ধীবর বৃত্তান্ত প্রশ্ন উত্তর । নবম শ্রেণি বাংলা
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে ধীবর বৃত্তান্ত প্রশ্ন উত্তর । নবম শ্রেণি বাংলা প্রদান করা হলো। বাংলা বিষয়ের এই প্রশ্নের উত্তরগুলি অনুশীলনের মধ্য দিয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে। এছারাও শিক্ষার্থীরা আমাদের Class Note বিভাগ থেকে বাংলা বিষয়ের অধ্যায়ভিত্তিক সকল প্রকার প্রশ্নের উত্তর দেখে নিতে পারবে।
ধীবর বৃত্তান্ত প্রশ্ন উত্তর । নবম শ্রেণি বাংলা :
ধীবর বৃত্তান্ত MCQ প্রশ্নের উত্তর :
১) ধীবর বৃত্তান্ত নাট্যাংশটি বাংলায় তর্জমা করেছেন- সত্যনারায়ণ চক্রবর্তী
২) রাজা দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে বিবাহ করেছিলেন- মহর্ষি কণ্বের অনুপস্থিতিতে
৩) শকুন্তলা অভিশাপ পায়- ঋষি দুর্বাসার থেকে
৪) যার অনুরোধে ঋষি দুর্বাসা শকুন্তলার শাপের প্রভাব দূর হওয়ার পথ বলে দেন- সখী প্রিয়ংবদার
৫) শকুন্তলার কাছে ভবিষ্যতের স্মারকচিহ্ন রূপে ছিলো- দুষ্মন্তের দেওয়া আংটি
৬) শকুন্তলার আংটি খুঁজে পান- এক ধীবর
৭) ধীবর যে অঞ্চলে বসবাস করতো তার নাম- শক্রাবতার
৮) “একে পূর্বাপর সব বলতে দাও। মধ্যে বাধা দিও না”- যাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে- দ্বিতীয় রক্ষী (জানুক)
৯) “তা তোর জীবিকা বেশ পবিত্র বলতে হয় দেখছি”- যে জীবিকার বিষয়ে বলা হয়েছে- মৎস্য শিকার
১০) “__________ স্বভাবে দয়াপরায়ণ হলেও যজ্ঞীয় পশুবধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন।” – বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ
১১) “এর গা থেকে কাঁচা মাংসের গন্ধ আসছে”- অতএব এ জেলে অবশ্যই- গোসাপ খায়
১২) ধীবরকে মারার আগে পরানোর জন্য মালা গাঁথতে হাত নিশপিশ করছিল- প্রথম রক্ষীর
১৩) “হয় তোকে শকুনি দিয়ে খাওয়ানো হবে, না হয় কুকুর দিয়ে খাওয়ানো হবে”- বক্তব্যের পরে প্রবেশ ঘটে- রাজ শ্যালকের
১৪) “এই জেলে যমের বাড়ি গিয়ে আবার ফিরে আবার ফিরে এলো”- উক্তিটির বক্তা হল- জানুক
১৫) “এ যে শূল থেকে নামিয়ে একেবারে হাতির পিঠে চড়িয়ে দেওয়া হলো”- আংটির সমমূল্যের অর্থ রাজা ধীবরকে দেন
১৬) ধীবরকে বন্ধু বলে মেনে নিলেন- রাজ-শ্যালক
ধীবর বৃত্তান্ত SAQ প্রশ্নের উত্তর :
১) প্রিয়ংবদার অনুরোধে ঋষি দুর্বাসা কী বলেছিলেন?
উঃ ঋষি দুর্বাসা বলেছিলেন যে, প্রিয়জন শকুন্তলাকে ভুলে গেলেও কোনো স্মৃতিচিহ্ন দেখালে এই অভিশাপ দূর হবে।
২) দুষ্মন্ত প্রদত্ত আংটিটি শকুন্তলা কীভাবে হারিয়ে ফেলেছিলেন?
উঃ শচীতীর্থে স্নানের পরে অঞ্জলি দেওয়ার সময়ে হাত থেকে খুলে জলে পড়ে গিয়ে শকুন্তলার আংটিটি হারিয়ে যায়।
৩) ‘এ অবশ্যই গোসাপ-খাওয়া জেলে হবে’। – শ্যালক এ সন্দেহ করেছিল কেন?
