প্রলয়োল্লাস কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তর । দশম শ্রেণি বাংলা
WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে দশম শ্রেণির মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রলয়োল্লাস কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তর । দশম শ্রেণি বাংলা আলোচনাটি প্রদান করা হলো। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বাংলা প্রলয়োল্লাস বড়ো প্রশ্নের উত্তর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে প্রলয়োল্লাস কবিতার পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
প্রলয়োল্লাস কবিতার বড়ো প্রশ্নের উত্তর । দশম শ্রেণি বাংলা :
১) প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় প্রলয়ের যে চিত্র অঙ্কিত হয়েছে তার বর্ণনা দাও।
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” কবিতায় আমরা প্রলয়ের এক ভয়ঙ্কর চিত্রের পরিচয় লাভ করি।
প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় প্রলয়ের চিত্রঃ
প্রলয় ভয়ংকর, প্রলয় ধ্বংসকারী। সে কালবৈশাখীর ঝড়ের মতাে সকল জীর্ণতাকে বিনাশ করে নতুনের আগমন সংকেত ধ্বনিত করে। কবি জয়ধ্বনির মধ্য দিয়েই তাকে সাদরে গ্রহণ করেছেন-
“তোরা সব জয়ধ্বনি কর”
সে প্রলয়ের নেশায়, তাণ্ডবে মত্ত, অত্যাচারী ঔপনিবেশিক শাসকের সাত সমুদ্রপারের সিংহদরজা সে কেবল এক বজ্রনির্ঘোষে ভেঙে ফেলে। অন্ধকার মৃত্যুকুল থেকে মহাকালকে সঙ্গী করে, দূপে-ধোঁয়ায় বজ্র-প্রজ্বলিত মশাল হস্তে ছুটে আসে সেই ভয়ংকর। তার হাসিতে বিভীষিকা; তার ঘাের কৃষ্ণবর্ণ আলুথালু চুলের ঝাপটায় আকাশ দোলে, বহ্নিমান ধূমকেতু তার দাসত্ব করে। বিশ্বমাতৃকার সন্তান প্রলয়, তারা কৃপণ হস্তে অট্টহাস্য করে ক্রমাগত অগ্রসরমান। তার আঁখিতে করােটি সুর্যের তেজ –
“দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা ভয়াল তাঁহার নয়নকটায়”
তার পিঙ্গলবর্ণের জটা দিগন্তে লুটায়, সাত সমুদ্রের নােনা স্বাদ তার চোখের জলে আত্মপ্রকাশ করে। এখানে পুরাণ বর্ণিত শিব ও চণ্ডীর ধ্বংসাত্মক রুপের আত্মপ্রয়ােগ ঘটিয়েছেন কবি। জরাগ্রস্ত-অথর্ব-মুমূর্ষ সংস্কার ও মতবাদকে বিনাশ করে শিল্পীর সৃষ্টিবিদিশারী এই প্রলয়। নবদিগন্তের দিশারী এই প্রলয়। তার ভয়ংকরতার শেষে রয়েছে নতুন দিনের আশ্বাস –
“কাল ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে সুন্দর”
শিল্পীর সৃষ্টিবেদনার মতাে, মাতার গর্ভযন্ত্রণার মতাে প্রলয় হল নবসৃজনের ইঙ্গিতবাহী। মৃত, গলিত কুশ্রী যা কিছু, সবকে বিনাশ করে নব ইতিহাসের নব মুক্তির এবং নবীন সমাজের রূপকার হল এই প্রলয়। সে চিরসুন্দর, মৃত্যুঞ্জয়ী। তাই তার আগমনে কবি উল্লসিত হয়ে উঠেছেন।
২) “দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা ভয়াল তাঁহার নয়নকটায়”… “বিন্দু তাঁহার নয়নজলে সপ্তমহাসিন্ধু দোলে”- ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতার উদ্ধৃত উক্তি দুটির তাৎপর্য উল্লেখ করো। ৫
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি “কাজি নজরুল ইসলাম” রচিত “অগ্নিবীণা” কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতা “প্রলয়োল্লাস” থেকে এই তাৎপর্যপূর্ণ অংশদুটি চয়ন করা হয়েছে।
দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা- তাৎপর্যঃ
কবি মহাকালের চন্ডরূপের বর্ণনা প্রদান করতে পৌরাণিক প্রসঙ্গের সাহায্য গ্রহণ করেছেন। পুরাণ মতে দ্বাদশ রবি হলো- ধাতা, মিত্র, অর্যমা, রুদ্র, বরুণ, সূর্য, ভগ, বিবস্বান, পূষা, সবিতা, ত্বষ্টা এবং বিষ্ণু।
এই বারোটি সূর্যের সম্মিলিত সূর্যের সমান তেজে বলীয়ান হয়ে তরুণ বিপ্লবীরা দেশের স্বাধীনতা কামনায় মহাকালের রুদ্ররূপের মতো আগমন ঘটাবে। তাদের অগ্নিতেজ দীপ্তিতে সকল প্রকার সামাজিক অবক্ষয় ও দুর্নীতির অবসান ঘটবে বলেই কবির বিশ্বাস।
সপ্তমহাসিন্ধু-তাৎপর্যঃ
বিশ্বমানবের আর্তনাদে মহাকালের ‘কপোলতলে’ অশ্রুবিন্দুধারা যেন সপ্তমহাসিন্ধুতে প্রাবাহিত হয় বলে কবি কল্পনা করেছেন। পৌরাণিক মতানুসারে ‘সপ্তসিন্ধু’ বলতে বোঝায়- লবণ, ইক্ষুরস, সুরা, ঘৃত, দধি, ক্ষীর, স্বাদূদক এই সাতটি সমুদ্র।
কবি অনাগত প্রলয়ংকরের কোমলতার দিকটিকে নির্দেশ করতে তার অশ্রুবিন্দুর লবণতাকে পৃথিবীর সাতসমুদ্রের লবণাক্ত জলের উপমায় উপমিত করেছেন।
কবি প্রশ্নোক্ত দুই উপমার মাধ্যমে মহাকালের রুদ্র ও কোমল রূপের সার্থক বর্ণনা প্রদান করেছেন।
LINK TO VIEW PDF FILE (ONLY FOR SUBSCRIBERS)
নিম্নের PDF প্রশ্নের উত্তরগুলি শুধুমাত্র আমাদের Subscribers -দের জন্য। দশম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের সাবস্ক্রিপশন নিতে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথেঃ What’s App: 7001880232
৩) “তোরা সব জয়ধ্বনি কর”- কাদের কেন জয়ধ্বনি করতে বলা হয়েছে? জয়ধ্বনির তাৎপর্য লেখো। ২+৩
৪) “ওই ভাঙাগড়া খেলা যে তার, কিসের তবে ডর”- উৎস নির্দেশ করে মন্তব্যটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও। ১+৪
৫) “বজ্র শিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর”- উৎস নির্দেশ করে তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। ১+৪
৬) “তার আসার সময় ওই রথ ঘরঘর”- প্রসঙ্গ আলোচনা করে তাৎপর্য আলোচনা করো। ২+৩
৭) “প্রলয়োল্লাস” কবিতা অবলম্বনে কবির স্বদেশপ্রীতির পরিচয় দাও। ৫
৮) “কাল ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে সুন্দর”- তাৎপর্য আলোচনা করো। ৫