বাংলা বানান । সপ্তম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ
সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা বানান । সপ্তম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ প্রদান করা হলো। আমাদের WBNOTES.IN ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে প্রদান করা এই প্রশ্নের উত্তরগুলি তৈরি করে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে। আমাদের নোট বিভাগে সপ্তম শ্রেণির বাংলা অধ্যায়ভিত্তিক সমস্ত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা হয়েছে।
বাংলা বানান । সপ্তম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ :
১) নিম্নের শব্দগুলির বানানের অসঙ্গতি যথোপযুক্ত কারণ দেখিয়ে সংশোধন করোঃ
আততায়ি—
সঠিক বানান : আততায়ী
কারণ : সংস্কৃত – ইন্ প্রত্যয়ান্ত শব্দ কর্তৃকারকের একবচনে দীর্ঘ – ই কারন্ত হয় এবং বাংলায় সেইরূপেই ব্যবহৃত হয়।
কালীদাস—
সঠিক বানান : বানানটি ঠিক আছে।
মন্ত্রিপনা—
সঠিক বানান : মন্ত্ৰীপনা
কারণ : সংস্কৃত – ইন্ প্রত্যয়ান্ত শব্দের সঙ্গে যদি তৎসম প্রত্যয় যুক্ত হয় তাহলে তা যুক্ত হবে বাংলা রূপের সঙ্গে।
বয়োসন্ধি—
সঠিক বানান : বয়ঃসন্ধি
কারণ : বিসর্গ সন্ধির ক্ষেত্রে প্রথম শব্দের শেষের বিসর্গটি সন্ধিবদ্ধ [বয়ঃ+সন্ধি=বয়ঃসন্ধি ] হলেও যদি অবিকৃত থাকে, তবে বাংলা বানানে সেই বিসর্গটি
থাকবে।
অংক—
সঠিক বানান : অঙ্ক
কারণ : যেখানে শব্দে ‘ম্’ সন্ধির সৃষ্টি হয়নি
সেখানে ‘ং’ বদলে ‘ ভ্’ ব্যবহার করা যুক্তি সঙ্গত।
প্ৰিয়ম্বদা—
সঠিক বানান : প্রিয়ংবদা
কারণ: এখানে ‘স্’ এর পরে অন্তঃস্থ ‘ব’ রয়েছে তাই বাংলায় সঠিক বানানে (ং) যুক্ত হয়েছে।
বৰ্জ্জন—
সঠিক বানান : বৰ্জন
কারণ: রেফ্ -এর পরবর্তী ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব ঘটবে না।
মহার্ঘভাতা—
সঠিক বানান : মহার্ঘ্যভাতা।
কারণ: এখানে রেফ – এর পরবর্তী ব্যঞ্জনের
দ্বিত্ব ঘটেনি, তাই ‘ য ‘ ফলা যুক্ত হবে।
মানিক্য—
সঠিক বানান : মাণিক্য
কারণ: সকল তৎসম শব্দের ক্ষেত্রে ‘ণ ‘ যুক্ত
হয়। এখানে দেওয়া শব্দটি তৎসম শব্দ, তাই সঠিক বানানে ‘ন’-এর জায়গায় ‘ণ’ হবে।
প্রার্থনা—
সঠিক বানান : বানানটি এখানে সঠিক আছে।
কারণ : ঋ, র, ষ – এর পর স্বরবর্ণ, ক বৰ্গ, প বর্গ, য, ব, হ এবং ং ছাড়া অন্য বর্ণের ব্যবধানে থাকলে ‘ন’ হয়।
দণ্ড—
সঠিক বানান : বানানটি সঠিক আছে।
কারণ : ট, ড, ঢ -এর আগে ‘ন’ থাকলে সেটা ‘ণ’ হয়ে যায়।
মধ্যাহ্ণ—
সঠিক বানান : বানানটি শুদ্ধ
কারণ : পূর্ব ও অপর শব্দের পরবর্তী ‘অহ্ন ‘
