতার প্রতীক। তাই ‘গান’ শব্দটি তিনি মানবতার অর্থে ব্যবহার করেছেন। তিনি চেয়েছেন গানের মাধ্যমে সকল সাম্রাজ্যবাদী এবং যুদ্ধবাদী শক্তির মনে শুভবুদ্ধির উদয় হোক তারা তাদের হিংস্রতা ও বর্বরতা গানের মুছে ফেলুক।
৬) ‘মাথায় কত শকুন বা চিল’- উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উৎসঃ
কবি “জয় গোষ্মামী” রচিত “পাতার পোশাক” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এক আশ্চর্য দলিল।
প্রসঙ্গঃ
যুদ্ধবাজ আগ্রাসী মানুষদের কথা বলতে গিয়েই কবি আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।
তাৎপর্যঃ
কবি দেখেছেন, স্বার্থপর মানুষেরা যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলায় মেতে উঠেছে। মনুষ্যত্বকে ধ্বংস করে তারা নিজেদের ক্ষমতা ও স্বার্থকে প্রতিষ্ঠা করতে সবসময় উদ্যোগী। লোভী চিল-শকুনের মতো তারা সমাজের মাথার ওপরে ঘুরে বেড়ায়। এই শকুন বা চিলরূপী যুদ্ধবাজ শক্তিগুলির বিরুদ্ধেই কবি গানের অস্ত্র ধারণ করেছেন।
৭) ‘আমার শুধু একটা কোকিল’- বক্তা কে ? এ কথার মধ্যে দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন ?
উৎসঃ
কবি “জয় গোষ্মামী” রচিত “পাতার পোশাক” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এক আশ্চর্য দলিল।
বক্তাঃ
উল্লিখিত অংশটির বস্তা ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতার কবি জয় গোস্বামী স্বয়ং।
তাৎপর্যঃ
কবি তাঁর মাথার উপরে চিল শকুনের উড়ে চলা দেখেছেন। তার মধ্যে ‘একটা কোকিল’, যা আসলে কবির সৃজনশীল সত্তা, তা ধ্বংসের মধ্যে সৃষ্টির গান গাইতে পারে। ‘সহস্র উপায়ে’ তার গান, প্রেম বা প্রতিবাদ বা যে ধারাতেই তৈরি হোক না কেন, তা আসলে সুন্দরেরই প্রতিষ্ঠা ঘটায়।
৮) ‘গান বাঁধবে সহস্র উপায়ে’- কে গান বাঁধবে ? সহস্র উপায়ে গান বাঁধার তাৎপর্য কী ?
উৎসঃ
কবি “জয় গোষ্মামী” রচিত “পাতার পোশাক” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এক আশ্চর্য দলিল।
যে গান বাঁধবেঃ
কবি বলেছেন, তাঁর শুধু একটা ‘কোকিল’ আছে। এই কোকিলই গান বাঁধবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
তাৎপর্যঃ
মধুর কণ্ঠের কোকিল সৌন্দর্যের প্রতীক। কোকিলের রূপক ব্যবহার করে কবি নিজের ভিতরের সৃজনশীল সত্তাকে তুলে ধরতে চেয়েছেন। যে গানকে তিনি জীবনযুদ্ধের বর্ম করতে চেয়েছেন, নানান উপায়ে সেই গান বাঁধবে এই কোকিল। যাবতীয় অস্ত্রের হুংকারকে স্তব্ধ করে তা পৃথিবীতে শান্তির বার্তা নিয়ে আসবে।
৯) ‘গান দাঁড়াল ঋষিবালক/মাথায় গোঁজা ময়ূরপালক’- কোন কবিতার অংশ ? তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উৎসঃ
কবি “জয় গোষ্মামী” রচিত “পাতার পোশাক” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এক আশ্চর্য দলিল। উদ্ধৃত অংশটি এই কবিতা থেকে গৃহীত হয়েছে।
তাৎপর্যঃ
কবি এখানে মানবতার গানের মধ্যে দিয়ে যুদ্ধবাদী ভাবনার সমর্পণের কথা বলেছেন। কবি ‘ঋষিবালক’ শবটি রূপক অর্থে ব্যবহার করছেন। ‘ঋষিবালক’ কথার মধ্যে দিয়ে আমরা একই সঙ্গে তেজদীপ্ত অথচ সরল চেহারার কল্পনা করতে পারি। কবি মনে করেছেন মানুষের মনের সন্মিলিত মানবতা বোধ একদিন তার সর্বশ্রেষ্ঠ রূপ নেবে যা সাম্রাজ্যবাদী ভাবনাকে মানবতার কাছে আত্মসমর্পণে বাধ্য করবে।
১০) ‘তোমায় নিয়ে বেড়াবে গান’- এই কথার তাৎপর্য কী ?
উৎসঃ
কবি “জয় গোষ্মামী” রচিত “পাতার পোশাক” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এক আশ্চর্য দলিল।
তাৎপর্যঃ
গান এবং সুরের হাত ধরে গোটা বিশ্বের সাথে মানুষের পরিচয় ঘটে। গান বস্তুত হৃদয়ের এক আশ্চর্য বিস্তার ঘটায়। গানের মাধ্যমেই সম্ভব হয় প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ, মানুষের কাছাকাছি পৌঁছোনো। কবি গানের এই শক্তি এবং সীমাহীন বিস্তারের দিকেই ইঙ্গিত করা হয়।
১১) ‘…অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো গানের দুটি পায়ে’- কবি অস্ত্রকে গানের পায়ে রাখার কথা বলেছেন কেন ?
উৎসঃ
কবি “জয় গোষ্মামী” রচিত “পাতার পোশাক” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত “অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান” কবিতাটি বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এক আশ্চর্য দলিল।
অস্ত্রকে গানের পায়ে রাখার কারণঃ
কবি সকল সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধবাজ শক্তিকে অস্ত্র ত্যাগ করতে বলেছেন। কবি অস্ত্রের বিপরীতে গানকে তুলে ধরেছেন, এই গান আসলে মানবতার গান। কবি আশা করেছেন যে সকল সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মনে একদিন শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং তারা মানবতার খাতিরে অস্ত্র ত্যাগ করবে। তাই কবি এখানে গানের কাছে অস্ত্র ত্যাগ করার কথা বলেছেন।