উঃ ধীবরের গা থেকে কাঁচা মাংসের গন্ধ আসছিল বলে রাজার শ্যালক এরকম সন্দেহ করেছিলেন।
৪) ‘আপনারা অনুগ্রহ করে শুনুন’। – কোন কথা বক্তা শোনাতে চেয়েছে?
উঃ ধীবর বৃত্তান্ত নাট্যাংশে আলোচ্য উক্তিটির বক্তা ধীবর নগররক্ষীদের কাছে নিজের পরিচয় এবং কীভাবে সে রাজার আংটিটি পেয়েছে সে কথা শোনাতে চেয়েছে।
৫) ধীবরের কথামতো বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ কখন নির্দয় হয়ে থাকেন?
উঃ ধীবরের কথামতো বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ যজ্ঞীয় পশুবধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন।
৬) জেলে তার পারিতোষিকের অর্ধেক অর্থ কী করতে চেয়েছিল?
উঃ রক্ষীরা ধীবরকে মারার আগে যে ফুলের মালা তার গলায় পরাতে চেয়েছিল, রাজার দেওয়া পারিতোষিকের অর্ধেক অর্থ সেই ফুলের দাম হিসেবে ধীবর দিতে চেয়েছিল।
৭) “প্রভু, অনুগৃহীত হলাম।” – কীভাবে বক্তা অনুগৃহীত হয়েছিল?
উঃ মহারাজ আংটি ফিরে পেয়ে তার মুল্যের সমপরিমাণ অর্থ ধীবরকে দেওয়ায় সে অনুগৃহীত হয়েছিল।
৮) “মহারাজ এ সংবাদ শুনে খুব খুশি হবেন।” – কোন সংবাদ শুনে মহারাজের খুশি হওয়ার কথা বলা হয়েছে?
উঃ ধীবরের কাছ থেকে মহারাজের আংটি উদ্ধার করার কথা শুনে মহারাজা দুষ্মন্ত খুশি হবেন বলে রক্ষীরা এই মন্তব্য করেছে।
৯) ‘চল রে গাঁটকাটা’ – তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে?
উঃ গাঁটকাটা অর্থাৎ ধীবরকে রাজবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
১০) ধীবরকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ শুনে দ্বিতীয় রক্ষীর আচরণ কেমন ছিল?
উঃ ধীবরকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ শুনে দ্বিতীয় রক্ষী হিংসাভরা বক্রোক্তি করেছিল।
ধীবর বৃত্তান্ত সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর :
১) “যার চিন্তায় সে মগ্ন, সেই ব্যক্তি শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন”- বক্তা কে? তাঁর এমন উক্তির কারণ কী?
উৎসঃ
সংস্কৃত পন্ডিত “কালিদাস” রচিত “অভিজ্ঞান-শকুন্তলম্” নাটকের সংক্ষিপ্ত বাংলা অনুবাদ “ধীবর-বৃত্তান্ত” থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
বক্তাঃ
আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন ঋষি দুর্বাসা।
বক্তার উক্তির কারণঃ
নাট্যাংশের পূর্বকথা থেকে আমরা জানতে পারি যে, রাজা দুষ্মন্ত কণ্ব ঋষির আশ্রমে, শকুন্তলাকে বিবাহ করেন এবং রাজধানীতে ফিরে যান। দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও রাজা দুষ্মন্ত ফিরে আসেন না। একদিন শকুন্তলা স্বামীর দুশ্চিন্তায় মগ্ন ছিলেন, সেই সময় ঋষি দুর্বাসা, কণ্ব মুনির আশ্রমে উপস্থিত হন। যথাযথ আপ্যায়ন না পেয়ে অপমানিত ঋষি দুর্বাসা শকুন্তলাকে অভিশাপ দেন যে, শকুন্তলা যার চিন্তায় মগ্ন, সেই ব্যাক্তি শকুন্তলাকে ভুলে যাবেন।
২) “তবে কি তোকে সদ ব্রাহ্মন বিবেচনা করে রাজা এটা দান করেছেন?”- বক্তা কে? মন্তব্যটির কারণ ব্যাখ্যা করো।
