নদীর বিদ্রোহ গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর । দশম শ্রেণি বাংলা
WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে দশম শ্রেণির মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য নদীর বিদ্রোহ গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হলো। মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চলা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তরগুলি তৈরি করে তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।
নদীর বিদ্রোহ গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর । দশম শ্রেণি বাংলা :
১) ‘ট্রেনটিকে রওনা করাইয়া দিয়া’- কোন ট্রেনটির কথা বলা হয়েছে ? ট্রেনটিকে রওনা করানোর পর কী ঘটল ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
যে ট্রেনের কথা বলা হয়েছেঃ
উদ্ধৃত অংশে চারটে পঁয়তাল্লিশ মিনিটের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটির কথা বলা হয়েছে।
পরবর্তী ঘটনাঃ
ট্রেন রওনা হওয়ার পরবর্তী ঘটনা ট্রেনটিকে রওনা করানোর পর স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ তার নতুন সহকারীকে নিজের প্রস্থান করার কথা জানায়। তারপর আর হয়তো বৃষ্টি হবে না, এই অনুমান ব্যক্ত করে সহকারীর সমর্থন প্রত্যাশা করে। সহকারীও সহমত ব্যক্ত করলে সে নদীর দিকে রওনা হয়ে যায়।
২) ‘নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটা কৈফিয়ত নদেরচাদ দিতে পারে।’- কৈফিয়তটি কী ? কৈফিয়ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছিল কেন ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
যে কৈফিয়ৎ দেওয়া হয়েছেঃ
গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাদের জন্ম, বেড়ে ওঠা সবই নদীকে ঘিরে। তার দেশের যে শীর্ণকায় ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে কৈফিয়তটি বা সে বড়ো ভালোবাসত। সেইজন্য কর্মক্ষেত্রের নদীসহ যে কোনো নদীর প্রতিই তার অস্বাভাবিক মায়া ছিল। নদীকে এমন পাগলের মতো ভালোবাসার জন্য সে এমন কৈফিয়তই দিয়েছিল।
কৈফিয়ৎ দেওয়ার প্রয়োজনঃ
রেল নিয়ন্ত্রণের মতো দায়িত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত একজন প্রাপ্তবয়স্কের নদীকে নিয়ে এমন পাগলামো সকলে স্বাভাবিকভাবে নেবে না তাই নদেরচাদ নিজেই কৈফিয়ত দিয়েছিল ।
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
যে ব্রিজের কথা বলা হয়েছেঃ
উদ্ধৃত অংশে নদেরচাঁদ যে স্টেশনের ব্রিজের স্টেশনমাস্টার, সেখান থেকে এক মাইল দূরে নদীর ওপরে নতুন তৈরি ব্রিজটির কথা বলা হয়েছে।
ব্রিজের দিকে হাঁটার কারণঃ
নদেরচাঁদ ছিল প্রকৃতিপ্রেমিক। বিশেষত নদীর প্রতি তার ছিল অপরিসীম আকর্ষণ। সে প্রায় রোজই নদীর পাশে বসে সময় কাটায়। বিগত পাঁচদিন ধরে মুশলধারায় বৃষ্টির জন্য সে নদীকে দেখতে যেতে পারেনি। তাই কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টি থামতেই সে নদীকে দেখার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
৪) ‘ব্রিজের কাছাকাছি আসিয়া প্রথমবার নদীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়াই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হইয়া গেল’- কোন ব্রিজের কথা বলা হয়েছে ? সেখানে এসে নদেরচাঁদ কী দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেল ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
যে ব্রিজের কথা বলা হয়েছেঃ
নদেরচাঁদ যে অখ্যাত স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল সেখান থেকে মাইলখানেক দূরে নদীর ওপর যে নতুন ব্রিজটি তৈরি হয়েছিল এখানে তার কথা বলা হয়েছে।
স্তম্ভিত হবার কারণঃ
একটানা পাঁচদিন বৃষ্টির পর নদেরচাঁদ নদীটিকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে যায়। কয়েক দিন আগে সে নদীর পঙ্কিল জলের যে উল্লাস ও চঞ্চলতা দেখে গিয়েছিল আজ অতিবৃষ্টির পর তা যেন পরিণত হয়ে ভয়ংকরভাবে ফুঁসছে।
