bangalir-cholochitrer-itihas-question-answers

বাঙালির চলচ্চিত্রের ইতিহাস প্রশ্নের উত্তর । দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা 

দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার প্রদান করতে চলা উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে বাঙালির চলচ্চিত্রের ইতিহাস প্রশ্নের উত্তর । দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই প্রশ্নের উত্তরগুলি সমাধানের মধ্য দিয়ে তাদের উচ্চমাধ্যমিক বাংলা চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।

বাঙালির চলচ্চিত্রের ইতিহাস প্রশ্নের উত্তর । দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা :

 

১) তথ্যচিত্র বলতে কী বোঝো? বাংলা তথ্যচিত্রের ধারা সম্পর্কে আলোচনা করো। ২+৩ 

উঃ

তথ্যচিত্রঃ

তথ্যচিত্র হল এমন একটি চলচ্চিত্র যা বাস্তব ঘটনা বা বিষয়বস্তুকে তুলে ধরে। তথ্যচিত্রে কোনো কাল্পনিক বিষয়ের স্থান থাকে না। তথ্যচিত্র নানা ধরনের হতে পারে। তথ্যচিত্রের প্রকারগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – প্রামাণিক, প্রাসঙ্গিক, অবস্থানগত, তথ্যমূলক, জীবনীকেন্দ্রিক, ব্যক্তিগত ও ভ্রমণমূলক তথ্যচিত্র। 

বাংলা তথ্যচিত্রের ধারাঃ 

বাংলা তথ্যচিত্রের জন্ম হয় হীরালাল সেনের হাত ধরে, তাঁর ‘দিল্লি দরবার’ ছবির মধ্য দিয়ে, যে ধারা এখনো প্রবহমান। নিম্ন কিছু বাঙালি তথ্যচিত্র পরিচালক ও তাঁদের তথ্যচিত্রের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হলো – 

হরিসাধন দাশগুপ্তঃ 

বিংশ শতকের অন্যতম বিশিষ্ট তথ্যচিত্র নির্মাতা হলেন হরিসাধন দাশগুপ্ত। তাঁর উল্লেখযোগ্য তথ্যচিত্রগুলি হল – ‘Konark’, ‘Panchthupi A Village in West Bengal’, ‘Bade Ghulam Ali khan’, ‘Baba’, ‘Acharya Nandalal’, ‘Mizoram’ প্রভৃতি।

সত্যজিৎ রায়ঃ 

বাংলা তথ্যচিত্রের গৌরবময় দিন আসে সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে। তাঁর তথ্যচিত্রের সংখ্যা পাঁচটি। জীবনীমূলক তথ্যচিত্র- ‘Rabindranath Tagore’, ‘The Inner Eye’, ‘Bala’, ‘সুকুমার রায়’, তথ্যকেন্দ্রিক তথ্যচিত্র ‘Sikkim’ তাঁর ঘরানার মৌলিক স্বাক্ষর বহন করে।

ঋত্বিক ঘটকঃ 

তাঁর উল্লেখযোগ্য তথ্যচিত্রগুলি হল ‘Scientists of Tomorrow’, ‘Chhou Dance of Purulia’, ‘আমার লেনিন’, ‘ইয়েকিউ’ প্রভৃতি।

শান্তি চৌধুরীঃ 

তাঁর তথ্যচিত্রগুলির মধ্যে চিত্রকর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে পরিতোষ সেন হয়ে মকবুল ফিদা হুসেন অবধি যে চিত্রমালা তিনি তৈরি করেন, তা দর্শকমহলে সমাদৃত হয়।

চিদানন্দ দাশগুপ্তঃ 

তাঁর প্রথম তথ্যচিত্র ‘Portrait of a City’ বিদগ্ধ মহলে সাড়া ফেলে। এ ছাড়া তাঁর ‘The Dance of Shiva’, ‘Birju Maharaj’ তথ্যচিত্র দুটি উল্লেখযোগ্য। 

মৃণাল সেনঃ 

তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তথ্যচিত্র হল – ‘Moving Perspective’, ত্রিপুরা প্রসঙ্গ, ‘Calcutta my El Dorado’, ‘Indian Chapter’ প্রভৃতি।

এছাড়াও আরো যারা বাংলা তথ্যচিত্রের ভাণ্ডারকে সম্মৃদ্ধ করেছেন তারা হলেন – বিমল রায়, সলিল চৌধুরী, পূর্ণেন্দু পত্রী, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, গৌতম ঘোষ প্রমুখ।

 

২) বাংলা চলচ্চিত্রে ঋত্বিক ঘটকের অবদান আলোচনা করো।  ৫

উঃ

ভূমিকাঃ 

বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ঋত্বিক ঘটক এক স্বরণীয় নাম। তার তৈরি করা চলচ্চিত্রের সংখ্যা সীমিত হলেও, যে কয়েকটি চলচ্চিত্র তিনি নির্মাণ করেছেন তা বাংলা চলচ্চিত্র জগতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।   

চলচ্চিত্রে তাঁর অবদানঃ  

বাংলা সিনেমায় যোগদানের পূর্বে তিনি ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫১ সালে ‘ছিন্নমূল’ সিনেমায় তিনি একইসঙ্গে অভিনয় এবং সহকারী পরিচালকের ভুমিকা পালন করেন। তাঁর একক পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘নাগরিক’ মুক্তি পায় ১৯৫২ সালে।  এরপর ১৯৫৮ সালে ‘অযান্ত্রিক’ এবং ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’ ছবিদুটিও দর্শকদের নজর কেড়েছিল। ১৯৬০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মেঘে ঢাকা তারা’ তাঁর অন্যতম সেরা চলচিত্র। ‘কোমলগান্ধার’ (১৯৬১) এবং ‘সুবর্নরেখা’ (১৯৬২) ছবিদুটি সাফল্য না পাওয়ায় এক দশক কোনো সিনেমা তৈরি করেননি।