উৎসঃ
সংস্কৃত পন্ডিত “কালিদাস” রচিত “অভিজ্ঞান-শকুন্তলম্” নাটকের সংক্ষিপ্ত বাংলা অনুবাদ “ধীবর-বৃত্তান্ত” থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
বক্তাঃ
মন্তব্যটির বক্তা দুই রক্ষী জানুক ও সূচকের মধ্যে একজন।
মন্তব্যের কারণঃ
নাট্যাংশে আমরা জানতে পারি যে, রাজার নাম খোদাই করা, মণিখচিত একটি দুর্মূল্য আংটি, একজন গরীব ধীবরের কাছে দেখে নগর রক্ষায় নিযুক্ত রাজ শ্যালক এবং দুই রক্ষী ঐ ধীবরকে আটক করে। ধীবর বারংবার বলে যে, সে ঐ আংটি চুরি করেনি। তার বক্তব্য শুনে, রাজ রক্ষীদের একজন ব্যাঙ্গার্থে তাকে আলোচ্য মন্তব্যটি করেন।
৩) “… তা তোর জীবিকা বেশ পবিত্র বলতে হয় দেখেছি”- বক্তা কাকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলেছেন? ওই ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
উৎসঃ
সংস্কৃত পন্ডিত “কালিদাস” রচিত “অভিজ্ঞান-শকুন্তলম্” নাটকের সংক্ষিপ্ত বাংলা অনুবাদ “ধীবর-বৃত্তান্ত” থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
উদ্দিষ্ট ব্যক্তিঃ
মন্তব্যটির বক্তা হলেন রাজ শ্যালক। তিনি ধীবর সম্পর্কে একথা বলেছেন।
প্রতিক্রিয়ার পরিচয়ঃ
রাজ শ্যালক ধীবরের জীবিকা নিয়ে ব্যাঙ্গ করেছিলেন। সেই বক্ত্যব্যের বিরোধিতা করে ধীবর তাকে বলেন – “যে বৃত্তি নিয়ে যে মানুষ জন্মেছে, সেই বৃত্তি নিন্দনীয় হলেও তা পরিত্যাগ করা উচিৎ নয়। বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ স্বভাবে দয়াপরায়ণ হলেও যজ্ঞীয় পশুবধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন।” ধীবর তার বক্তব্যের মাধ্যমে বোঝেতে চেয়েছিলেন যে, তার জীবিকা নিম্নমানের হলেও তা দেখে তার সম্পর্কে কিছু ভেবে নেওয়া উচিৎ নয়। কারণ, বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ স্বভাবে দয়ালু হলেও যজ্ঞের সময় তিনি নির্দয় ভাবে পশুবধ করেন।
৪) “সূচক এই জেলেকে ছেড়ে দাও।”- কে কথাটি বলেছেন? জেলেকে ছেড়ে দেওয়া হল কেন?
উৎসঃ
সংস্কৃত পন্ডিত “কালিদাস” রচিত “অভিজ্ঞান-শকুন্তলম্” নাটকের সংক্ষিপ্ত বাংলা অনুবাদ “ধীবর-বৃত্তান্ত” থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
বক্তাঃ
রাজ শ্যালক প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছেন।
জেলেকে ছেড়ে দেবার কারণঃ
ধীবরের কাছে মহামুল্যবান আংটি দেখে নগররক্ষক রাজ-শ্যালক ধীবরকে আটক করেন। ঐ আংটির বিষয়ে জানার জন্য তিনি রাজার কাছে যান। ঋষি দুর্বাসার অভিশাপ অনুযায়ী, ‘নিদর্শন’ দেখে রাজার পূর্বকথা মনে পড়ে যায় এবং তিনি রাজশ্যালককে ঐ আংটির বিষয়ে বলেন এবং ধীবরকে পুরস্কৃত করার আদেশ দেন। রাজসভা থেকে ফিরে এসে রাজ-শ্যালক রাজ-আজ্ঞা পালন করতে ধীবরকে ছেড়ে দেবার নির্দেশ দেন।
৫) “স্বভাবত গম্ভীর প্রকৃতির হলেও মুহূর্তের জন্য রাজা বিহ্বলভাবে চেয়ে রইলেন।” – রাজা তার গম্ভীর প্রকৃতি ছেড়ে কখন, কেন মুহূর্তের জন্য বিহ্বল হয়েছিলেন?