৫) ‘নদেরচাঁদ ছেলেমানুষের মতো ঔৎসুক্য বোধ করিতে লাগিল’- ‘ছেলেমানুষের মতো’ বলার কারণ কী ? নদেরচাঁদের ঔৎসুক্য হয়েছিল কেন ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
‘ছেলেমানুষের মতো’ বলার কারণঃ
ছেলেমানুষদের অল্পতেই ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। নদেরচাঁদও একটানা পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণের ফলে নদীকে দেখতে না পেয়ে অধৈর্য হয়ে পড়ে। বয়সের তুলনায় তার এই অধৈর্যকে লেখক ছেলেমানুষির সঙ্গে তুলনা করেছেন।
নদেরচাঁদের ঔৎসুক্যের কারণঃ
শৈশব থেকেই নদীর সঙ্গে নদেরচাঁদের সখ্য। তাঁর কর্মস্থলের কাছাকাছি নদীটিকে সে প্রতিদিন দেখতে যেত। পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণে যেতে না পারায় নদীটির চেহারা কেমন হয়েছে তা দেখার জন্য সে উৎসুক হয়েছিল।
৭) ‘কিছুক্ষণ নদীকে না দেখিলে সে বাঁচিবে না’- কার না বাঁচার কথা বলা হয়েছে ? নদীকে না দেখলে সে বাঁচবে না কেন ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
উদ্দিষ্ট ব্যক্তিঃ
প্রশ্নোক্ত অংশে নদীকে না দেখতে পেলে নদেরচাঁদের না বাঁচার কথা বলা হয়েছে।
তার না বাঁচার কারণঃ
নদেরচাঁদ জন্ম থেকেই নদীর পাশে বড়ো হয়েছে। নদী তার জীবনে শ্বাসপ্রশ্বাসের মতোই মূল্যবান। নদীকে ছেড়ে সে কখনও থাকেনি। এমনকি, বরাতজোরে তার কর্মক্ষেত্রে সে নদীকে পাশে পেয়েছে। তাই নদীর প্রতি তার আকর্ষণ যেন পাগলামিতে পরিণত হয়েছে। এই কারণে নদীকে না দেখলে সে বাঁচবে না।
৮) ‘তার চার বছরের চেনা এই নদীর মূর্তিকে তাই যেন আরও বেশি ভয়ংকর, আরও বেশি অপরিচিত মনে হইল’- চার বছরের চেনা’ বলার কারণ কী ? আরও বেশি ভয়ংকর, আরও বেশি অপরিচিত মনে হল কেন ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
‘চার বছরের চেনা’ বলার কারণঃ
চার বছর হল নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টারের দায়িত্বভার গ্রহণ করে এই অঞ্চলে এসেছে। তাই নদীটির তার চার বছরের চেনা।
আরো বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত মনে হবার কারণঃ
নদেরচাঁদ তার কর্মস্থলের অনতিদূরে অবস্থিত বর্ষার জলে পৃষ্ট নদীটিতে পাঁচদিন আগে পঙ্কিল জলস্রোতে যে চাঞ্চল্য দেখে গিয়েছিল তাতে ছিল পরিপূর্ণতার আনন্দ। কিন্তু পাঁচদিন আরও বেশি অপরিচিত অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর সে চেনা নদীর রূপই প্রত্যক্ষ করবে ভেবেছিল, কিন্তু নদেরচাঁদ দেখল নদী আরও বেশি ভয়ংকর, আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত হয়ে উঠেছে।
৯) ‘আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল’- সে কোথায় গিয়ে বসল ? তার সেখানে বসার কারণ কী ছিল ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
সে যেখানে গিয়ে বসেছিলঃ
নদেরচাঁদ যে স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল, তার এক মাইল দূরে নদীর ওপরে একটি নতুন রং করা ব্রিজ ছিল। সেই ব্রিজের মাঝামাঝি ইট, সুরকি আর সিমেন্ট গাঁথা ধারকস্তঙের কিনারায় বসে সে রোজ নদীকে দেখত। সেদিনও নদেরচাঁদ সেইখানেই গিয়ে বসল।
তার সেখানে বসবার কারণঃ
ব্রিজের ধারকস্তম্ভের কিনারায় বসে নদীকে দেখলে নদীবক্ষের ওপর থেকে নদীর বিস্তারসহ সামগ্রিক রূপটাই দর্শকের চোখে ধরা পড়ে। তাই নদেরচাঁদ সেখানে বসত।
১০) ‘কিন্তু সে চাঞ্চলা যেন ছিল পরিপূর্ণতার আনলের প্রকাশ’- কোন চাঞ্চল্যের কথা বলা হয়েছে ? ‘পরিপূর্ণতার আনন্দ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
চাঞ্চল্যের পরিচয়ঃ
পাঁচদিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টি হওয়ার আগে নদেরচাঁদ তার প্রিয় নদীটিকে বর্ষার জলে পরিপুষ্ট আর পাঁচটা সাধারণ নদীর মতো পরিপূর্ণতার আনন্দে চঞ্চল হয়ে উঠতে দেখেছিল। এখানে সেই চাঞ্চল্যের কথা বলা হয়েছে।
‘পরিপূর্ণতার আনন্দ’ অর্থঃ