শব্দের ‘ন’ হয়ে যায় ‘ণ’।
নারায়ন—
সঠিক বানান : নারায়ণ।
কারণ : পর, পার, উত্তর, চন্দ্রা, ও নার শব্দের পরবর্তী আয়ন শব্দের ‘ন’ হয়ে যায় ‘ণ’।
ধূলিষাৎ—
সঠিক বানান : ধূলিসাৎ।
কারণ: অ /আ ভিন্ন স্বরবর্ণ এবং ক্, র্ -এর পরবর্তী বিভক্তি ও প্রত্যয়ের ‘ স ‘ হয় ‘ষ’। কিন্তু ‘সাৎ’ প্রত্যয়ের স > ষ হয় না।
অভিশেক—
সঠিক বানান : অভিষেক।
কারণ: ‘অভি ‘ উপসর্গের পর ‘ষ’ হয়।
ষোরশ—
সঠিক বানান : ষোড়শ।
কারণ : ষট্ + দশ সন্ধি করলে ষোড়শ হয়। তাই ষোড়শ বানানটি সঠিক হবে।
পুরষ্কার—
সঠিক বানান : পুরস্কার।
কারণ: অ, আ -এর পরে বিসর্গ (ঃ) থাকলে (পুরঃ + কার = পুরস্কার ) এবং তার সঙ্গে ক্, খ্, প্, ফ্ থাকলে বিসর্গ (ঃ) ‘স’-এ রূপান্তরিত হয়।
জাম্মানী—
সঠিক বানান : জার্মানী।
কারণ : রেফ -এর পর ব্যঞ্জন বর্ণের দ্বিত্ব হয় না।
ধূলো—
সঠিক বানান : ধুলো।
কারণ : তৎসম শব্দে ‘উ’ কার ব্যবহার করা
যায়।
পাখী—
সঠিক বানান : পাখি।
কারণ : প্রায় সকল তৎসম শব্দে দীর্ঘ – ই – এর পরিবর্তে হ্রস্ব -ই ব্যবহার হয় ।
২) নিম্নের বাক্যগুলিতে কোন শব্দের বানান কেনো অশুদ্ধ তা নির্ণয় করোঃ
২.১) তুমি কি দেশের এই দূর্দিনে চুপ করে বসে থাকবে ?
অশুদ্ধ বানান : দূর্দিনে
কারণ : ‘দূর্দিনে’ পদটির সন্ধি বিচ্ছেদ করলে হয় দুঃ + দিনে। তাই সঠিক বানান হবে দুর্দিনে।
সঠিক বানান : দুর্দিনে।
২.২) আষাড়ের কোন ভেজা পথে এল আমার দুর্দান্ত শ্রাবন।
অশুদ্ধ বানান : আষাড় ও শ্রাবন
কারণ : ‘আষাঢ়’ শব্দটি একটি সংস্কৃত শব্দ আর এটি বাংলায় তৎসম শব্দরূপে আছে। তাই সংস্কৃতে থাকা বানানটিই এখানে গ্রহণযোগ্য হবে। তাই শুদ্ধ বানানটি হবে আষাঢ়।
আর ঋ, র, ষ – এর পর স্বরবর্ণ আছে এবং ন – এর আগে প বর্গের (প, ফ, ব, ভ, ম ) ধ্বনি আছে তাই ‘ন ‘- এর বদলে ‘ণ’ হবে। এখানে সঠিক বানানটি হবে শ্রাবণ।
সঠিক বানান : আষাঢ় ও শ্রাবণ।
২.৩) অপরাহ্নে পণ্ডিতমশাই সংস্কৃতের ক্লাশ নেবেন।
অশুদ্ধ বানান: অপরাহ্ন ও ক্লাশ
কারণ : পূর্ব ও অপর শব্দের পরবর্তী ‘ অহ্ন’ শব্দের ‘ন’>’ণ’ হয়ে যায়। কোনো ইংরেজি শব্দ থাকলে তার ‘s’-এর ক্ষেত্রে বাংলায় ‘স’ লেখা হয়। এখানে ইংরাজিতে বানানটি class তাই বাংলা ‘ক্লাস বানানটি সঠিক।
সঠিক বানান : অপরাহ্ণ ও ক্লাস।
২.৪) শিশু শশি নাহি আর, অন্ধকার নিরাকার।
অশুদ্ধ বানান : শশি
কারণ : সংস্কৃত – ইন প্রত্যয়ান্ত শব্দ –
কর্তৃকারকের একবচনে ‘দীর্ঘ -ই ‘ যুক্ত হয়। তাই সঠিক বানান হল শশী।
সঠিক বানান : শশী।
২.৫) কি কাণ্ড! অবনী বস্তুতঃ কোনো সহযোগীতাই করেনি।
অশুদ্ধ বানান : কি ও সহযোগীতা