উৎসঃ
সংস্কৃত পন্ডিত “কালিদাস” রচিত “অভিজ্ঞান-শকুন্তলম্” নাটকের সংক্ষিপ্ত বাংলা অনুবাদ “ধীবর-বৃত্তান্ত” থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
প্রসঙ্গঃ
রাজ-শ্যালক যখন রাজা দুষ্মন্তকে তাঁর আংটি দেখিয়েছিলেন তখন গম্ভীর প্রকৃতির রাজা কিছু মুহূর্তের জন্য বিহ্বলভাবে চেয়েছিলেন।
তাৎপর্যঃ
ঋষি দুর্বাসার অভিশাপে রাজা দুষ্মন্ত তাঁর বিবাহিত স্ত্রী শকুন্তলাকে ভুলে গিয়েছিলেন। ঋষির কথামত রাজার পূর্ব স্মৃতি মনে পড়ার একমাত্র উপায় ছিল পূর্বের কোন নিদর্শন দেখা। রাজা শকুন্তলাকে একটি আংটি দিয়েছিলেন, যা দেখানোর জন্য শকুন্তলা রাজার কাছে যান। কিন্তু পথে সেই আংটি হারিয়ে যায় এবং কালক্রমে ঐ আংটি ধীবরের কাছে পৌঁছায়। ধীবরের কাছ থেকে আংটিটি নিয়ে রাজ শ্যালক রাজাকে দেখান। এর ফলে রাজার সকল পূর্ব স্মৃতি মনে পড়ে গেলে তিনি কিছু সময়ের জন্য বিহ্বল হয়েছিলেন।
ধীবর বৃত্তান্ত নবম শ্রেণি বাংলা থেকে বড়ো প্রশ্নের উত্তরঃ
১) “যে বৃত্তি নিয়ে যে মানুষ জন্মেছে, সেই বৃত্তি নিন্দনীয় (ঘৃণ্য) হলেও তা পরিত্যাগ করা উচিত নয়।”- উক্তিটি কার? কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি? উক্তিটিতে যে দর্শন ফুটে উঠেছে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও। ১+২+২
উৎসঃ
সংস্কৃত পন্ডিত “কালিদাস” রচিত “অভিজ্ঞান-শকুন্তলম্” নাটকের সংক্ষিপ্ত বাংলা অনুবাদ “ধীবর-বৃত্তান্ত” থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
বক্তাঃ
উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হল নাট্যাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র পেশায় মৎস্যজীবী শক্রাবতারে বসবাসকারী ধীবর।
প্রসঙ্গঃ
ধীবরের কাছে রাজ-নামাঙ্কিত আংটির সন্ধান লাভ করায় দুই রক্ষী ও রাজশ্যালক তাকে ‘চোর’ অপবাদ দেন। তার জাত ও পেশা সম্পর্কে সন্দিহান রাজশ্যালক ধীবরের পেশার প্রতি তাচ্ছিল্য করে তার পেশাকে ‘বেশ পবিত্র’ বলে শ্লেষ করেন। তার এহেন বিদ্রুপের প্রত্যুত্তরে ধীবর প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছে।
দর্শন চিন্তাঃ
আত্মসন্মানী ধীবর রাজশ্যালকের বিদ্রুপ বাক্যকে মেনে নিতে পারে নি। “Work is worship” আদর্শে বিশ্বাসী ধীবরের কাছে কোন কাজই ছোট নয়। তার কর্মক্ষেত্রে সে জাতের বিচারকে প্রাধান্য দেওয়ার পক্ষপাতী নয়। তাই আত্মপ্রত্যয়ী ধীবর নির্দিধায় রাজশ্যালককে বলতে পেরেছে- “বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ স্বভাবে দয়াপরায়ণ হলেও যজ্ঞীয় পশুবধের সময় নির্দয় হয়ে থাকেন।”
অর্থাৎ পেশার জন্য সে যে প্রাণীহত্যা করে থাকে তাকে কখনোই অমানবিক বলা যায় না। অতএব বলা যায় যে, ধীবর তার পেশাকে সম্মান করে বলেই রাজশ্যালকের প্রতি প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছে।
২) “ধীবর বৃত্তান্ত” নাট্যাংশে দুই রক্ষীর কথাবার্তায় সমাজের কোন ছবি ফুটে উঠেছে?