সারাবছরই নদীগুলি জলাভাবে অপুষ্ট থাকে। তাদের মধ্যেকার পূর্ণতার আনন্দ যেন অধরা থাকে। কিন্তু বর্ষার নব জলধারায় পুষ্ট হয়ে তাদের মধ্যে আসে পরিপূর্ণতার আনন্দ। তাদের প্রবাহে আসে উল্লাস, চলায় আসে ছন্দ, এসব কিছুকেই পরিপূর্ণতার আনন্দ বলা হয়েছে।
১১) ‘নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে’- কার কথা বলা হয়েছে ? তার ‘পাগলামি’টি কি ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
উদ্দিষ্ট ব্যক্তিঃ
এখানে গল্পের প্রধান চরিত্র নদেরচাঁদ-এর কথা বলা হয়েছে।
তার পাগলামির পরিচয়ঃ
নদীমাতৃক বাংলাদেশে বড় হয়ে ওঠা নদেরচাঁদের কাছে, নদী একটি ভালোবাসার বিষয়। ‘নদীর ধারে তাঁর জন্ম হয়েছে, নদীর ধারে সে মানুষ হয়েছে, চিরদিন নদীকে সে ভালোবেসেছে’; নদীকে না দেখে সে থাকতে পারে না। নদেরচাঁদের এখন ত্রিশ বছর বয়স, সে একটি রেল ষ্টেশনের ষ্টেশন মাস্টার। কিন্তু এখনও সে তাঁর ষ্টেশনের কাছের নদীর সাক্ষাৎ পাবার জন্য উৎসুক হয়ে থাকে। নদীর প্রতি এই অস্বাভাবিক টানকে নদেরচাঁদের পাগলামি বলে মনে হয়, কিন্তু মনের অভ্যন্তরে নদেরচাঁদ এই ছেলেমানুষি থেকে আনন্দ অনুভব করে।
১২) ‘এই নদীর মতো এত বড়ো ছিল না’- কোন নদীর কথা বলা হয়েছে ? সেই নদী কেমন ছিল ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
যে নদীর কথা বলা হয়েছেঃ
এখানে গল্পের প্রধান চরিত্র নদেরচাঁদের যে গ্রামে বড় হয়ে উঠেছিল, সেই গ্রামের ছোট নদীর কথা বলা হয়েছে।
নদীর পরিচয়ঃ
নদেরচাঁদের গ্রামের নদীটি ছিল অপেক্ষাকৃত ছোট। কিন্তু কিশোর অবস্থায় নদেরচাঁদের ঐ নদীকে ছোট বলে মনে হত না, তাঁর ‘দেশের সেই ক্ষীণস্রোতা নির্জীব নদীটি, অসুস্থ দুর্বল আত্মিয়ার মতোই’ নদেরচাঁদের ভালোবাসা – মমতা পেয়েছিল। পরে বড় হয়ে একবার যখন নদেরচাঁদ নদীটিকে ক্ষীণ- স্রোত অবস্থায় দেখেছিল, তখন পরমাত্মীয় মারা গেলে যেরকম দুঃখ হয়, সেপ্রকার দুঃখ পেয়েছিল। বলা যায় দেশের নদীর সাথে নদেরচাঁদের একপ্রকার আত্মিক সম্পর্ক হয়েছিল।
১৩) ‘নদেরচাঁদের ভারী আমোদ বোধ হইতে লাগিল’- উদ্ধৃতাংশটিতে কার কথা হয়েছে ? তার আমোদ হওয়ার কারণ কী ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
উদ্দিষ্ট ব্যক্তিঃ
উদ্ধৃতাংশটিতে গল্পের প্রধান চরিত্র নদেরচাঁদের কথা বলা হয়েছে।
তার আমোদ হবার কারণঃ
ষ্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ নদী ভালোবাসে, সে প্রতিদিন বিকালে তাঁর ষ্টেশনের পাশের নদীটিকে দেখতে যায়। পাঁচদিন টানা বৃষ্টির ফলে সঙ্কীর্ণ, ক্ষীণস্রোতা নদীর চেহারা হয়েছে ভয়ংকর। ব্রিজের মাঝে বসা নদেরচাঁদের মনে হয় ক্ষিপ্র নদী যেন ব্রিজের ধারক স্থম্ভগুলোতে বাধা পেয়ে ‘ফেনিল আবর্ত’ সৃষ্টি করছে। নদীর জল এতটা উঁচুতে উঠে এসেছে যে যেন মনে হয় হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে। নদীর এই রূপ অবস্থা দেখে নদেরচাঁদের ভারি ‘আমোদ’ হয়।
১৪) ‘বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাঁদের’- নদেরচাঁদের ভয়ের কারণ কী ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
নদেরচাঁদের ভয়ের কারণঃ
গল্পের প্রধান চরিত্র নদীপ্রেমী নদেরচাঁদ প্রতিদিন বিকালে নদীর সাথে দেখা করে। পাঁচদিন টানা বৃষ্টির ফলে তাঁর পরিচিত সঙ্কীর্ণ, দুর্বল নদী পরিবর্তিত হয়েছে স্রোতস্বিনী তেজি নদীতে। নদীর এই ভয়ংকর রূপে মোহিত হয়ে রেলব্রিজের মাঝে বসে থাকে। মাঝে বৃষ্টি আসে, কিন্তু প্রকৃতি প্রেমে আচ্ছন্ন নদেরচাঁদ বসে থাকে, এমনকি সেও এও ভুলে যায় যে তাঁর থেকে মাত্র একটু নিচ দিয়েই ভয়ালবেগে বয়ে চলেছে নদী। ক্রমে দিনের আলো নিভে যায়, বৃষ্টির বেগ বৃদ্ধি পায়, আচমকা রেলের শব্দে সম্বিৎ ফিরে পায় সে। প্রকৃতির রুদ্র রূপ দেখে বিপদের আশঙ্কায় নদেরচাঁদের ভয় হয়।
১৫) ‘নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে’- কে বুঝতে পেরেছে ? নদীর বিদ্রোহ বলতে সে কী বোঝাতে চেয়েছে ?
