বাংলা চিত্রকলার ইতিহাস প্রশ্নের উত্তর । দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা
দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার প্রদান করতে চলা উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে বাংলা চিত্রকলার ইতিহাস প্রশ্নের উত্তর । দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা প্রদান করা হলো। শিক্ষার্থীরা এই প্রশ্নের উত্তরগুলি সমাধানের মধ্য দিয়ে তাদের উচ্চমাধ্যমিক বাংলা চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।
বাংলা চিত্রকলার ইতিহাস প্রশ্নের উত্তর । দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা :
১) ‘পট’ বলতে কী বোঝায়? এই শিল্পধারার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। ৫
পটের পরিচয়ঃ
অভিধানে ‘পট’ শব্দের অর্থ ‘চিত্র’। বর্তমানে ‘পট’ বলতে এক বিশেষ ধরনের ছবি বোঝায়।
পট শিল্পধারার সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ
লোকশিল্পের একটি অতি প্রাচীন মাধ্যম পট। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বুদ্ধদেবের জীবনী ও পূর্বজন্ম সংক্রান্ত জাতকের গল্প নিয়ে তৈরি করা পট প্রদর্শন করতেন। কখনো কাপড়ের উপর কাদামাটি কখনো বা গোবর মিশ্রিত প্রলেপের সঙ্গে আঠা মিশিয়ে জমিন তৈরি করে পট অঙ্কিত হতো। ওই পট নিয়ে শিল্পী নিজের সংগীতও পরিবেশন করতেন। সপ্তম শতকের গোড়ায় রচিত হর্ষচরিতে পটুয়ায়দের কথা আছে।
দ্বাদশ শতকে পটশিল্প বিস্তার লাভ করে। ষোড়শ শতকে চৈতন্যদেবের বাণী প্রচারের জন্য পট ব্যবহৃত হতো। মুকুন্দরামের কাব্যে পটের উল্লেখ আছে, গাজীর পটের প্রবর্তনের কাল আনুমানিক ১৫০০ শতক। রাজস্থানের পট চিত্রের চর্চা থাকলেও বিষয়বৈচিত্র্যতা বাংলা, উড়িষ্যার পটচিত্রের মত সমৃদ্ধ নয়।
উনবিংশ শতকে বাংলায় প্রসিদ্ধি পেয়েছিল কালীঘাটের পট। প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের চিত্রশৈলী মিশিয়ে এই পট তৈরি হতো। এতে প্রধানত হিন্দুদের দেব-দেবীর ছবি চিত্রিত হতো। সমাজের বিভিন্ন সমালোচনা করে কালীঘাট পটকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক দলিলে পরিণত করতে পেরেছিলেন এই পটশিল্পীরা। সেই সময়ে এই পটশিল্প অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এক আনা মূল্যের বিনিময়ে মানুষ পটগুলি কেনার জন্য ভিড় জমাতো। প্যারিসেও কালীঘাটের পট বিক্রি হয়েছিল এবং প্যারিসে স্বয়ং পিকাসো এই পট কিনেছিলেন। এই চিত্র শৈলির প্রভাবও তার কর্মধারায় লক্ষ্য করা যায়। ফার্নান্দ লেজের চিত্রণেও কালীঘাট পটের ছায়া পড়েছিল বলে মনে করা হয়। ‘মোহন্ত ও এলোকেশী’ এই পটশিল্পের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। সাহেব পাড়ার ঘোড়া দৌড়, সাহেবের বাঘ শিকার, বাবু কালচার এমনই অনেক ছবি কালীঘাটের পটে পাওয়া যায়।
আর এভাবেই বাঙালির চিত্রশিল্পের ইতিহাসে পট চিত্র তার স্বতন্ত্র স্থান অধিকার করেছে।
২) বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির অবদান আলোচনা করো। ৫
ভূমিকাঃ
বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির ভূমিকা অনস্বীকার্য। ঠাকুরবাড়ির ‘বিচিত্রা স্টুডিও’ ও দক্ষিণের বারান্দার চিত্রচর্চা একসময় গোটা দেশকে শিল্পের পাঠ প্রদান করেছিল। ঠাকুরবাড়ির একাধিক সদস্য-সদস্যা চিত্রচর্চায় আপন কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে গেছেন। নিম্নে তাদের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা প্রদান করা হলো-
অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরঃ
ঠাকুরবাড়ির কৃতি সন্তান অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন আধুনিক চিত্রকলার তথা নব্য বঙ্গীয় চিত্ররীতির জনক। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য রীতির মিশ্রনে তাঁর চিত্রচর্চা ছিল স্বকীয়তায় উজ্জ্বল। অবনীন্দ্রনাথের প্রধান দক্ষতা ছিল জাপানি ‘ওয়াশ’ পদ্ধতিতে চিত্রাঙ্কণ। তাঁর আঁকা ছবিকে তিনি বারবার ধুয়ে সম্পূর্ণ রূপ দিতেন। তাঁর কিছু বিখ্যাত চিত্র হলো ‘কচ ও দেবযানী’, ‘ভারতমাতা’, ‘কাজরী নৃত্য’ ইত্যাদি।
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরঃ
গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন প্রবাদপ্রতিম ব্যঙ্গচিত্র বা কার্টুন শিল্পী। তিনি ১৯০১ খ্রিঃ ‘টুয়েলভ ইঙ্ক স্কেচেস’ নামক বারোটি কাকের ছবির অ্যালবাম প্রকাশের মধ্যে দিয়ে চিত্রশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ইঙ্গ-বঙ্গ সমাজ, স্বদেশীয়ানার মতো বিষয় তাঁর কার্টুনে বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে। তাঁর কিছু বিখ্যাত চিত্র হলো – ‘তরমুজ রসিক’, ‘খল ব্রাহ্মণ’ ইত্যাদি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঃ
ঠাকুরবাড়ির কৃতি-সন্তান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর চিত্রচর্চা শুরু করেন জীবনের অন্তিম পর্যায়ে। ‘পূরবী’ কাব্যগ্রন্থ রচনার সময় পান্ডুলিপি কাটাকুটি করতে করতে তাঁর চিত্র শিল্পের জগতে পদার্পণ। চিরাচরিত ধারার পরিবর্তে তাঁর ছবিতে ফুটে উঠেছিল আধুনিক চিত্রচর্চার সমান্তরাল একটি সাধনা।
সুনয়নী দেবীঃ
রবীন্দ্রনাথের মতোই স্বশিক্ষিত ছিলেন ঠাকুরবাড়ির কন্যা সুনয়নি দেবী। তাঁর ছবিতে প্রকাশিত হয়েছে স্বদেশীয়ানা ও স্বজাত্যাভিমান। সুনয়নি দেবীর বিখ্যাত কিছু ছবি হল – ‘মা যশোদা’, ‘বাউল’, ‘নেপথ্য’ ইত্যাদি।
এইরূপে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির মেধাবী সন্তানেরা তাদের হাতের জাদুতে ও শিল্পভাবনার কারুকার্যে বাংলা তথা বিশ্বের চিত্রশিল্প জগতকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
LINK TO VIEW PDF FILE (ONLY FOR SUBSCRIBERS)
নিম্নের PDF প্রশ্নের উত্তরগুলি শুধুমাত্র আমাদের Subscribers -দের জন্য। দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সেমিস্টার বাংলা বিষয়ের সাবস্ক্রিপশন নিতে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথেঃ What’s App: 7001880232
৩) চিত্রকলা চর্চায় শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুর অবদান আলোচনা করো। ৫
৪) বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে যামিনী রায়ের অবদান আলোচনা করো। ৫
৫) ভাস্কর ও চিত্রকর রামকিঙ্কর বেইজের অবদান আলোচনা করো। ৫
৬) বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান আলোচনা করো। ৫