কারণ : এখানে কি প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ / না দিয়ে শেষ হয়নি, তাই সঠিক বানান ‘কী’ হবে।
সংস্কৃত ইন্ প্রত্যয়ান্ত শব্দের একবচনে দীর্ঘ – ই যুক্ত হয় (যথা : প্রতিযোগিন্> প্ৰতিযোগী) তবে এই শব্দগুলি যদি সমাসবদ্ধ হয় বা প্রত্যয় যুক্ত হয় তখন দীর্ঘ -ই -এর বদলে হ্রস্ব ই কার হয়। তাই সঠিক বানান প্রতিযোগিতা।
সঠিক বানান : কী ও প্রতিযোগিতা।
৩) নির্দেশ অনুসারে উত্তর দাওঃ
৩.১) ঠিক বানানটি বেছে নাও : (সান্ধ্য / সান্ধ / সানদ্ধ / সানধ্য)।
উত্তরঃ সান্ধ্য।
৩.২) ‘দুমদাম’ এটি কি ধরনের শব্দ— (ধ্বন্যাত্মক শব্দ / অনুকার শব্দ / শব্দদ্বৈত)।
উত্তরঃ অনুকার শব্দ।
৩.৩) শুদ্ধ বানানের শব্দটি লেখো— (সহযোগিতা / ক্ৰমশঃ / অংক / ভূমিষাৎ)।
উত্তরঃ সহযোগিতা।
৩.৪) ‘বাঁশি’ শব্দটি হল- ( যৌগিক শব্দ / গূঢ় শব্দ / যোগরূঢ় শব্দ / ধ্বন্যাত্মক শব্দ)।
উত্তরঃ যোগরূঢ় শব্দ।
৩.৫) ‘বাচ্চারা চোর-চোর খেলছে।’— চোর- চোর শব্দদ্বৈতটি ব্যবহৃত হয়েছে- (অনুকরণ অর্থে / দ্রুত অর্থে / আসন্ন অর্থে / বহুলতা অর্থে )।
উত্তরঃ অনুকরণ অর্থে।
৩.৬) ‘বাসন-কোসন’ শব্দটি হল— (ক) শব্দদ্বৈত্য (খ) ধ্বন্যাত্মক (গ) অনুকার শব্দ (ঘ) ক ও খ উভয়ই
উত্তরঃ (গ) অনুকার শব্দ।
৩.৭) প্রদত্ত কোন্ বানানটি ভুল ? (ক) অবনি (খ) সূর্য (গ) অর্ঘ্য (ঘ) কিংবদন্তী
উত্তরঃ (ঘ) কিংবদন্তী
৩.৮) ‘ঝনঝন’ শব্দটি একটি— (ক) যৌগিক শব্দ (খ) ধ্বন্যাত্মক শব্দ (গ) অনুকার শব্দ (ঘ) রুঢ় শব্দ
উত্তরঃ (খ) ধ্বন্যাত্মক শব্দ
৩.৯) নীচের কোনটি শব্দ দ্বৈত-র উদাহরণ নয় ?— (ক) আলাপসালাপ (খ) ঝমঝম (গ) যাই যাই (ঘ) হেসে খেলে
উত্তরঃ (খ) ঝমঝম
৩.১০) কোন বানানটি ভুল ?— (ক) অবনি (খ) সূর্য (গ) অৰ্ঘ্য (ঘ) কিংবদন্তী
উত্তরঃ (ঘ) কিংবদন্তী
৩.১১) কোন শব্দটি রূঢ় শব্দের উদাহরণ ? – (ক) মণ্ডপ (খ) পঙ্কজ (গ) গায়ক (ঘ) পরিধি
উত্তরঃ (ক) মণ্ডপ
৩.১২) ‘ছমছম’ শব্দটি হল—(ক) যৌগিক শব্দ (খ) রুঢ় শব্দ (গ) যোগরুঢ় শব্দ (ঘ) ধ্বন্যাত্মক শব্দ
উত্তরঃ (ঘ) ধ্বন্যাত্মক শব্দ
৩.১৩) বিপরীতার্থক শব্দদ্বৈতের উদাহরণ কোনটি ? – (ক) বাড়িঘর (খ) অল্পবিস্তর (গ) ধারেকাছে (ঘ) অল্পস্বল্প
উত্তরঃ (খ) অল্পবিস্তর
৩.১৪) বাঙালি পদবির ইংরেজি ধরনের উচ্চারণে কোন্ স্বরচিহ্ন হয় ?— (ক) হ্রস্ব (খ) দীর্ঘ (গ) প্লুত (ঘ) হস্
উত্তরঃ (ক) হ্রস্ব
৩.১৫) সঠিক বানানটি কি হবে – (ক) চান্দ্রায়ন (খ) চান্দায়ণ (গ) চান্দ্রায়ণ (ঘ) চন্দ্রআয়ন
উত্তরঃ (ক) চান্দ্রায়ন
৩.১৬) ‘পঙ্কজ’—কী ধরনের শব্দ ? – (ক) যৌগিক (খ) রুঢ় (গ) যোগরূঢ় (ঘ) শংকর
উত্তরঃ (গ) যোগরূঢ়