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
উদ্দিষ্ট ব্যক্তিঃ
এখানে গল্পের প্রধান চরিত্র নদেরচাঁদের কথা বলা হয়েছে।
নদীর বিদ্রোহ বলতে যা বোঝানো হয়েছেঃ
এই ছোটগল্পে লেখক শ্রী মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় নদীকে প্রকৃতি অর্থে ব্যবহার করেছেন। প্রকৃতি স্বাধীন, সে কোন গণ্ডিতে বাঁধা পড়তে চায় না। গল্পে থেকে আমরা জানতে পারি যে, সঙ্কীর্ণ, ক্ষীণস্রোতা নদী মানুষের সভ্যতার বেড়া অর্থাৎ ব্রিজে বাঁধা পড়েছে। পাঁচদিন টানা বৃষ্টির ফলে নদী তার স্বাভাবিক চরিত্র ফিরে পেয়েছে, সে তখন স্রোতস্বিনী, তেজস্বিনী। নদীর এই রূপকেই গল্পের চরিত্র নদেরচাঁদ নদীর বিদ্রোহ বলে মনে করেছে।
১৬) ‘পারিলেও মানুষ কি তাকে রেহাই দিবে?’- কাকে রেহাই দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ? এই জিজ্ঞাসার গভীরতর অর্থটি পরিস্ফুট করো।
উৎসঃ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাকার “মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়” রচিত “সরীসৃপ” গ্রন্থের নয় সংখ্যক গল্প “নদীর বিদ্রোহ” গল্পটি আমাদের পাঠ্য রূপে নির্বাচিত হয়েছে।
যাকে রেহাই দেওয়ার কথা বলা হয়েছেঃ
এখানে নদীকে রেহাই দেবার কথা বলা হয়েছে।
অন্তর্নিহিত অর্থঃ
নদেরচাঁদ নদী ভালোবাসে। নদীকে দেখেই সে বড় হয়ে উঠেছে তাই একটি ষ্টেশনের ষ্টেশন মাস্টার পদে কর্মরত হয়েও নদীর প্রতি তাঁর ভালোবাসার পরিবর্তন হয়নি। দীর্ঘ পাঁচদিন টানা বৃষ্টির পর নদেরচাঁদ নদী দর্শনে গিয়ে তাঁর প্রিয় নদীকে চিনতে পারে না। সংকীর্ণ নদী বৃষ্টিধারায় পুষ্ট হয়ে শক্তিশালী নদীতে পরিণত হয়েছে, সে যেন কোন বাঁধ মানতে চায় না। তাঁর সমস্ত শক্তি দিয়ে আধুনিকতার প্রতীক ব্রিজকে ভেঙে দিতে চায়। মানব সৃষ্ট আধুনিকতার বেড়া জালে বন্দী থাকতে নারাজ প্রকৃতি রূপী নদীর রুদ্ররূপ দেখে নদেরচাঁদের মনে হয় নদী যেন বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। কিন্তু নদেরচাঁদের মনে হয়, নদীর এই বিদ্রোহ মানুষের কাছে গুরুত্ব পাবে কি? সম্ভবত না, প্রকৃতির বাঁধ ভাঙা শক্তির কাছে সাময়িক প্রতিহত হলেও, মানুষ কিছু সময় পর আবার বাঁধ দেবে, পুনরায় গড়ে তুলবে ব্রিজ। অর্থাৎ বিদ্রোহ স্থিমিত হলে নদীকে আবার মানুষের বশ মানতেই হবে। গল্পে নদেরচাঁদের ভাবনায় এই ক্ষেদ উঠে এসেছে।