উৎসঃ
সংস্কৃত নাট্যকার “কালিদাস” রচিত “অভিজ্ঞান-শকুন্তলম্” কাব্যনাটকের ষষ্ঠ অঙ্ক থেকে আমাদের পাঠ্য “ধীবর-বৃত্তান্ত” নাট্যাংশটি গ্রহণ করা হয়েছে, যার বাংলা তর্জমা করেছেন “সত্যনারায়ণ চক্রবর্তী”।
রক্ষীদ্বয়ের বার্তালাপে প্রাপ্ত সমাজচিত্রঃ
সাহিত্য হলো সমাজের দর্পণ। তাই সাহিত্যের প্রেক্ষাপটে ও চরিত্রের মধ্য দিয়ে সমসাময়ীক সমাজ প্রতিফলিত হয়। এই নাট্যাংশেও তার স্বল্প পরিসরে নগররক্ষায় নিযুক্ত রক্ষীদ্বয় জানুক ও সূচকের চরিত্ররেখা যথেষ্ট স্পষ্ট ও বৈশিষ্ট্যময়। তাদের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে আমরা তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে সবিশেষ ধারণা লাভ করি।
একজন সাধারণ প্রজা ধীবরের প্রতি রাজরক্ষীদের নির্মম ও নিষ্ঠুর আচরণের পরিচয় আমরা লাভ করি। ধীবরকে তারা চোর, বাটপাড়, গাঁটকাটা প্রভৃতি বলে সম্বোধিত করেছে, যার মধ্য দিয়ে তৎকালীন সমাজে নীচু শ্রেণির মানুষের প্রতি সমাজের উচ্চ বর্ণের মানুষের তাচ্ছিল্যপূর্ণ মনোভাব ব্যক্ত হয়েছে। নির্দোষ ধীবরের কোন কথাকেই তারা মান্য করতে চায় নি- “তবে কি তোকে সদ্ ব্রাক্ষ্মণ বিবেচনা করে রাজা এটা দান করেছেন?”
সমাজের উচ্চ বর্ণের মানুষেরা নিম্ন বর্ণের মানুষদের জীবন-জীবিকাকে যে অবহেলা করেন ও কিছুটা বিদ্বেষের চোখে দেখেন তার প্রমাণ আমরা পাই রক্ষীদের কথার মধ্যে- “জানুক, একে মারার আগে ফুলের মালা পরানো হবে, তা গাঁথতে আমার হাত দুটো নিশপিশ করছে।”
আবার যখন রাজা ধীবরকে নির্দোষ ঘোষণা করে তাকে পুরষ্কার প্রদানের অঙ্গীকার করেন তখন তার প্রতি রক্ষীদের আচরণ পরিবর্তনের মধ্যে সমাজের সভ্য মানুষের হিংসা-লোভের মানসিক প্রবৃত্তিকে নির্দেশ করেছে- “এ যে শূল থেকে নামিয়ে একেবারে হাতির পিঠে চড়িয়ে দেওয়া হলো।” যখন ধীবর তার পারিতোষিকের অর্ধেক ভাগ তাদের প্রদান করতে চেয়েছে তখন তারা তা গ্রহণ করতে কুন্ঠিত হয় নি। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আমরা সমাজের স্বার্থপরতার দিকটি সম্পর্কে অবহিত হই।
অতএব আলোচনার পরিশেষে আমরা বলতে পারি, দুই রক্ষীর কথোপকথনের মধ্য দিয়ে আমরা তৎকালীন সমাজ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করি।
LINK TO VIEW PDF FILE (ONLY FOR SUBSCRIBERS)
নিম্নের PDF প্রশ্নের উত্তরগুলি শুধুমাত্র আমাদের Subscribers -দের জন্য। নবম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের সাবস্ক্রিপশন নিতে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথেঃ What’s App: 7001880232
১) “যে বৃত্তি নিয়ে যে মানুষ জন্মেছে, সেই বৃত্তি নিন্দনীয় (ঘৃণ্য) হলেও তা পরিত্যাগ করা উচিত নয়।”- উক্তিটি কার? কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি? উক্তিটিতে যে দর্শন ফুটে উঠেছে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও। ১+২+২
২) ‘ধীবর-বৃত্তান্ত’ নাট্যাংশ অবলম্বনে ধীবর চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো। ৫
৩) “তা তোর জীবিকা বেশ পবিত্র বলতে হয় দেখছি”- উদ্ধৃতাংশের বক্তা কে? কাকে উদ্দেশ্য করে এই উক্তি? এই উক্তির মধ্যে যে শ্লেষ আছে কাহিনি অবলম্বনে তা লেখো। ১+১+৩