১৯৭৩ সালে অদ্বৈত মল্লবর্মনের উপন্যাস অবলম্বনে ঋত্বিক ঘটক তৈরি করেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমাটি। তাঁর আরেকটি বিখ্যাত সিনেমা ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ (১৯৭৭)।

পরিচালনা ছাড়াও তিনি অনেকগুলি ছবিতে অভিনয় করেছেন এবং কাহিনী ও চিত্রনাট্যও লিখেছেন। এছাড়া বেশকিছু তথ্যচিত্র ও শর্টফিল্ম বানিয়েছেন যেমন- “The life of the Adibasis”, ‘Fear’, ‘আমার লেনিন’, ‘পুরুলিয়ার ছৌ’ ইত্যাদি।

তার চলচ্চিত্রে আমরা তাঁর শিল্পবোধের পরিচয় পাই। এর পাশাপাশি স্বাধীনতা-উত্তর উদবাস্তু সমস্যার ছবি তিনি নিপুণ দক্ষতায় উপস্থাপন করেছেন।

সন্মান ও পুরস্কারঃ

ঋত্বিক ঘটক ১৯৬৯ সালে পদ্মশ্রী এবং ১৯৭৫ সালে ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ সিনেমার জন্য জাতীয় পুরস্কার লাভ করেছেন। বাংলা চলচ্চিত্র জগতে তিনি এক অক্ষয় আসন অধিগ্রহণ করেছেন।

 

৩) বাংলা সিনেমার ইতিহাসে মৃনাল সেনের অবদান আলোচনা করো।  ৫

উঃ

ভূমিকাঃ 

বাংলা চলচ্চিত্রের মহাকাশে মৃণাল সেন হলেন এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। চলচ্চিত্র পরিচালনা, চিত্রনাট্য রচনা, তথ্যচিত্র নির্মাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ছিল তার স্বচ্ছন্দ পদচারণা।

চলচ্চিত্রে অবদানঃ

১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ ছবির মাধ্যমে তাঁর বাংলা চলচ্চিত্র জগতে আবির্ভাব ঘটেছিল। তবে এই সিনেমা জনপ্রিয়তা লাভে ব্যর্থ হয়। প্রথম ছবিতে সাফল্য না পেলেও, ১৯৫৮ খ্রিঃ মুক্তিপ্রাপ্ত তাঁর দ্বিতীয় ছবি ‘নীল আকাশের নীচে’ বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।

তাঁর “বাইশে শ্রাবণ”, “ভুবন সোম”, “ইন্টারভিউ”, “ক্যালকাটা ৭১”,  “পদাতিক”, “একদিন প্রতিদিন”, “খারিজ”, “আকালের সন্ধানে” প্রভৃতি ছবিগুলি তাঁকে বিশেষ খ্যাতি প্রদান করেছে।

তাঁর অন্যান্য ছবিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-  “আকাশ কুসুম”, “মৃগয়া”, “চালচিত্র”, “খন্ডহর”, “অন্তরীন”। তাঁর সর্বশেষ চলচ্চিত্র হলো “আমার ভুবন”, যা ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হয়েছিল। বাংলা ছাড়াও তিনি উড়িয়া, তেলেগু এবং হিন্দি ভাষাতেও চলচ্চিত্র নির্মান করেছেন।

তাঁর এই সকল চলচ্চিত্রে তিনি মধ্যবিত্ত মমনের দ্বন্দ্ব ও জটিলতাকে উপস্থাপন করেছেন। তাঁর সিনেমায় মানবিক ও সামাজিক সম্পর্কগুলিকে তিনি সমালোচকের দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষণ করেছেন।

সন্মান ও পুরস্কারঃ

তাঁর ছবির পাশাপাশি তিনিও দেশে বিদেশে বিবিধ পুরষ্কারে সন্মানিত হয়েছেন। ১৯৮১ সালে তিনি “পদ্মভূষণ” সন্মান, ২০০৫ সালে “দাদাসাহেব ফালকে” পুরস্কার, রাশিয়ার “অর্ডার অফ ফ্রেন্ডশিপ” ও ফ্রান্সের “কমান্ডার অফ দি অর্ডার অফ আর্টস অ্যান্ড লেটার্স” প্রভৃতি বিশেষ সন্মান প্রাপ্ত হয়েছেন। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে। 

LINK TO VIEW PDF FILE (ONLY FOR SUBSCRIBERS)

বাঙালির চলচ্চিত্রের ইতিহাস প্রশ্নের উত্তর

নিম্নের PDF প্রশ্নের উত্তরগুলি শুধুমাত্র আমাদের Subscribers -দের জন্য। দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা বিষয়ের সাবস্ক্রিপশন নিতে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথেঃ What’s App: 7001880232 

 

৪) বাংলা চলচ্চিত্রের ধারায় সত্যজিৎ রায়ের অবদান আলোচনা করো। ৫ 

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

৫) বাংলা সিনেমার ইতিহাসে তপন সিংহের অবদান আলোচনা করো। ৫ 

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

৬) বাংলা সিনেমার ইতিহাসে তরুণ মজুমদারের অবদান আলোচনা করো। ৫ 

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

৭) বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে উত্তম কুমারের ভূমিকা আলোচনা করো। ৫

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

৮) বাংলা চলচ্চিত্রে নির্বাক যুগের ছায়াছবির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো। ৫ 

উত্তর জানতে এখানে টাচ/ক্লিক করতে হবে

দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর দেখতে নিম্নের লিঙ্কটি অনুসরণ করতে হবে

দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা নোট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: কপি করার প্রচেষ্টা করবেন না !
Scroll to Top